‘আমি কিছু বললে কি উইকেট পরিবর্তন হবে’- প্রশ্ন লিটনের
রান খরা যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল)। হাতেগোণা কয়েকটি ম্যাচে টি-টোয়েন্টিসুলভ রান হয়েছে। বাকি ম্যাচগুলোয় উল্লেখ করার মতো রান হয়নি। ছোট লক্ষ্য পাড়ি দিতে নেমেও সংগ্রাম করতে দেখা গেছে অনেক দলকে। ঢাকার দুই পর্ব ও সিলেট; সবখানেই একই চিত্র। রান না হওয়ার কারণ হিসেবে অনেকেই উইকেটের কথা বলছেন। রংপুরের পাকিস্তানি ওপেনার বাবর আজম তো বলেই দিয়েছেন, বিপিএলের উন্নতিতে উইকেটের দিকে নজর দিতে হবে।
রান খরার সর্বশেষ প্রমাণ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স-খুলনা টাইগার্সের ম্যাচ। বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা কুমিল্লা ৭ উইকেটে ১৪৯ রান তোলে। এই লক্ষ্যে পাড়ি দিতে নেমে ৩৪ রানে হারে খুলনা। কুমিল্লার পাকিস্তানি পেসার আমির জামালের তোপে ১৮.৫ ওভারে ১১৫ রানেই গুটিয়ে যায় খুলনার ইনিংস। বিপিএলে এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বেশিরভাগ ম্যাচেই এমন চিত্র।
ম্যাচ জিতে সংবাদ সম্মেলনে আসা কুমিল্লার অধিনায়ক লিটন কুমার দাসকে উইকেট নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়। ডানহাতি এই ওপেনার অবশ্য নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করেন। এমন উইকেটে ১৭০ রান করা সম্ভব হলেও তারা কোনো কারণে পারেননি বলে জানান লিটন। উইকেট নিয়ে অবিরত প্রশ্নে যেন কিছুটা বিরক্তও হলেন তিনি। তাই তো লিটন প্রশ্ন রাখলেন, 'আমি কিছু বললে কি উইকেট পরিবর্তন হবে?'
উইকেট সম্পর্কে জানতে চাইলে উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান বলেন, 'আমি কিছু বললে কী উইকেট পরিবর্তন হবে? আমি যদি বলি, কালকের ম্যাচে ২০০ রানের উইকেট দেন, দিতে পারবে? পরিস্থিতি যেমন, ওভাবেই খেলতে হবে। ১৫০ রানের উইকেটে আমরা কিভাবে ১৫০ রান করতে পারি এটাও একটা চ্যালেঞ্জ। আপনি সব সময় টি-টোয়েন্টিতে ২০০ রানের উইকেট পাবেন না।'
বাস্তবতা বিবেচনায় এই উইকেটেই মানিয়ে নিয়ে খেলা উচিত বলে মনে করেন লিটন। তার ভাষায়, 'আমরা প্রতি বছরই চেষ্টা করি। একটা জিনিস সব সময় উইকেটকে দোষ দেওয়া, জিনিসটা এমন নয়। যারা ক্যালকুলেটিভ রিস্ক নিয়ে খেলতে পারে, তারা কিন্তু এই মাঠেও…। এখানেও কিন্তু ১৭০ রান হওয়ার মতো ছিল। তাহলে আমরা কেউ-ই উইকেটকে দোষ দিতাম না। কোনো কারণে আমরা পারি নাই। মিডল ওভারে আমরা রান বের করতে পারি নাই।'
'আমাদের কিছু ল্যাকিংস আছে, ব্যাটসম্যান হিসেবে কীভাবে মিডল ওভারে রান করব? আমাদের বাংলাদেশ দলেও এমন আছে। পাওয়ার প্লেতে রান করলে মাঝখানে খেলতে পারি না। কখনও মাঝখানে খেলতে পারলে শেষ করতে পারি না। এখনও আমরা শেখার প্রক্রিয়ায় আছি। এমন না যে আমরা খুব ভালো টি-টোয়েন্টি দল। বিপিএলের ম্যাচগুলো চলতে চলতে এক সময় আমরা শিখতে পারব কীভাবে মিডল ওভারে খেলব।' যোগ করেন তিনি।
ফরম্যাটটা টি-টোয়েন্টি বলে প্রতি ম্যাচে রান হতেই হবে, এমন মনে করেন না লিটন। এ ব্যাপারে তার ব্যাখ্যা, '১৮০ রানই তো হচ্ছে না ঢাকায়, ২০০ কীভাবে করবেন আপনি? আমার একটা প্রশ্ন, টি-টোয়েন্টি ম্যাচে কী ২০০ হতেই হবে? এমন কোনো খেলা এটা? গ্যালারিতে মানুষ আসে খেলা উপভোগ করতে। সেটা ছয় চারে হতে পারে, উইকেট নিয়েও হতে পারে। আপনি ২০০ রান করলেন, আরেক দল করল ১১০; মজা হলো না খেলার।'
রান কম হলেও বিপিএলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে বলে মনে করেন লিটন। উদাহরণ হিসেবে নিজেদের ম্যাচের কথা উল্লেখ করেন তিনি। দর্শকরা যা যাচ্ছেন, বিপিএলে তা আছে জানিয়ে লিটন বলেন, 'যদি ১৫০ রান হয়, ১৫০ রান তাড়া করলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে। আমার কুমিল্লার প্রতিটা ম্যাচই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে খেলেছি, প্রথম দুই ম্যাচ তো আপনারা দেখেছেন। আমার মনে হয় দর্শক যেটা চাচ্ছে, সেটা উপভোগ করতে পারছেন।'