হোসেলু বীরত্বে ঘুরে দাঁড়ানোর উপাখ্যান লিখে ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মানেই রিয়াল মাদ্রিদের শাসন। ধ্বংসস্তূপ থেকে জেগে উঠেও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখতে জানে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখের মাঠে গিয়েও দুর্বার থাকা রিয়াল ড্র করে আসে। ঘরের মাঠেও চললো তাদের শাসন, মুহুর্মুহু আক্রমণে দিশেহারা করে তুললো বায়ার্নকে। যদিও তাদের জালেই বল জড়ালো আগে। কিন্তু হেরে গিয়েও হার মানে না যারা, সেই রিয়ালকে দমায় কে!
নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার দুই মিনিট আগে রিয়ালকে সমতায় ফেরানো হোসেলু আবারও খুঁজে নিলেন জালের ঠিকানা। যেখানে দায় থাকলো পুরো ম্যাচজুড়ে দেয়াল তুলে দাঁড়িয়ে থাকা বায়ার্ন মিউনিখের গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়ারেরও। যোগ করা সময়ে সমতা টানা হলো না বায়ার্নের। প্রত্যাবর্তনের উপাখ্যান লিখে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠে গেল রিয়াল মাদ্রিদ।
বুধবার রাতে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে সেমি-ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে বায়ার্নকে ২-১ গোলে হারিয়েছে রিয়াল। দুটি গোলই করেন হোসেলু, তিন মিনিটে গোল দুটি করেন বদলি হিসেবে নামা ৩৪ বছর বয়সী স্প্যানিশ এই স্ট্রাইকার। দুই লেগ মিলিয়ে রিয়াল জিতলো ৪-৩ ব্যবধানে। আগের লেগে বায়ার্নের মাঠে ২-২ গোলে ড্র করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সফলতম ক্লাবটি। আগামী ১ জুন লন্ডনের ওয়েম্বলিতে রেকর্ড ১৫তম শিরোপার লক্ষ্যে জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে লড়বে কার্লো আনচেলোত্তির শিষ্যরা।
দাপুটে শুরু করা রিয়াল পুরো ম্যাচজুড়েই শাসন করে। বল দখলের লড়াই থেকে শুরু করে লক্ষ্য শট নেওয়া, সব কিছুতেই এগিয়ে ছিল ঘরের মাঠের দলটি। ৫৮ শতাংশ সময় বল নিজেদের পায়ে রাখেন টনি ক্রুস, ভিনিসিয়ুস জুনিয়ররা। অবিরত আক্রমণ সাজাতে থাকা রিয়াল গোলমুখে ১৯টি শট নেয়, এর মধ্যে ৭টি ছিল লক্ষ্যে। রক্ষণাত্মক খেলা বায়ার্নের নেওয়া ৮টি শটের ৫টি ছিল লক্ষ্যে। বায়ার্নের রক্ষণভাগে বারবার হানা দেওয়া রিয়াল ৮টি কর্নার আদায় করে নেয়, বায়ার্ন পায় ৪টি।
রিয়াল অনেক আক্রমণ সাজালেও লড়াইটা হচ্ছিল মূলত ভিনিসিয়ুস ও নয়ারের মধ্যে। উড়ন্ত বলাকার মতো ঝাঁপিয়ে বারবার বায়ার্নের জাল অক্ষত রাখছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ বেলায় গিয়ে ১০ মিনিটেই নায়ক এস্পানিওল থেকে ধারে রিয়ালে আসা হোসেলু। ৮১তম মিনিটে ফেদে ভালভের্দের বদলি হিসেবে নামা হোসেলু ৮৮তম মিনিটে রিয়ালকে সমতায় ফেরান। ভিনিসিয়ুসের সোজাসুজি শট ঠেকাতে গিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি নয়ার। ছুটে গিয়ে আলগা বল পাওয়া হোসেলু সহজেই জালের ঠিকানা করে নেন।
যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটেই (৯১তম মিনিট) সান্তিয়াগো বার্নাব্যুকে আবারও উল্লাসে মাতান হোসেলু। বাঁ দিক থেকে ছোট বক্সের মুখে বল বাড়ান রুডিগার, অরক্ষিত থাকা হোসেলু আলতো টোকায় বল জালে জড়ান। এর আগে ৬৮তম মিনিটে গোল করে বায়ার্নকে এগিয়ে নেন আলফনসো ডেভিস, কানাডার এই ফরোয়ার্ডও বদলি হিসেবে মাঠে নামেন। পাল্টা আক্রমণে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে দারুণ কোনাকুনি শটে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন ডেভিস।