‘শেষ দিকে কেউ এমন সেঞ্চুরি করেনি’- মুশফিকের প্রশংসায় লিটন
টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে ভেজা আবহাওয়া। টস জিতে আগে বোলিং নেওয়া আয়ারল্যান্ডের বোলাররা বাড়তি সুবিধাই পাচ্ছিলেন। মুভমেন্ট, সুইংয়ের বিপক্ষে ভুগতে হচ্ছিল দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন কুমার দাসকে। তামিম ইকবাল ২৩ রান করে আউট হলেও একটু সময় নিয়ে মানিয়ে নেওয়া লিটন খেলেন ৭০ রানের ইনিংস। শুরুতে সংগ্রাম করা ব্যাটসম্যানেরই এমন ইনিংস, প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে লিটনকে প্রথম প্রশ্ন শুনতে হলো মুশফিকুর রহিমের ইনিংস নিয়ে। অগ্রজের রেকর্ড গড়া ইনিংসের প্রশংসায় লিটন জানালেন, জাতীয় দলের ক্যারিয়ারে এমন সেঞ্চুরি দেখেননি তিনি।
কীভাবে দেখবেন! সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আইরিশদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুশফিক যে ইনিংস খেলেছেন, তা বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসেরই প্রথম। তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের পর তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে ৭ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে মুশফিক ৬০ বলে ১৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন। সাকিবের ৬৩ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড ছাড়িয়ে মুশফিক এখন দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক।
মুশফিক যে মানের ব্যাটসম্যান, তাতে এমন ইনিংস খেলায় অবাক হওয়ার হয়তো কিছু নেই। কিন্তু অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান যেখানে ব্যাটিং করতে নামেন, সেখান থেকে এমন ইনিংস অবিশ্বাস্য, অভূতপূর্ব। ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা মুশফিক উইকেটে যান ৩৪তম ওভারে। ছয়ে বা এর পরে নেমে মুশফিকের আগে বাংলাদেশের হয়ে সেঞ্চুরি করেছেন আরও পাঁচ জন। তারা হলেন অলক কাপালি, নাসির হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ইনিংসের এতো কম ওভার বাকি থাকতে ব্যাটিংয়ে নেমে সেঞ্চুরি করেননি কেউ। লিটনের খেলা অবস্থায় মিরাজ সেঞ্চুরি করেছেন আট নম্বরে নেমে।
মুশফিকের এমন ইনিংসে তাই ভালো লাগার শেষ নেই লিটনের। বিস্ময়ভরা কণ্ঠে অগ্রজের ইনিংসের প্রশংসা করে বাংলাদেশের এই ওপেনার বলেন, 'অনভূতি তো অনেক ভালো। সত্যি কথা বলতে আমি যতোদিন খেলছি, বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড় শেষদিকে কেউ এমন সেঞ্চুরি করেনি। যখন দল থেকে কেউ এ রকম একটা সেঞ্চুরি করে, দেখলে অনেক ভালো লাগে। সিনিয়ররা কেউ করলে তো আরও ভালো লাগে। অবশ্যই মুশফিক ভাই যে ইনিংস খেলেছেন, দেখার মতো ছিল। আমি মনে করি শান্ত বা আমারটার থেকে সুন্দর।'
প্রথম ওয়ানডেতে ৮ উইকেটে ৩৩৮ রান করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তোলে ৬ উইকেটে ৩৪৯ রান। সংগ্রহ দুটি যথাক্রমে বাংলাদেশের প্রথম ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। লিটন বললে পরিকল্পনার সিই কাজে লেগেছে তাদের, 'শেষ দুই ম্যাচ ধরে আমরা যে পরিকল্পনা করছি, যে লক্ষ্য; আমাদের ব্যাটিংয়ে সম্পূর্ণ সফল বলবো। পরের ম্যাচটা ভিন্ন হতে পারে। আমরা পরে ব্যাটিংও করতে পারি।'
বাংলাদেশ কি এমন 'ব্র্যান্ডের' ক্রিকেটই প্রতিষ্ঠা করতে চায়? লিটন বললেন, 'আমরা তো চাই এটা হোক। যদি আমরা ব্যাটসম্যানরা রান করতে পারি, আপনি যখন বড় বড় ইভেন্ট খেলবেন তখন কিন্তু এমনই হয় রান। সব ম্যাচে ৩০০ হয় না, ২৮০ প্লাস হয়। চাইবো তো সব সময় ভালো উইকেটে খেলি, ভালো ফল করি। কিন্তু অবশ্যই আমার মনে হয় সাহায্য করবে এই জিনিসগুলো।'