সিলেটে টেস্ট ফেরার দিনে বাংলাদেশের ফিলিপস-অস্বস্তি
পাঁচ বছর পর সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টেস্ট ক্রিকেট ফিরলো, অলআউট না হয়ে দিন শেষ করলো বাংলাদেশ; তবু স্বাগতিক শিবিরে অস্বস্তি। এই অস্বস্তির কারণ নিউজিল্যান্ডের অনিয়মিত বোলার গ্লেন ফিলিপস, মূলত যিনি একজন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। স্কোরকার্ডে ৩০০ ছাড়ানো রান জমা হলেও তার কারণেই দিনটা বলার মতো হয়নি টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশের। উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া বাংলাদেশের চারজন ব্যাটসম্যানকে সাজঘর দেখিয়ে দেন তিনি।
সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ৩১০ রান তুলে দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৮ ও বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম ১৩ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। তবে এই দুজনের ব্যাটে যে দ্বিতীয় দিন বেশি পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব হবে না, সেটা বলেই দেওয়া যায়। অবশ্য ৫ ওভার আগেই দিনের খেলা শেষ না হলে বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়েও যেতে পারতো।
ভালো শুরুর ইঙ্গিতই মিলেছিল, কিউই বোলারদের সামলে এগোচ্ছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। কিন্তু জুটিটা বড় হয়নি, দলীয় ৩৯ রানে বিদায় নেন জাকির। নিউজিল্যান্ডের স্পিনার এজাজ প্যাটেলের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হওয়ার আগে ৪১ বলে একটি চারে ১২ রান করেন বাঁহাতি এই ওপেনার।
প্রথম উইকেট হারানোর চাপ দ্রুতই সামলে নেয় বাংলাদেশ। জয়ের সঙ্গে যোগ দিয়ে জুটি গড়েন সাকিব আল হাসানের অবর্তমানে এই সিরিজে অধিনায়কত্ব পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় উইকেটে এ দুজন ৭১ বলে ৫৩ রান যোগ করেন। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করে শান্ত বেশি সময় টিকতে পারেননি। ৩৫ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৭ রান করে গ্লেন ফিলিপসের প্রথম শিকারে পরিণত হন তিনি।
৯২ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে এরপর অনেকটা পথ পার করিয়ে দেন জয় ও সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। তৃতীয় উইকেটে ১৭১ বলে ৮৮ রানের জুটি গড়েন তারা। কয়েকবার জীবন পেয়েও অবশ্য তা কাজে লাগাতে পারেননি মুমিনুল। ৭৮ বলে ৪টি চারে ৩৭ রান করে ফিলিপসের বলে আউট হন তিনি। একটু পরই বিদায় নেন জয়। সেঞ্চুরির পথে থাকা ডানহাতি এই ওপেনার ১৬৬ বলে ১১টি চারে ৮৬ রান করেন।
৪ রানের ব্যবধানে দুই সেট ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে হঠাৎ-ই চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। অভিষিক্ত শাহাদাত হোসেন দিপুকে সঙ্গে নিয়ে এই চাপ কাটিয়ে তুলতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ২২ বলে ১২ রান করে আউট হন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। মুশফিক-শাহাদাত জুটি থেকে ২৬ রান আসে। পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজও। শাহাদাতের সঙ্গে ২৩ রানের জুটি গড়া মিরাজ ৩০ বলে ২টি চারে ২০ রান করেন।
দলীয় সংগ্রহ ২৬০ পেরনোর পর আউট হন শাহাদাত। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলতে নামা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৫৪ বলে ৩টি চারে ২৪ রান করে কিউই অফ স্পিনার ফিলিপসের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন। তেড়েফুঁড়ে খেলার চেষ্টা করা নুরুল হাসান সোহানের ইনিংসও লম্বা হয়নি। ফিলিপসের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২৮ বলে ৫টি চারে ২৯ রান করেন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান।
স্পিনার নাঈম হাসান চেষ্টা করেছেন ব্যাট হাতে অবদান রাখতে, কিন্তু ২৭ বলে ৩টি চারে ১৬ রানেই থামতে হয় তাকে। এরপর ১৯ বলে ২০ রানের জুটি গড়ে দিনের বাকিটা অংশ পার করেন তাইজুল ও শরিফুল। বাংলাদেশের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যানই উইকেটে সেট হয়েও ইনিংস করতে পারেননি। তাইজুলই কেবল এখন পর্যন্ত এক অঙ্কের রান করেছেন, বাকি সবাই গেছেন দুই অঙ্কে। ১৬ ওভারে ৫৩ রানে ৪টি উইকেট নেন বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ভোগানো ফিলিপস। কাইল জেমিসন ও এজাজ প্যাটেল একটি করে উইকেট পান। লেগ স্পিনার ইশ সোধি নেন একটি উইকেট।