'মা এখনও চান না আমি ক্রিকেট খেলি'
মারুফা আক্তার, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা পেসার তো বটেই, দেশের আনাচে-কানাচে অসংখ্য মেয়েদের অনুপ্রেরণার উৎসও তিনি। মারুফার জন্ম নীলফামারিতে, চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি।
কৃষক বাবা আর গৃহিণী মা, মারুফার ক্রিকেটার হওয়ার ইচ্ছাকে কখনোই সমর্থন দেননি তারা। এমনকি জাতীয় দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হওয়া সত্ত্বেও এখনও মারুফার মা তার ক্রিকেট খেলা পছন্দ করেন না!
যা নিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলের এই পেসার বলেন, 'আমার মা এখনও আমাকে অন্যসব মেয়েদের মতোই ঘরে থাকতে বলে। উনি চান না, আমি ক্রিকেট খেলি।'
ক্রিকেট খেলা এবং জাতীয় দলে আসার পেছনের সংগ্রামের গল্প শোনালেন মারুফা, 'ছোটবেলা থেকেই আমি খেলাধুলা পছন্দ করতাম। তখন ছেলেদের সাথেই ফুটবল খেলতে নেমে পড়তাম। যাদের মধ্যে কেউ কেউ আমাকে খোঁচা দিয়ে কথা বলতো, খেলতে নিতে চাইতো না। কিন্তু আমি নিজেকে প্রমাণ করতে বদ্ধপরিকর ছিলাম।'
ফুটবলের ঝোঁক ক্রিকেটের দিকে কীভাবে ধাবিত হলো, সেটিও জানালেন মারুফা, 'আমার বড় ভাই আমাকে ফুটবল খেলতে নিষেধ করতেন। কারণ, এই খেলায় ঝুঁকি বেশি। উনি নিজে যখন ক্রিকেট খেলতেন, আমাকে সাথে নিয়ে যেতেন। আর বলতেন, কিছু না ভেবে খেলে যেতে। আমি এই খেলায় ভালো কিছুই করব। উনিই আমার সবচেয়ে বড় সমর্থক ছিলেন।'
মারুফার বড় ভাই আল-আমিন ইসলামই তাকে নীলফামারির একটি ক্রিকেট একাডেমিতে নিয়ে যান। সেখান থেকেই মারুফার ক্রিকেটার হয়ে ওঠার যাত্রা শুরু।
মারুফা মনে করেন, বাংলাদেশের অনুন্নত জায়গাগুলোতে অনেক মেয়েই আছে, যারা ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। কিন্তু সঠিক সুযোগ এবং পরিচর্যার অভাবে তারা উঠে আসতে পারছেন না, 'সমাজের বাধার কারণে অনেক মেয়েই এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারছে না। আমাদের অভিভাবকেরা যদি একটু সমর্থন দেন, ধীরে ধীরে এই রীতি বদলাবে বলে আমার মনে হয়।'