শূন্যের রেকর্ডে শীর্ষে সৌম্য
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ, দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি শূন্য রানে আউট হয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরছেন সৌম্য সরকার। গ্যালারির গলি দিয়ে ঢোকার সময় একজন দর্শক মোবাইলে ভিডিও করছেন এবং সৌম্যকে বলছেন, 'ভাই, আপনি তো শূন্য সরকার হয়ে গেছেন।' তাতে কান দেননি সৌম্য, মাথা নিচু করে ফিরেছেন সাজঘরে। তার জন্য ব্যাপারটি নিশ্চয়ই চরম হতাশার, ভক্ত বা সমর্থকের কাছ থেকে এমন আচরণ কোনো খেলোয়াড়ের জন্যই কাম্য নয়।
কিন্তু এই শূন্যের সঙ্গে সম্পর্ক আছে সৌম্যর। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচের পর ব্যাপারটি আরও পোক্তভাবে জুড়ে গেছে তার নামের সঙ্গে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দল ২ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় পেলেও সৌম্য ছিলেন অনুজ্জ্বল। আরও একবার শূন্য রানে আউট হয়েছেন দীর্ঘ সময় ধরে রান খরায় থাকা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। এতে শূন্যের অস্বস্তির রেকর্ডের তালিকায় শীর্ষে নাম বসে গেছে তার।
অল্প রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই আউট হন সৌম্য, ২ বল খেলে খুলতে পারেননি রানের খাতা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বশেষ তিন ইনিংসের মধ্যে এটা তার দ্বিতীয় শূন্য। জাতীয় দলে নিয়মিত খেলতে না পারলেও লম্বা সময়ে ৮৪টি টি-টোয়েন্টি খেলে ফেলেছেন সৌম্য, ব্যাটিং করেছেন ৮৩ ইনিংসে। এর মধ্যে ১৩বার শূন্য রানে আউট হয়েছেন টপ অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। টি-টোয়েন্টিতে তার চেয়ে বেশিবার শূন্য রানে আউট হননি আর কোনো ব্যাটসম্যান।
বিব্রতকর এই রেকর্ডে সৌম্যর সঙ্গে অবশ্য আরেকটি নাম আছে। আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক পল স্টার্লিংও টি-টোয়েন্টিতে ১৩ বার রানের খাতা খোলার আগে আউট হয়েছেন। পরের নামটিই ভারতের তারকা ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মার, ১২বার শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। তবে সৌম্যর চেয়ে অসেক বেশি ম্যাচ খেলেছেন এ দুজন। ১৪৪ ম্যাচের ১৪৩ ইনিংসে ব্যাটিং করেছেন স্টার্লিং। ১৫২ ম্যাচ খেলা রোহিত ব্যাটিং করেছেন ১৪৪ ইনিংসে। এ দুজনের তুলনায় সৌম্যর শূন্য রানে আউট হওয়ার গড় অনেক বেশি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সৌম্যর শূন্য রানে আউট হওয়ার সংখ্যা কম নয়। এ নিয়ে বিশ্ব আসরে চারবার রান না করেই আউট হলেন তিনি। বিশ্বকাপের ১৬ ইনিংসে মাত্র ৯.৪৩ গড়ে তার রান ১৫১, সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ২১। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অবশ্য তার চেয়ে বেশিবার শূন্য রানে আউট হওয়ার নজির আছে। শ্রীলঙ্কার তিলকারত্নে দিলশান ও পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি ৫বার রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়েছেন।
লম্বা সময়ে ধরে সৌম্যর ব্যাটে রান নেই। ২০২১ সালের জুলাইতে হারারেরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। খেলেন ৬৮ রানের ইনিংস, যা তার ক্যারিয়ার সেরা। এরপর ২৭ ইনিংসে কোনো হাফ সেঞ্চুরি করতে পারেননি বাংলাদেশের এই ব্যাটসম্যান। দীর্ঘ এই সময়ে ১০৯.৫৫ স্ট্রাইক রেট ও ১২.৩৪ গড়ে ৩২১ রান করেছেন সৌম্য। বাংলাদেশের হয়ে ৮৪টি টি-টোয়েন্টিতে ৫টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ১২২.৯৫ স্ট্রাইক রেট ও ১৭.৬৯ গড়ে ১ হাজার ৩৯৮ রান করেছেন তিনি।