শান্তর পর জাকের-নাসুমে বাংলাদেশের লড়াকু সংগ্রহ
৪ ওভারে ২৮ রান, এর মাঝে একটি উইকেট হারালেও চাপে পড়তে হয়নি বাংলাদেশকে। দারুণ ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় উইকেটে জুটি গড়ে তোলেন সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত। এ দুজনের ব্যাটে বড় সংগ্রহের পথেই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। মাঝে সেই ধারায় থাকতে না পারায় সেভাবে রান ওঠেনি। তবে শেষ দিকে আবারও গতি ফেরান অভিষিক্ত জাকের আলী অনিক ও স্পিনার নাসুম আহমেদ। এ দুজনের ইনিংসেই শেষ পর্যন্ত লড়াকু সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ।
শনিবার দুবাইয়ের শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ২৫২ রান তুলেছে। বাংলাদেশের ইনিংসে সবচেয়ে বড় নাম শান্ত, দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক তুলে নেন ওয়ানডের নবম হাফ সেঞ্চুরি।
শেষ দিকে ঝড়ো ইনিংসে ওয়ানডে অভিষেক রাঙিয়েছেন জাকের। তাকে সঙ্গ দেওয়া নাসুম ব্যাটসম্যানের ভূমিকা পালন করেন। এর আগে সৌম্য তিরিশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেন, ছোট ইনিংস আসে তানজিদ হাসান তামিম ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাট থেকে। তাওহিদ হৃদয় বা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা দলের স্কোরকার্ড সমৃদ্ধ করায় কোনো প্রভাব রাখতে পারেননি।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ দাপুটে শুরুই পায়। সৌম্য ধীর-স্থির থাকলেও জাকির চড়াও হন। যদিও এভাবে বেশি সময় টিকতে পারেননি বাঁহাতি এই ওপেনার। দলের প্রথম ২৮ রানের মধ্যে ২২ রান করা জাকির আল্লাহ মোহাম্মদ জাগানফারের শিকারে পরিণত হন। ১৭ বলের ইনিংসে ৩টি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি।
দ্বিতীয় জুটিতে দলকে দারুণভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন সৌম্য ও শান্ত। দ্বিতীয় উইকেটে ৯৩ বলে ৭১ রানের জুটি গড়েন তারা। ৪৯ বলে ২টি করে ৪ ও ছক্কায় ৩৫ রান করা সৌম্যর বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। যদিও বেঁচে যেতে পারতেন বাঁহাতি এই ওপেনার, কিন্তু রিভিউ না নেওয়ায় সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।
আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খানের আবেদনে সাড়া দিয়ে সৌম্যকে এলবিডব্লিউতে আউট আম্পায়ার। শান্তর সঙ্গে সৌম্য আলোচনা করেন, তবে অধিনায়ক রিভিউ নেওয়ায় আগ্রহ দেখাননি। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বলের বেশিরভাগ অংশ লাইনের বাইরে পিচ করেছে। রিভিউ নিলেই বাঁচতে পারতের সৌম্য।
সৌম্যর বিদায়ে পর তৃতীয় উইকেটে মিরাজের সঙ্গে ৮৩ বলে ৫৩ রানের জুটি গড়েন শান্ত। ২২ রান করে মিরাজ ফিরলে উইকেট যান হৃদয়। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান টিকতে পারেননি বেশি সময়, ১৬ বলে ১১ রান করে থামেন তিনি। অন্য প্রান্তে ভাঙনের সুর বাজতে থাকলেও শান্ত নিজেকে বাঁচিয়ে রাখেন, নেতার মতোই খেলে যেতে থাকেন।
অবশ্য এরপর তিনিও ফেরেন, দলীয় ১৮৩ রানে মাথায় নাঙ্গেলিয়া খারোতের শিকারে পরিণত হন। এর আগে ১১৯ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ইনিংস সেরা ৭৬ রান করেন শান্ত। এর রান পরই খারোতের তৃতীয় শিকার মাহমুদউল্লাহ, ৯ বলে ৩ রান করেন তিনি। ১০ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে হঠাৎ-ই চাপে পড়া বাংলাদেশকে ঠিক পথে রাখেন জাকের ও নাসুম। সপ্তম উইকেটে ৪১ বলে ৪৬ রানের জুটি গড়েন তারা।
নাসুম ২৪ বলে একটি চার ও ২টি ছক্কায় ২৫ রান করেন। ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামা জাকের শেষ বল পর্যন্ত লড়াই চালান, শেষ বলে মারেন ছক্কা। ডানহাতি উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান ২৭ বলে একটি চার ও ৩টি ছক্কায় ইনিংসের দ্বিতীয় সেরা ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন। আফগানিস্তানের খারোতে নেন ৩টি উইকেট। এ ছাড়া গাজানফার ও রশিদ পান ২টি করে উইকেট।