বিশ্বকাপ জয়ের বোনাস থেকে আড়াই কোটি রুপি ফিরিয়ে দিলেন দ্রাবিড়
খেলোয়াড় হিসেবে ছিলেন দলের অন্যতম ভরসা। ব্যাট হাতে উইকেটে গেলে স্বস্তিতে থাকতো দল। ব্যাটিং টেকনিক, ধৈর্য আর লড়াইয়ের কারণে তার নাম হয়ে উঠেছিল 'দ্য ওয়াল'। হ্যাঁ, নাম তার রাহুল দ্রাবিড়। কোচ হিসেবেও তিনি ভরসার আরেক নাম। প্রধান কোচ হিসেবে ভারতকে যুব বিশ্বকাপ জেতানোর পর এবার জাতীয় দলকেও জিতিয়েছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
ট্রফি ছুঁয়ে দেখেছেন দ্রাবিড়, পেয়েছেন বোনাস। তৃপ্তির ঢেকুর তুলে ভারত দলের চাকরি ছেড়েছেন সাবেক এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু বিদায় বেলাও নিজের চরিত্রের ছাপ রেখে যাচ্ছেন তিনি। দল থেকে পাওয়া বোনাসের আড়াই কোটি রুপি ফিরিয়ে দিয়েছেন দ্রাবিড়। অন্যদের তুলনায় বেশি বোনাস নিতে রাজি হননি মাঠ ও মাঠের বাইরে আপদমস্তক ভদ্রলোক হিসেবে পরিচিত ভারতের এই জীবন্ত কিংবদন্তি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে (২০০৭) শিরোপা জেতার পর থেকেই অপেক্ষায় ভারত। সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপের আগে সাতটি আসরে অংশ নিয়ে সেই অপেক্ষা ঘোচাতে পারেনি দলটি। ১৭ বছর পর এসে দ্রাবিড়ের তত্ত্বাবধানে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছেন রোহিম শর্মা, বিরাট কোহলি, হার্দিক পান্ডিয়ারা।
বিশ্ব জয়ে আইসিসি থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পুরস্কার মিলেছে ভারতের। চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তারা পেয়েছে ২৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকারও বেশি। পাশাপাশি বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) ভারত দলের জন্য ১২৫ কোটি রুপি বোনাস ঘোষণা করে।
বোনাসের অর্থ থেকে খেলোয়াড়দের পাশাপাশি প্রধান কোচ দ্রাবিড়ের জন্য পাঁচ কোটি রুপি বোনাস বরাদ্দ করে বিসিসিআই। সহকারী হিসেবে থাকা ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোর, ফিল্ডিং কোচ টি দিলিপ ও বোলিং কোচ পরশ মামব্রের জন্য বরাদ্দ রাখা হয় আড়াই কোটি রুপি করে। কিন্তু কোচিং স্টাফের অন্যদের চেয়ে বাড়তি বোনাস নেবেন না দ্রাবিড়। তিন সহকারী কোচের সমান আড়াই কোটি রুপি নেবেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া তাদের খবরে জানিয়েছে, বোনাসের বাড়তি আড়াই কোটি রুপি না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন দ্রাবিড়। বিসিসিআইয়ের এক সূত্র এ বিষয়ে বলেছেন, 'সাপোর্ট স্টাফদের মতো তাকেও আড়াই কোটি রুপি দিতে বলেছেন রাহুল। আমরা তার ভাবনাকে সম্মান জানাই।'
এর আগেও অতিরিক্ত বোনাস নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন দ্রাবিড়। ২০১৮ সালে ভারত যুব দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর কোচিং স্টাফদের চেয়ে অতিরিক্ত বোনাস দেওয়া হলে তা প্রত্যাখান করেন তিনি। সেবার দ্রাবিড়ের জন্য ৩০ লাখ, কোচিং স্টাফদের জন্য ২০ ও খেলোয়াড়দের জন্য ৩০ লাখ রুপি করে ঘোষণা করে বিসিসিআই। কিন্তু দ্রাবিড়ের অনুরোধে পরে সবাইকে ২৫ লাখ রুপি করে দেওয়া হয়।