রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমির আশা উজ্জ্বল অজিদের
ইতিহাস গড়ার খুব কাছে এসেও হৃদয় ভাঙল নিউজিল্যান্ডের। অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া পাহাড়সম লক্ষ্য প্রায় তাড়া করেই ফেলেছিল কিউইরা। ৩৮৯ রানের লক্ষ্য থেকে পাঁচ রান দূরে থেমেছে টম লাথামের দল।
জিততে হলে ইতিহাস বদলাতে হতো নিউজিল্যান্ডকে। সেটির হাত ছোঁয়া দূরত্বে ছিল ব্ল্যাক ক্যাপরা। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জিতেছে অস্ট্রেলিয়াই।
অজিদের দেওয়া ৩৮৯ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই হয়েছিল কিউইদের। ৬১ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে হ্যাজলউডের বলে স্টার্কের হাতে ক্যাচ দিয়ে কনওয়ে আউট হলে। আরেক ওপেনার উইল ইয়ংও এরপর ফিরে যান দ্রুত।
তৃতীয় উইকেটে ৯৬ রানের জুটি গড়েন মিচেল ও রবীন্দ্র। ৫১ বলে ছয়টি চার ও একটি ছয়ে ৫৪ রান করেন মিচেল। এরপরের ব্যাটসম্যানরা এসে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। একপাশে লড়াই চালিয়ে যান রবীন্দ্র।
তুলে নেন বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। আউট হওয়ার আগে ৮৯ বলে নয় চার ও পাঁচ ছয়ে ১১৬ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
শেষদিকে জিমি নিশামের কল্যাণে আবারও জমে ওঠে ম্যাচ। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে রানআউট হওয়ার আগে নিশাম করেন ৩৯ বলে তিন চার ও তিন ছয়ে ৫৮ রান। শেষ বলে জয়ের জন্য ছয় রান লাগতো কিউইদের৷ তবে কোনো রান নিতে দেননি মিচেল স্টার্ক। মাত্র পাঁচ রানে জেতে অজিরা।
টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন আফসোসই হওয়ার কথা টম লাথামের। কিউই অধিনায়কের এই সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী হয়েই ফিরে এসেছে বলা চলে। ধর্মশালার ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে আগে ব্যাট করে তান্ডব চালিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানরা।
নির্ধারিত ৫০ ওভার অবশ্য খেলতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ৪৯.২ ওভার খেলেই যা রান তুলেছেন হেড-ওয়ার্নাররা, তাতে বাকি চার বল না খেলতে পারায় আফসোস থাকার কথা নয় তাদের। সবগুলো উইকেট হারিয়ে ৩৮৮ রানে থেমেছে অজিদের রানের ঘোড়া। এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৩৬০ এর বেশি রান তুলল প্যাট কামিন্সের দল।
অজিদের এই রান পাহাড়ে চড়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নারের। এবারের বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা হেড মাত্র ৫৯ বলে করেছেন সেঞ্চুরি। টানা তৃতীয় সেঞ্চুরির হাতছানি দিচ্ছিল ওয়ার্নারকে। তবে সেটি করতে পারেননি তিনি।
দুই ওপেনার মিলে মাত্র ১৯ ওভারে অজিদের এনে দেন ১৭৫ রানের জুটি। ফিলিপসের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ওয়ার্নার করেছেন ৬৫ বলে পাঁচ চার ও ছয় ছয়ে ৮১ রান। আরেক ওপেনার হেড ৫৯ বলে সেঞ্চুরি করার পর আউট হয়েছেন ৬৭ বলে ১০ চার ও সাত ছয়ে ১০৯ রান করে।
এই দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর কিছুটা কমে আসে অস্ট্রেলিয়ার রান তোলার গতি। তবে শেষদিকে আবারও ঝড় তোলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, প্যাট কামিন্সরা। ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৪১ রান, পাঁচটি চার ও দুটি ছয় মেরেছেন তিনি। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ১৪ বলে চার ছয় ও দুই চারে করেছেন ৩৭ রান। এছাড়া জস ইনলিস ২৮ বলে ৩৮ রান করেন।
বেধড়ক মার খাওয়ার দিনেও কিউইদের হয়ে সফল ছিলেন গ্লেন ফিলিপস। মাত্র ৩৭ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন এই পার্টটাইম স্পিনার। এছাড়া ট্রেন্ট বোল্টও শেষদিকে তিনটি উইকেট নেন। দুটি উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্যান্টনার।