আউট হয়ে তাইজুলের উপর মেজাজ হারিয়েছিলেন বিরাট কোহলি
মিরপুরে বাংলাদেশ বনাম ভারতের দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্টের তৃতীয় দিনে ভারতের তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলিকে ঘিরে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। তবে এ বিতর্ক মাঠের পারফরম্যান্স নিয়ে নয় বরং প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের প্রতি রাগান্বিত আচরণের কারণেই মূলত ব্যাপারটি নিয়ে কানাঘুষা হচ্ছে। জানা যায়, মাত্র ১ রান করে আউট হওয়ার পর প্রতিপক্ষের উল্লাস দেখেই ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন কোহলি; বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে করেছেন উতপ্ত বাক্যবিনিময়।
ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স বিবেচনায় বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজটায় খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি বিরাট। চট্টগ্রাম ও মিরপুর মিলিয়ে দুই টেস্টের প্রথম ৩ ইনিংস ব্যাটিং করে কোহলি করেছিলেন মাত্র ৪৪ রান। আর তাই শেষ ইনিংসে ম্যাচের সবচেয়ে প্রয়োজনের মুহূর্তে বিরাট খুব করে চাইছিলেন দলের হাল ধরতে। এমনকি ঐ ইনিংসে প্রথম ২১ বলে মাত্র ১ রান করে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে মাঠে টিকে থাকতে চেয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু বল হাতে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মেহেদী মিরাজের থেকে বাঁচতে পারেননি কোহলি। ইনিংসের ২০তম ওভারে মিরাজের করা ওভারের পঞ্চম বল ডিফেন্স করতে গিয়ে ইনসাইড এজ হন কোহলি। ইনসাইড এজের কারণে শর্ট লেগে বলে উঠে গেলে অসাধারণ রিফ্লেক্সে ক্যাচটি লুফে নেন মুমিনুল হক। আর কোহলির মত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের উইকেট পেয়ে তাৎক্ষণিক উল্লাসে মাতেন বাংলাদেশি ক্রিকেটারেরা।
কিন্তু তাইজুল, মিরাজ, সোহানদের স্বাভাবিক এ উদযাপনেও মেজাজ ধরে রাখতে পারেনি বিরাট। আউটের পর ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে তিনি হঠাৎ দাঁড়িয়ে যান। ক্ষুব্ধ হয়ে হাতের ইশারায় প্রতিপক্ষের কাউকে কাছে ডাকেন বিরাট। ঘটনাটি দেখে সাথে সাথেই বিরাটকে থামাতে দ্রুত সেখানে ছুটে যান আম্পায়াররা। পরবর্তীতে সাকিব এসে বিরাটের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেন। তারপরও মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ভারতীয় এ ব্যাটারের চোখে-মুখে তীব্র অসন্তোষ দেখা গেছে।
বিরাট আউট হওয়ার পর উইকেটটির গুরুত্ব বিবেচনায় প্রায় সকলেই উল্লাস করছিলো। তবে ঠিক কার উল্লাসের ধরণ দেখে ভিরাট চটেছেন তা সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের মতে, বাংলাদেশি স্পিনার তাইজুল ইসলাম বিরাটকে এমন কিছু বলেছিলেন, যা শুনে রেগে যান বিরাট কোহলি। আর তাই বিরাট সাকিবের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করেন। ঠিক এর পরেই সাকিবকে ফিরে গিয়ে তাইজুলকে কিছু বোঝাতে দেখা যায়।
তবে একদিকে বিরাট নিজে যেমন মুখ খুলেননি তেমনি দুই দলে অন্য খেলোয়াড়দেরও ঘটনাটি নিয়ে সম্পূর্ণ জানাশোনা নেই। সংবাদ সম্মেলনে লিটনের কাছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমি তাৎক্ষণিক জানি না কী হয়েছে।" অন্যদিকে বিরাটের রাগান্বিত হওয়ার ঘটনা নিয়ে ভারতীয় তারকা পেসার মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, "সত্যি বলতে, ওই সময় আমি আইস বাথ নিচ্ছিলাম। জানি না কী হয়েছিল।" এখানে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং এর সময় বিরাট উল্টো বাংলাদেশের ক্রিকেটার শান্তকে স্লেজিং করেছিলেন।
সাদা পোশাকে ২০২২ সালে মোট ৬টি টেস্ট খেলেছেন ভিরাট। এই ৬ টেস্টে মাত্র ২৬.৫০ গড়ে মোট ২৬৫ রান করে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। জানুয়ারিতে কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৭৯ রান করে উল্লেখ করার মত মাত্র একটি ফিফটির দেখা পেয়েছিলেন এ ব্যাটার। তাই সবকিছু মিলিয়ে বিরাট টেস্ট ফরম্যাট নিয়ে যে অসম্ভব বেকায়দায় আছেন সেটা তার মাঠের ভেতরের আচরণেও প্রকাশ পাচ্ছে।