রেকর্ড গড়ে আফগানিস্তানকে বিশাল লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ
প্রথম ইনিংসেই মেলে ২৩৬ রানের লিড। ফলো-অনের সুযোগ পেয়েও আফগানিস্তানকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নামায়নি বাংলাদেশ। নিজেরা আবারও ব্যাটিংয়ে রান পাহাড়ে চড়া ঘরের মাঠের দলটি গড়লো রেকর্ড, আফগানদের দিলো বিশাল লক্ষ্য। মিরপুর টেস্টে আফগানিস্তানকে ৬৬২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে তারা। আদতে যা পাড়ি দেওয়া অসম্ভবই বলা যায়। ১৪৬ বছরের টেস্ট ইতিহাসে ৪১৮ রান সর্বোচ্চ রান তাড়া।
৩৮২ রানে থামে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। আফগানরা ১৪৬ রানেই গুটিয়ে গেলে বাংলাদেশ পায় বড় লিড। দ্বিতীয় ইনিংসে আরও দাপুটে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ। দারুণ ব্যাটিং করা জাকির হাসান আশা জাগিয়ে না পারলেও সেঞ্চুরি তুলে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। এই তিন ব্যাটসম্যানের ব্যাটে ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ।
৬৬২ রানের লক্ষ্য, বলার অপেক্ষা রাখে না প্রতিপক্ষকে বাংলাদেশের দেওয়া এটাই সর্বোচ্চ লক্ষ্য, টেস্ট ইতিহাসের অষ্টম সর্বোচ্চ। এর আগে কখনও কোনো দলকে ৫০০ রানের লক্ষ্যও দিতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষকে দেওয়া তাদের সর্বোচ্চ লক্ষ্য ছিলো ৪৭৭। বাংলাদেশের ২২০ রানে জয় পাওয়া সেই ম্যাচে জিম্বাবুয়ে ২৫৬ রানে অলআউট হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ৫.৩১ রান রেটে ব্যটিং করেছে। টেস্ট ইতিহাসে তৃতীয় ইনিংসে যা সর্বোচ্চ।
দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটে ১৩৪ রান তুলে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। জাকির ও শান্ত দুজনই ৬৪ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন। তৃতীয় দিন সকালেও দারুণ শুরু করেন এ দুজন। সাবলীল ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির পথে এগোচ্ছিলেন তারা। যদিও জাকির পারেননি, ৯৫ বলে ৮টি চারে ৭১ রান করে বিদায় নেন বাঁহাতি এই ওপেনার। টেস্টে এটা তার দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। জাকির ও শান্ত ১৭৩ রানের জুটি গড়েন।
জাকিরের বিদায়ের পর শান্তর সঙ্গে জুটি বাধেন মুমিনুল। এই জুটি দারুণ ব্যাটিংয়ে লিড বাড়িয়ে নিতে থাকেন। তৃতীয় উইকেটে ৮৩ রানের জুটি গড়েন শান্ত-মুমিনুল। এর মাঝে সেঞ্চুরি তুলে নেন প্রথম ইনিংসেও সেঞ্চুরি করা শান্ত। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে একই টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়লেন তিনি। এতোদিন রেকর্ডটি মুমিনুলের দখলে ছিল।
২০১৮ সালে চট্টগ্রামের শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১৭৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৫ রান করেন মুমিনুল। আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রান করা শান্ত দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫১ বলে ১৫টি চারে ১২৪ রান করে আউট হন, এটা তার চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি। এরপর মুশফিকুর রহিম দ্রুতই আউট হলে মুমিনুলের সঙ্গে যোগ দেন অধিনায়ক লিটন কুমার দাস।
এই জুটির সামনে বাধার দেয়াল তুলতে পারেনি আফগানরা। ১৪৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন মুমিনুল-লিটন। এই জুটিতে রানের পাহাড় আরও বড় করে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। জুটি গড়ার পথে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুমিনুল। প্রায় ২৬ মাস পর টেস্টে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন ১৪৫ বলে ১২টি চার ও একটি ছক্কায় ১২১ রানের হার না মানা ইনিংস খেলা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। টেস্টের সাবেক এই অধিনায়কের এটা দ্বাদশ সেঞ্চুরি, যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। লিটন ৮১ বলে ৮টি চারে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন। আফগানিস্তানের জহির খান ২টি এবং আমির হামজা একটি উইকেট নেন।