সভাপতি হয়েই ফারুক বললেন, ‘ক্রিকেট বোর্ডও দুর্নীতির বাইরে নয়’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দুর্নীতি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। যদিও তাতে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বোর্ডের কর্মকাণ্ডে তেমন প্রভাব পড়েনি। নিজেদের মতো করেই দেশের ক্রিকেট পরিচালনা করে গেছে এই বোর্ড। সরকার পরিবর্তনের পরে ১২ বছর ধরে চলা দুর্নীতির বিষয়ে জোরেশোরে আলোচনা হচ্ছে, তোলা হচ্ছে প্রশ্ন। এসব প্রশ্নে দুর্নীতি-অনিয়মের কথা জানেন বলে মন্তব্য করেছেন বিসিবির নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ।
বুধবার নাজমুল হাসান পাপনের পদত্যাগের পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসির) মনোনীত পরিচালক হয়ে বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক। এর কয়েক ঘণ্টা পর মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন তিনি। দীর্ঘ সংবাদ সম্মেলনে অনেক বিষয়ের মাঝে বিসিবির দুর্নীতি নিয়ে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় ফারুককে। তার মতে, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে অনিয়ম-দুর্নীতি হতে হতে বোর্ড ফ্রাঙ্কেইস্টাইন (পিশাচ) হয়ে গেছে।
দীর্ঘদিন ধরে চলা দুর্নীতি একদিনেই থামিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান ফারুক। তবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনই দুর্নীতি কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন বিসিবির নতুন সভাপতি। একই সঙ্গে দেশের দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে ফারুক বলেন, 'প্রতিটা সেক্টরে বাংলাদেশে যে দুর্নীতি হয়েছে, ক্রিকেট বোর্ড এটার বাইরে নয়। অবশ্যই এটাতে নজর দেব। আগামীতে যেন দুর্নীতি কমাতে পারি। আমি জানি না আমার মেয়াদ কতোদিন, তবে আমি যতোদিন থাকব, ততোদিন এই জিনিসগুলোকে নজরদারি করবো।'
২০১৬ সালে প্রধান নির্বাচকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন ফারুক, এর পর থেকে বোর্ডের কোনো কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন না তিনি। না থাকলেও বিসিবির অনিয়ম অজানা নয় তার, ফারুকের ভাষায়, 'অনেক অনিয়ম হয়েছে, আমিও জানি। একদিনে সম্ভব না ঠিক করা। ১২ বছর ধরে চলতে চলতে এটা এখন ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন হয়ে গেছে। এটা একদিনে সম্ভব না। তবে আমি নিশ্চিত করছি সরাসরি ক্রিকেটে প্রভাব ফেলে, এমন কিছু যেন না হয়, সেদিকে নজর থাকবে।'
অভিযোগ আছে, এমন কোনো পরিচালককে এখনই বোর্ড থেকে বাদ দিতে চান না ফারুক। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে চান তিনি। এ ছাড়া সরকার বদলের পর ১৩ জন পরিচালক বিসিবির কার্যক্রম থেকে দূরে থাকায় কাজ করার মানুষের স্বল্পতার কথাও উল্লেখ করেন ফারুক। তার ভাষ্য, 'কারও নাম ধরে বলার দরকার নেই। যারা এখানে আছেন, তাদের কাজটা কঠিন করার দরকার নেই। আমরা কিন্তু বর্তমান ক্রিকেট বোর্ডের গঠন বদলানোর অনুমোদন করতে পারব না।'
'২৫ জন ছিল, এখন ৮-৯ জন আছে। কাজ করার জন্য কিছু লোকবল দরকার। যে বাধ্যবাধকতা আছে গঠনতন্ত্রে, সেটা ঠিক করে কিছু পরিচালক সংযুক্ত করার চেষ্টা করব। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, সেই অভিযোগের সত্যতা কেমন, সেটাও দেখতে হবে। যারা আছে, তাদের দক্ষতা বুঝেই নেওয়া হবে। কে কোন বিভাগে আছে, সব মিলিয়ে ৯ জন কিন্তু। দুর্নীতি দমনে বিশেষজ্ঞর সহায়তা নিতে হবে। এটা কীভাবে এগোবো, দেখতে হবে।' যোগ করেন তিনি।