অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সেমিতে ভারত, টিকে রইলো বাংলাদেশ
উইকেটে গিয়েই ঝড় তুললেন রোহিত শর্মা। যতোক্ষণ থাকলেন, ততোক্ষণ তাণ্ডব চালালেন ভারত অধিনায়ক। অন্যরা তার মতো করে ব্যাট চালাতে না পারলেও বড় সংগ্রহ পেল ভারত। যা পাড়ি দিতে নেমে ট্রাভিস হেডের ব্যাটে ভালোই লড়লো অস্ট্রেলিয়া, যদিও তা যথেষ্ট হলো না। সুপার এইটে টানা তিন জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে উঠে গেল ভারত।
সোমবার সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক নম্বর গ্রুপের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২৪ রানে হারিয়েছে ভারত। তিন ম্যাচ জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শেষ চারে পা রাখলো রোহিতবাহিনী। এই হারে শেষ চারের স্বপ্ন বিবর্ণ হয়ে উঠলো অস্ট্রেলিয়ার। তিন ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে অজিরা এখন বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের দিকে তাকিয়ে।
অস্ট্রেলিয়া হেরে যাওয়ায় অবশ্য আশা বেঁচে থাকলো বাংলাদেশের। আরও একটি সুযোগ পাচ্ছেন শান্ত-সাকিবরা। এর জন্য আফগানিস্তানকে হারাতেই হবে তাদের। আছে সমীকরণও, আগে ব্যাটিং করে ১৬০ রান তুললে অন্তত ৬২ রানে আফগানদের হারাতে হবে। পরে ব্যাটিং করলে লক্ষ্য বিবেচনায় ১১.৫ থেকে ১৩.৪ ওভারের মধ্যে জিততে হবে। এরচেয়ে ব্যবধান কম হলে অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ২ হবে। নেট রান রেটে এগিয়ে থেকে শেষ চারে যাবে অস্ট্রেলিয়া।
তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানিস্তান জিতলে কোনো হিসাব ছাড়াই বাদ পড়ে যাবে অস্ট্রেলিয়া। কারণ তাদের চেয়ে বেশি পয়েন্ট হবে আফগানদের, ৪ পয়েন্ট নিয়ে এই গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে উঠবে সেমি-ফাইনালে উঠে যাবে রশিদ-নবীদের দেশ। অজিদের মতো বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হবে বাংলাদেশকেও। ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ভারত, ২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে অস্ট্রেলিয়া। সমান ২ পয়েন্ট হলেও রান রেটে পিছিয়ে তিনে আফগানিস্তান, সুপার এইটে বাংলাদেশ এখনও জয়হীন। মঙ্গলবার ভোরে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান।
বৃষ্টির হানা ছিল ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে, টস হেরে তাই ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠান অজি অধিনায়ক মিচেল মার্শ। ব্যাট উইকেটে গিয়ে ব্যাটকে তরবারিতে পরিণত করেন ম্যাচসেরা রোহিত, চার-ছক্কার বন্যা বইয়ে দেন তিনি। সঙ্গে সূর্যকুমার যাদব, শিবম দুবে ও হার্দিক পান্ডিয়াদের ছোট ছোট ইনিংস; ৫ উইকেটে ২০৫ রান তোলে ভারত। জবাবে ট্রাভিস হেড ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার কেউ-ই প্রয়োজন অনুসারে ব্যাট চালাতে পারেননি, ৭ উইকেটে ১৮৭ রানে থামে অজিরা।
লক্ষ্য তাড়ায় হেড যতোক্ষণ উইকেটে ছিলেন, ততোক্ষণ আশা বেঁচে ছিল অস্ট্রেলিয়ান। বাঁহাতি এই ওপেনার ৪২ বলে ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭৬ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন। ২৮ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৭ রান করেন মার্শ। টিম ডেভিড ১৫ ও প্যাট কামিন্স ১১ রান করেন। ব্যাটিং করা বাকি চারজন দুই অঙ্কে যেতে পারেননি। ভারতের আর্শদীপ সিং ৩টি ও কুলদীপ যাদব ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান জাসপিত্র বুমরাহ ও অক্ষর প্যাটেল।
এর আগে ব্যাটিং করা ভারতকে রোলার কোস্টারে চড়িয়ে এগিয়ে নিয়ে যান রোহিত। ডানহাতি এই ওপেনার উইকেটে রীতি সাইক্লোন বইয়ে দেন। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৮.৪ ওভারেই ১০০ রানে পৌঁছে যায় ভারত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির পথে থাকা রোহিত শেষ পর্যন্ত ৪১ বলে ৭টি চার ও ৮টি ছক্কায় ৯২ রানের চোখ ধাঁধানো এক ইনিংস খেলেন। সূর্যকুমার ৩১, দুবে ২৮, হার্দিক ২৭ ও পন্ত ১৫ রান করেন। অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ও মার্কাস স্টয়নিস ২টি করে উইকেট পান। একটি উইকেট নেন জশ হ্যাজেলউড।