১৫ মাস পর মুমিনুলের সেঞ্চুরি
একটা সময়ে তাকে 'বাংলাদেশের ব্র্যাডম্যান' ডাকা শুরু হয়েছিল। ব্যাট হাতে দারুণ ধারাবাহিক হওয়ায় এতো বড় সম্মান মিলেছিল মুমিনুল হকের। টানা ১১ ইনিংসে ৫০ করে রেকর্ড বইরে নাম তোলা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান তখন বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ভরসার নামও ছিলেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবস্থা পাল্টেছে, তার ব্যাটে সেই ধারাবাহিকতা নেই।
টেস্ট অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করে তা ছেড়েও দিয়েছেন মুমিনুল। শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার ইচ্ছার কথা জানিয়ে ২০২২ সালের মে মাসে নেতৃত্ব ছাড়েন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ওই সময়টায় ব্যাট হাতে ভালো সময় যাচ্ছিল না তার, এর থেকেও উজ্জ্বলতম পারফরম্যান্স করতে পারেননি সাবেক এই টেস্ট অধিনায়ক।
অবশেষে টেস্টের সেই ক্ল্যাসিক মুমিনুলের দেখা মিললো। কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে অসাধারণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের অন্য কোনো ব্যাটসম্যানে যেখানে ৩১ রানের বেশি করতে পারেননি, মুমিনুল সেখানে চোখ ধাঁধানো ব্যাটিং করে চলেছেন।
কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে চলমান সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে নামেন মুমিনুল, যেটা তার পুরনো চেনা জায়গা। পুরনো জায়গা পেয়ে যেন পুরনো ছন্দও ফিরে আসে তার ব্যাটে। দৃষ্টিনন্দন সব শটে পৌঁছে যান তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে।
দারুণ ব্যাটিং করা মুমিনুল ১৭২ বলে ১৬টি চার ও একটি ছক্কায় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। এটা তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি, যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ। ৯৬ রানে থাকতে ভারতের স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে চার মেরে শতকে পৌঁছান বাংলাদেশের এই ব্যাটসম্যান। দেশের বাইরে এটা মুমিনুলের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
অবশ্য সেঞ্চুরি না করার হতাশাতেও পড়তে হতো পারতো তাকে। একেবারে কাছে গিয়ে মোহাম্মদ সিরাজের শিকারে পরিণত হয়ে যাচ্ছিলেন মুমিনুল। ৯৫ রানে ব্যাটিং করার সময় ভারতের পেসার মোহাম্মদ সিরাজের বল তার ব্যাট ছুঁয়ে স্লিপে চলে যায়, বাঁ পাশে ঝাপিয়ে পড়ে ক্যাচ নেওয়ার চেষ্টা করেন বিরাট কোহলি। বল হাত ছুঁলেও তা তালুবন্দী করতে পারেননি তিনি।
এ যাত্রায় বেঁচে পরে এক রান নেওয়া মুমিনুল সেঞ্চুরিতে পৌঁছে যান দারুণ এক সুইপ শটে চার মেরে। টেস্টে ১৫ মাস ও ১৩ ইনিংস পর সেঞ্চুরির দেখা পেলেন তিনি। সর্বশেষ ২০২৩ সালের জুনে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন টেস্টে ৬৫ টেস্টে ৪ হাজার ২৫৮ রানের (চলতি টেস্টসহ) মালিক মুমিনুল।
১৩ সেঞ্চুরি নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবার উপরে মুমিনুল। দ্বিতীয় স্থানে আছেন মুশফিকুর রহিম, তার সেঞ্চুরি ১১টি। ১০টি সেঞ্চুরি নিয়ে তিন নম্বরে তামিম ইকবাল। টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের মালিক মুশফিক, তার রান ৫ হাজার ৯২৪। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের এই তালিকায় চার নম্বরে আছেন মুমিনুল।