আবারও জাতীয় দলের স্পন্সর রবি, এবার কমলো টাকার অঙ্ক
চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এখন চট্টগ্রামে। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ক্রিকেটীয় তেমন কর্মকাণ্ড নেই বললেই চলে। এর মাঝেই শুক্রবার হোম অব ক্রিকেটে কিছুটা উৎসবের আমেজ ফিরলো, শোভা পেল রঙিন সব ব্যানার। মূল ফটক দিয়ে ঢোকার পর থেকেই টানানো রঙিন ব্যানার, মাঠের মধ্যে লাল মঞ্চ। আয়োজনটা জাতীয় দলের স্পন্সর ঘোষণার।
বর্ণিল আয়োজনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ঘোষণা দিলো, জাতীয় দলের স্পন্সর হয়েছে টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি আজিয়াটা লিমিটেড। যারা আগেও বাংলাদেশ দলের স্পন্সর ছিল। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরে গিয়েছিল টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি।
তৃতীয়বারের মতো জাতীয় দলের স্পন্সর হলো রবি। তাদের সঙ্গে সাড়ে তিন বছরের চুক্তি করেছে বিসিবি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৭ সালের জুলাই পর্যন্ত জাতীয় দলের সঙ্গে থাকবে প্রতিষ্ঠানটি। তিন বছরের চুক্তিতে বিসিবিকে ৫০ কোটি টাকা দেবে রবি। যা আগের চুক্তির অর্থের তুলনায় বেশ কম। বাংলাদেশের ক্রিকেট সামনে এগোলেও সাড়ে পাঁচ বছর পর এসে স্পন্সর বাবদ কম অর্থ মিললো বিসিবির।
২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের স্পন্সর হয় রবি। প্রথম চুক্তির প্রাথমিক মেয়াদ ছিল ২০১৭ সাল পর্যন্ত। পরে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করে বিসিবি। দুই বছর মেয়াদে ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি করা হয়। কিন্তু ১০ মাস বাকি থাকতেই নিজেদের গুটিয়ে নেয় রবি। সে সময় গুঞ্জন ছিল, সম্পর্কের টানাপোড়েনে সরে গিয়েছে রবি।
২০১৫ সালে ৪২ কোটি টাকায় দুই বছরের জন্য রবির সঙ্গে চুক্তি হয় বিসিবির। ২০১৭ সালে আবার দুই বছরের জন্য বিসিবি-রবি চুক্তি হয় ৬৪ কোটি টাকায়। এবার সাড়ে তিন বছরের চুক্তিতে বিসিবি পাবে ৫০ কোটি টাকা। সাড়ে পাঁচ বছর পর চুক্তির অর্থ ১৪ কোটি টাকা কমেছে। কী কারণে টাকার অঙ্ক কমেছে, এই প্রশ্নটির উত্তর আগের মতো করেই দিলেন নিজাম উদ্দিন চৌধুরী।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী বলেন, 'সবকিছু তো আসলে তুলনা করা যায় না (অন্য দেশের সঙ্গে)। আমাদের মনে হয়েছে, এটি ভালো চুক্তি। বর্তমান প্রেক্ষাপট ও অন্যান্য বিষয় মিলিয়ে আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। অন্যান্য পৃষ্ঠপোষকদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তারপর আমাদের মনে হয়েছে, রবির সঙ্গে এই চুক্তিটা আমরা করতে পারি।'
আগের চুক্তি শেষ না করেই সরে যাওয়ার কারণ হিসেবে রবির পক্ষ থেকে সেসময় বলা হয়, 'স্পন্সর বিষয়ক চুক্তিটি প্রাসঙ্গিকতা হারানোয়' তারা সরে দাঁড়িয়েছে। কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তখন। পরে জানা যায়, বিসিবি চুক্তির কিছু শর্ত ঠিকভাবে মানতে পারেনি বলে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বরি। মূলত জাতীয় দলের কয়েকজন তারকা ক্রিকেটারের সঙ্গে অন্যান্য টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত চুক্তির কারণে বিসিবি-রবির সম্পর্কে বৈরীতা দেখা দেয়।
এবার বিষয়টি নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক বিসিবি। নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'আমি বলব না যে, (প্রথম মেয়াদে) আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা হয়েছিল। আমরা সমঝোতার মাধ্যমে আলাদা হয়েছিলাম। কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনার জায়গা ছিল। সমঝোতার মাধ্যমে সেগুলো সেরে আমরা পরে অন্য পৃষ্ঠপোষকের দিকে যাই।'
'রবি আবারও আমাদের সঙ্গে আসায় তাদের ধন্যবাদ ও স্বাগত জানাই। যে বিষয়টা (ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত চুক্তি) বলেছেন, সেগুলো অবশ্যই আমাদের ভাবনায় ছিল। এসব বিবেচনায় রেখেই আমরা নতুন চুক্তিতে যাচ্ছি। আশা করি, এটি নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।'
রবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে পারবেন না বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটাররা। তবে বর্তমান চুক্তি শেষ করতে পারবেন ক্রিকেটাররা। বিসিবির প্রধান নির্বাহী বলেন, 'সাংঘর্ষিক কোনো ব্র্যান্ডের সঙ্গে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটাররা চুক্তি করতে পারবে না। তবে যেসব ক্রিকেটারদের বর্তমানে চুক্তি রয়েছে, তারা সেটির মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে নিতে পারবে। নতুন করে কেউ সাংঘর্ষিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে না।'