ক্লাব সভাপতিকে কখনই ক্ষমা করবেন না তুরস্কের সেই রেফারি
ফুটবল ম্যাচে মারামারির দৃশ্য নতুন কিছু নয়। মেজাজ হারিয়ে হাতাহাতিতে জড়ান দুই দলের ফুটবলাররা, কখনও সেটা ঘুষি-লাথি পর্যন্তও গড়ায়। কিন্তু ইউরোপিয়ান ফুটবলে রেফারিকে মারার নজির খুব বেশি নেই। যদিও কদিন আগে এমন ঘটনারই সাক্ষী হয় ফুটবল দুনিয়া।
তুরস্কের শীর্ষ সারির টুর্নামেন্ট টার্কিশ সুপার লিগে ম্যাচ শেষে উয়েফার তালিকাভুক্ত রেফারি হালিল উমুত মেলারকে ঘুষি মারেন আঙ্কারাগুজু ক্লাবের সভাপতি ফারুক কোজা। এই ঘটনায় কোজাকে নিষিদ্ধ করাসহ তার ক্লাবকে শাস্তি দেওয়া হয়, স্থগিত করা হয় লিগ। কিন্তু কোজার ওপর এতটাই ক্ষীপ্ত যে, তাকে কখনই ক্ষমা করবেন না বলে জানিয়েছেন উমুত।
গত ১১ ডিসেম্বর ম্যাচের ৯৭ মিনিটে গোল করে আঙ্কারাগুজুর বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে কেকার রিজেসপোর। জয় হাতছাড়া হওয়ায় যেন বিগড়ে যান কোজা, দৌড়ে এসে উমুতকে ঘুষি মারেন তিনি। আঘাতে উমুতের মুখের হাড়ে সামান্য চিড় ধরে। চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছাড়া উমুত স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, 'আমি কখনই তাকে ক্ষমা করব না, ঘটনাটি ভোলার মতো নয়। ওই সময় আমি মাটিতে পড়ে গিয়েছিলাম। আমার যেটা অনুভব করেছি, তা আমি জীবনে কোনদিন ভুলব না। আর এ কারণেই আমি তাকে কখনই ক্ষমা করব না।'
২০১৫ সাল থেকে টার্কিশ সুপার লিগের ম্যাচ পরিচালনা করে আসা উমুত আরও বলেন, 'আমি মনে করি এই ঘটনাটি সকলের কাছেই শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। রেফারিকে উত্তেজিত করা কোনোভাবেই ঠিক নয়। সবারই যার যার নিজস্ব দায়িত্ব আছে। এখানে শিক্ষার অভাব রয়েছে। রেফারিদেরর যথেষ্ট ট্রেনিংয়ের সুযোগ সুবিধা নেই। রেফারিরাও মানুষ, তাদেরও পরিবার আছে। সব সময় চাপে মধ্যে থাকলে কারও জন্যই ভালভাবে কাজ করা সম্ভব নয়।'
এই ঘটনায় কোজাকে আজীবন নিষিদ্ধ করে টার্কিশ ফুটবল ফেডারেশন (টিএফএফ)। আঙ্কারাগুজুকে দুই মিলিয়ন লিরা (৫৪ হাজার পাউন্ড) জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ঘরের মাঠে আগামী পাঁচটি ম্যাচে তাদেরকে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলতে হবে। ঘটনার পর আঙ্কারাগুজু এক বিবৃতিতে জানায়, কোজা ক্ষমা প্রার্থনা করছেন ও ক্লাব সভাপতির পদ সড়ে দাঁড়াচ্ছেন।