তিন হাফ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের লড়াকু সংগ্রহ
শারীরিক ভাষা ঠিক থাকলেও শুরুটা ভালো ছিল না। ৪০ পেরোতেই হারাতে হয় ২ উইকেট। এখান থেকে হাল ধরে জুটি গড়ে তোলেন তানজিদ হাসান তামিম ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। দলকে অনেকটা পথ এগিয়ে দেওয়া এ দুজনই পান হাফ সেঞ্চুরির দেখা। মাঝে আফিফ হোসেন ধ্রুবর কিছুটা লড়াইয়ের পর শেষ দিকে দলকে পথ দেখান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও জাকের আলী অনিক। এ দুজনের ব্যাটে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের বড় সংগ্রহ পেল বাংলাদেশ।
রোববার সিন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে আগে ব্যাটিং করে ৬ উইকেটে ২৯৪ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে আগে ব্যাটিং করে এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ, সব মিলিয়ে চতুর্থ সর্বোচ্চ। আগে ব্যাটিং করে দলটির বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৩০১ রান। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া ৩২২ রান।
টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মিরাজ। ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো উইকেট জানিয়ে ২৮০ রান তোলার আশার কথা জানান তিনি। এ পথে নিজে অবদান রেখেছেন মিরাজ, দায়িত্ব নিয়েছেন আরও কজন। শেষ পর্যন্ত সংগ্রহটা প্রত্যাশা ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে বাংলাদেশ। এবার বল হাতে ছন্দ খুঁজে নেওয়ার পালা।
ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে গ্লোবাল সুপার লিগের সেরা খেলোয়াড় হওয়া সৌম্য সরকার আজও ভালো শুরু করেছিলেন। কিন্তু ইনিংসটি দীর্ঘ করতে পারেননি বাঁহাতি এই ওপেনার। আগের বলেই চার মানা সৌম্য খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন, এর আগে ১৮ বলে ৩টি চারে ১৯ রান করেন তিনি। ৩৪ রানে প্রথম উইকেট হারানো বাংলাদেশের বিপদ বাড়ে একটু পরই, লিটন কুমার দাসও খোঁচা দিয়ে আউট হন। ৭ বলে ২ রান করেন তিনি।
দ্রুত ২টি উইকেট হারালেও তানজিদের সাবলীল ব্যাটিংয়ের কারণে বাংলাদেশকে খুব একটা চাপ বুঝতে হয়নি। এরপর তার সঙ্গে যোগ দিয়ে জুটি গড়ে তোলেন মিরাজ। ৩১ রানের মধ্যে দুবার জীবন পান মিরাজ। দুবারই তার তোলা ক্যাচ ফেলে দেন কেসি কার্টি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে উইকেটে থিতু হয়ে যান মিরাজ, তবে রান তোলার গতি বাড়িয়ে নিতে পারেননি। তৃতীয় উইকেটে ৯৭ বলে ৭৯ রানের জুটি গড়েন তানজিদ-মিরাজ।
তানজিদের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া বাঁহাতি তরুণ এই ওপেনার ৬০ বলে ৬টি চার ও ৩টি চক্কায় ৬০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন। পরের জুটিতে ৬২ বলে ৫৪ রান যোগ করেন মিরাজ-আফিফ। এই জুটি ভাঙার আগে ২৯ বলে ৪টি চারে ২৮ রান করেন প্রায় এক বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামা আফিফ।
এরপর মিরাজও টিকতে পারেননি। বাংলাদেশ অধিনায়ক ১০১ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ৭৪ রান করে জেডেন সিলসের শিকারে পরিণত হন, এটা তার পঞ্চম ওয়ানডে হাফ সেঞ্চুরি। মিরাজের রানই বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বোচ্চ। এরপর বাকিটা পথ মাহমুদউল্লাহ ও জাকেরে ব্যাটে এগোয় বাংলাদেশ। ষষ্ঠ উইকেটে ৭৪ বলে ৯৬ রান যোগ করেন তারা, বাংলাদেশের ইনিংসে এটাই সর্বোচ্চ রানের জুটি।
শেষ ওভারের পঞ্চম বলে আউট হওয়ার আগে ৪০ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৪৮ রান করেন জাকের। শেষ পর্যন্ত ব্যাট চালানো মাহমুদউল্লাহ ৪৪ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় করেন ৫০ রান। ১৫ বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটা তার ৩০তম হাফ সেঞ্চুরি। ক্যারিবীয় পেসার রোমারিও শেফার্ড ৩টি উইকেট নেন। আলজারি জোসেফ ২টি ও জেডেন সিলস একটি উইকেট পান।