‘মিসাইল না থাকলে আপনাকে গেরিলা যুদ্ধে নামতে হবে’
ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মতো পরাশক্তিকে টেস্টে হারিয়েছে বাংলাদেশ। যা বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অর্জন। দল দুটিকে কাবু করতে প্রধান কোচের দায়িত্বে থাকা চান্দিকা হাথুরুসিংহের প্রধান অস্ত্র ছিল স্পিন। প্রতিপক্ষকে বিপদে ফেলতে বেশিরভাগ সময়েই স্পিন সহায়ক উইকেট বেছে নিতেন তিনি। বলা যায়, তার সময়েই এই সংস্কৃতি চালু হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটে।
আরও একবার প্রধান কোচের দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশে আসা লঙ্কান এই কোচ জানালেন, সবাই ঘরের মাঠের সুবিধা নেয়। এবারও তার পরিকল্পনা এমনই। দুই বছরের চুক্তিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রধান কোচ হয়েছেন হাথুরুসিংহে। দ্বিতীয় দফায় মিশন শুরুর আগে বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
অনেক প্রশ্নের মাঝে একটি প্রশ্ন ছিল ঘরের মাঠের সুবিধা নেওয়া নিয়ে। ঘরের মাঠে সুবিধা নিয়ে জিতলেও বিদেশের মাটিতে খুব একটা ভালো করতে পারে না বাংলাদেশ। স্বল্পমেয়াদী এই সাফল্যের পরিবর্তে লম্বা সময়ের জন্য পরিকল্পনা থাকবে কিনা, এমন প্রশ্ন করা হলে হাথুরুসিংহে উল্টো অনেক প্রশ্ন করে বসেন।
আগের মেয়াদে সফলতার সঙ্গে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশকে কোচিং করানো হাথুরুসিংহে বলেন, 'ঘরের মাঠের সুবিধা কী? আমি আপনাকে প্রশ্ন করছি, ঘরের মাঠের সুবিধাটা কী আসলে? নিউজিল্যান্ডে গেলে আমরা কেমন উইকেট পাই? অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডে গেলে তারা কী করে? বা ভারতই তাদের ঘরের মাঠে কী করে?'
ঘরের মাঠে নিজেদের সম্ভাব্য সেরা শক্তি কাজে লাগিয়ে লড়াই করার কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'আমরা যখন বাইরে যাই, আমাদের যা আছে সেটা দিয়েই মানিয়ে নিতে চেষ্টা করি। আপনার মিসাইল না থাকলে আপনি কীভাবে যুদ্ধ করবেন? আপনাকে গেরিলা যুদ্ধে নামতে হবে, তাই না? আপনি ঘরের মাঠে তাদের আসতে দেন এবং আপনার যতো কমই রসদ থাকুক, সেটা দিয়ে সেরা লড়াই করুন। আপনার যদি গোলা বারুদ না থাকে, তাহলে আপনি এটা করতে পারবেন না।'
ঘরের মাঠে দারুণ পারফরম্যান্সের পাশাপাশি বাইরের মাঠেও বাংলাদেশ কিছু ভালো পারফরম্যান্স করেছে বলে মনে করেন হাথুরসিংহে। তার ভাষায়, 'সম্ভবত আমরা যেটা করতে পারি, তা হলো ক্রিকেটারদের উন্নতি ঘটানো। তাতে আমাদের যথেষ্ট রসদ থাকবে বিদেশে গিয়ে ম্যাচ জেতার। কিন্তু আপনি বলতে পারেন না তারা বাইরে খারাপ করেছে। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় ভালো করেছে, নিউজিল্যান্ডে টেস্ট সিরিজে ভালো করেছে।'
সবশেষে ঘরের মাঠে সুবিধা নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্নকর্তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করার কথা জানান বাংলাদেশের প্রধান কোচ। তিনি বলেন, 'আলোচনা করে বুঝেছি, প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু ক্রিকেটার আসছে। প্রক্রিয়ায় আসতে বা মানিয়ে নিতে ক্রিকেটারদের জন্য সময়ের প্রয়োজন হয়। ঘরের মাঠের সুবিধা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমি আপনার সঙ্গে একমত নই। কারণ প্রতিটি দলই ঘরের মাঠে এটা করে। ঘরের মাঠের সুবিধা আপনাকে নিতে হবে। ঘরের মাঠে নিজেদের শক্তি-সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে হবে।'