প্রস্তুতি ম্যাচে রিশাদ ঝড়, তানজিদ-সৌম্য-লিটনের হাফ সেঞ্চুরি
অনেকদিন ধরেই দলের সঙ্গে আছেন রিশাদ হোসেন, প্রায়ই স্কোয়াডে নেওয়া হয় তাকে। যদিও খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয় না তার। ব্যাট চালাতে পারলেও দলে তার ভূমিকা লেগ স্পিনারের। সেই রিশাদই নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালালেন, পরে বল হাতেও রাখলেন অবদান। তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের ম্যাচে রানের দেখা পেলেন তানজিদ হাসান তামিম, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাসরা।
চার হাফ সেঞ্চুরিতে বিশাল সংগ্রহ গড়ে জয়ে প্রস্তুতি সারলো বাংলাদেশ। লিংকনের বার্ট সাটক্লিফ ওভালে অনুষ্ঠিত ম্যাচে নিউজিল্যান্ড একাদশকে ২৬ রানে হারিয়েছে সফরকারীরা। আগে ব্যাটিং করে ৪৯.৫ ওভারে ৩৩৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে ভালোই লড়াই করা কিউইদের ইনিংস থামে ৩০৮ রানে। ম্যাচটিতে খেলেননি এই সফরে অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
বড় লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নামা স্বাগতিকদের ভালো শুরু করতে দেননি বাংলাদেশের পেসার হাসান মাহমুদ। নিউজিল্যান্ড একাদশের দুই ওপেনার জেকব কামিংস ও জেকব ভুলাকে ৩২ রানেরই মধ্যেই ফিরিয়ে দেন তিনি। ৬ ওভারে স্পেলে ৩৬ রান খরচায় ২ উইকেট নেন ডানহাতি এই পেসার। অন্য প্রান্ত থেকে তার সঙ্গে বোলিং করা মুস্তাফিজুর রহমান ৬ ওভারে ৬ রানে উইকেটশূন্য থাকেন।
১৪তম ওভারে বোলিংয়ে আসা তানজিম হাসান সাকিব ফেরান ২৩ রান করা কুইন সান্ডেকে। জেটি টডকে টিকতে দেননি আফিফ হোসেন ধ্রুব। ১ রান করেই বিদায় নেন তিনি। ১৬.৪ ওভারে ৪ উইকেটে ৮০ তোলে ঘরের মাঠের দলটি। এখান থেকে জুুটি গড়ে তোলেন ভারত পপলি ও এসকে প্যাটেল। ১৫৬ রান যোগ করেন এ দুজন। হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করে তিন অঙ্কের দিকে এগোচ্ছিলেন তারা। কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসে দুজনকেই হতাশ করেন আফিফ।
বাংলাদেশে এই স্পিনারের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে পপরি ৯০ বলে ১৩টি চারে ৯২ ও প্যাটেল ৭৭ বলে ১১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৮৯ রান করেন। এই দুজনকে হারানোর পর আর লড়াই করতে পারেনি নিউজিল্যান্ড একাদশ। শেষ দিকে বল হাতে তোপ দাগেন রিশাদ, শেষের দিকের উইকেটগুলো তুলে নেন তিনি। রিশাদ ৭.২ ওভারে ৫২ রানে ৩টি উইকেট নেন। আফিফের শিকারও ৩ উইকেট, ৬ ওভারে তার খরচা ২৬ রান। সাকিব ৮ ওভারে ৪৮ রানে ১ উইকেট নেন। বাকি উইকেটটি নেওয়া রকিবুল হাসান ১০ ওভারে ৬১ রান দেন।
এর আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ এনামুল হক বিজয় ও তানজিদ হাসান তামিমের উদ্বোধনী জুটি থেকে ৪৭ রান পায়। ২৬ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৩ রান করে আউট হন বিজয়। এরপর সৌম্য সরকারের সঙ্গে ১০১ রানের জুটি গড়ে তোলেন তানজিদ। জুটি গড়ার পথে দুজনই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। তানজিদ ৪৬ বলে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৮ রান করেন। দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা সৌম্য ৫৬ বলে ৮টি চার ও একটি ছক্কায় ৫৯ রান করেন।
এরপর দ্রুতই তাওহিদ হৃদয় ও আফিফ হোসেন। রানের খাতা খুলতে পারেননি হৃদয়, আফিফ করেন ১০ রান। এখান থেকে রিশাদের সঙ্গে জুটি গড়েন হাফ সেঞ্চুরি করা লিটন। ডানহাতি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ৬৩ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৫৫ রান করেন। এরপর রিশাদের ব্যাটিং শো, খুনে ব্যাটিং করতে থাকেন এই লেগ স্পিনার। শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৫৪ বলে ১১টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৮৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। নিউজিল্যান্ড একাদশের সারপ্রিত সিং ৪টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান জোয়ে ফিল্ড ও জেমস হার্টশর্ন।
নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের ম্যাচের সূচি
প্রথম ওয়ানডে; ভেন্যু: ডানেডিন; ১৭ ডিসেম্বর
দ্বিতীয় ওয়ানডে; ভেন্যু: নেলসন; ২০ ডিসেম্বর
তৃতীয় ওয়ানডে; ভেন্যু: নেপিয়ার; ২৩ ডিসেম্বর
প্রথম টি-টোয়েন্টি; ভেন্যু: নেপিয়ার; ২৭ ডিসেম্বর
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি; ভেন্যু: মাউন্ট মঙ্গানুই; ২৯ ডিসেম্বর
তৃতীয় টি-টোয়েন্টি; ভেন্যু: মাউন্ট মঙ্গানুই; ৩১ ডিসেম্বর