বিপিএল ফাইনাল: জাল টিকেটে সয়লাব, ঢুকতে পারছেন না অনেকে
![](https://tbsnews.net/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/07/tciket_1.jpg)
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ফরচুন বরিশাল ও চিটাগং কিংস। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। কিন্তু বিকাল ৩টার আগে থেকেই স্টেডিয়ামের হাজির দুই দলের সমর্থকরা। অপেক্ষা গেট খোলার, কিন্তু এই অপেক্ষা ফুরানোর পর অনেকেই বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে গেছেন। টিকেট কেটেও অনেকে স্টেডিয়ামে ঢুকতে পারছেন না। গেট থেকে জানানো হয়েছে তাদের টিকেট জাল।
ম্যাচ শুরুর ২ ঘণ্টা আগে, অর্থাৎ, বিকাল ৪টার দিকে স্টেডিয়ামের গেট খোলা হয়। সাড়ে ৪টার দিকে মিরপুর স্টেডিয়ামের চার ও পাঁচ নম্বর গেটে বেশ কিছু দর্শককে দেখা যায়, যারা টিকেট কেটেও ঢুকতে পারছেন না। জাল হওয়ায় তাদের টিকেট স্ক্যান হচ্ছিল না। এমন দর্শকের সংখ্যাটা কম নয়, ১০০ জনের বেশি দর্শক জাল টিকেটের খপ্পরে পড়েছেন। এদের সবাই কালোবাজারিদের কাছ থেকে টিকেট কিনেছেন। যাদের কাছ থেকে টিকেট কিনেছেন এসব দর্শক, সেই কালোবাজারিদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ দর্শকদের। তাদের দাবি, আসল টিকেটের সঙ্গে জাল টিকেটের খুব একটা পার্থক্য নেই।
মোহাম্মদ সোহেল নামের এক বরিশাল ভক্ত ১০টি টিকেট কিনেছেন, এর মধ্যে সাতটি টিকেট ঠিক আছে, বাকি তিনটি জাল। ঢাকার রামপুরাতে বসবাসকারী সোহেল বলেন, 'আমি কালোবাজারির কাছ থেকে ১০টি টিকেট কিনেছিলাম। স্টেডিয়ামে ঢোকার সময় আমাদের সাতজন ঢুকতে পেরেছে, মানে ওই সাতটি টিকেট ঠিক আছে। গেটের দায়িত্বে থাকা মানুষরা জানালো, বাকি তিনটি টিকেট জাল। কতো বড় একটা ধরা খেলাম। বিষয়টি আমরা সেনাবাহীকে জানিয়েছি। কিন্তু এই ব্যাপারে তাদের কিছু করার নেই বলে জানান তারা।'
পরে এক নম্বর গেটেও দেখা মেলে জাল টিকেট কিনে বিপাকে পড়া আরও কয়েকজনের। মাঠে ঢুকতে না পেরে একজন টিকেট ছিড়ছিলেন। চিটাগং কিংসের এই সমর্থককে টিকেট ছেড়ার কারণ জানতেই চাইলে তিনি বলেন, 'ভাই, টিকেট কিনেছিলাম। কিন্তু ঢুকতে গেলে গেট থেকে বলা হলো আমার টিকেট জাল। আমি মোট তিনটিা টিকেট কিনেছি, তিনটিই জাল।' কালোবাজারিদের কাছ কেন টিকেট কিনেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'ভাই টিকেট তো ছিল না, আগের দিনই শেষ। উপায় না দেখে কিনেছিলাম।'
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সংশ্লিষ্টরা। বিসিবির টিকেটিং কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম টিটো দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, নিজেদের ভুলেই বিপদে পড়েছেন দর্শকরা। তিনি বলেন, 'বিষয়টা সম্পর্কে শুনেছি, এটা দর্শকদেরই ভুল। কালোবাজারিদের কাছ থেকে টিকেট কেনা ঠিক নয়। কিনলেও ভালোভাবে দেখে নেওয়া উচিত। কারণ আসল টিকেটের সঙ্গে নকল টিকেটের অনেক পার্থক্য। এসট টিকে ফটোকপি করা, হাতে নিলেই বোঝা যায়। বিসিবির কোনো দায় নেই এখানে। এ ছাড়া বিসিবি কোনো টিকেটও বিক্রি করেনি। ব্যাংক ও অনলাইনে টিকেট ছাড়া হয়, যা খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়।'
আগেও এমন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আগেও এমন ঘটনা দেখেছি আমরা। সিলেটেও জাল টিকেট নিয়ে মাঠে ঢোকার চেষ্টা করেছে অনেকে। সন্দেহজনক মনে হলে পুলিশের সহায়তায় তাদেরকে আমরা আটক করি। কথা বলে মূল হোতাকে পাওয়ার পর নির্দোষদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ফাইনালেও এমন শুনলাম। কিন্তু বিসিবি যেহেতু নিজ দায়িত্বে টিকেট বিক্রি করেনি, এখানে বিসিবির কিছু করার নেই। দর্শকদেরই আরও সচেতন থাকা উচিত ছিল।'