ভালো মানের পেসারের প্রশ্নে সুজন বললেন, ‘আল্লাহ যেদিন দেয়’
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে পেসার নিয়ে তেমন আফসোস নেই। মাশরাফি বিন মুর্তজার পর মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেনরা অনেক দিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পেস বিভাগে নতুন যোগ হয়েছে শরিফুল ইসলাম। কিন্তু টেস্টে পেসারদের নিয়ে হতাশার শেষ নেই বাংলাদেশের। কবে ভালো মানের পেসার আসবে, এমন প্রশ্নে জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বললেন, 'আল্লাহ যেদিন দেয়।'
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান বিসিবি পরিচালকের মন্তব্যেই পরিষ্কার পেসারদের পারফরম্যান্সে কতোটা হতাশ তিনি। অবস্থা এমন যে, পেসারদের নিয়ে স্বপ্ন দেখাই বাদ দিয়ে দিতে চান তিনি। পেসারদের অবিরত ব্যর্থতার কারণে খালেদ মাহমুদের মতো করে আরও অনেকেই হতাশা ঝারেন, স্বপ্ন দেখেন শুধু স্পিন আক্রমণ নিয়ে।
ভরসা না মেলায় ঘরের মাঠে পেসার ছাড়াই টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের। আবার অনেক ম্যাচে একাদশে পেসার নিয়েও তাকে দিয়ে বোলিং করানো হয়েছে মাত্র কয়েক ওভার। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ইনিংসে মাত্র ৪ ওভার বোলিং করানো হয় মুস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে।
পেসারদের নিয়ে সেই হতাশা চলমান। একাদশে থেকেও দলের হয়ে বিশেষ কিছু করতে পারেন না পেসাররা। তাসকিন আহমেদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বাদ দিলে বলার মতো কিছুই নেই। পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দুই ইনিংসে দুই উইকেট নেন দুজন পেসার মিলে। দুটি উইকেটই এবাদত হোসেনের শিকার। বাজে পারফরম্যান্সে মিরপুর টেস্ট থেকে বাদ পড়েন আবু জায়েদ রাহি।
মিরপুর টেস্টেও একই দশা। এবাদত ও খালেদ আহমেদ মিলে নিয়েছেন দুই উইকেট। রাহি, এবাদত ও খালেদ; এই তিন পেসারের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট হওয়ার উপায় নেই। তুলনামূলক ভালো পারফরম্যান্স রাহির, ডানহাতি এই পেসার ১৩ টেস্টে নিয়েছেন ৩০ উইকেট। ৯ টেস্টে এবাদতের শিকার ১০ উইকেট। তিন বছরে তিন টেস্ট খেলা খালেদ এবারই প্রথম উইকেটের স্বাদ পেয়েছেন।
পেসারদের এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সে সুজন এবার মেজাজই হারিয়ে ফেললেন। মিরপুর টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলার পর চরম সমালোচনা করেন তিনি। ভালো পেসার কবে পাবে বাংলাদেশ? জবাবেসুজন বলেন, 'এটা যেদিন আল্লাহ দেয়। এ ছাড়া আর কী বলব।'
কোচরা অনুশীলন করাবেন, শেখাবেন; কিন্তু আসল কাজটা পেসারদেরই করতে হবে জানিয়ে সুজন বলেন, 'প্রচুর অনুশীলন করে, ৬ ফিট লম্বা, ১৪০ গতিতে বল করে, কিন্তু কোচ তো কাউকে গুলিয়ে খাইয়ে দিতে পারবে না। এটা সাধারণ জ্ঞানের বিষয়। কোচরা অনুশীলন করায়, কিন্তু খেতে তো হবে আপনার। চিবাতে তো হবে আপনাকে। আপনি যদি চিবাতে না পারেন...।'
মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাপশ বৈশ্যদের উদাহরণ টেনে জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর আরও বলেন, 'মাশরাফি কীভাবে উইকেট পেয়েছে? তাপস বৈশ্য কীভাবে উইকেট পেত? তখন তো আমরা আরও পারতাম না, আরও জানতাম না। এখন তো আমাদের বোলিং কোচ আলাদা, এই কোচ, ওই কোচ আলাদা। এটা বোলিং কোচের কাছে প্রশ্ন করলে ভালো হতো। বোলারদের ভুলটা হলো সাধারণ জ্ঞান।'
'এই উইকেটে কীভাবে বল করতে হবে, উইকেটে বল ধরছিলো কিন্তু এরপরও আমরা পিছে পিছে বল করেছি। এটা তো বোলিং কোচ উত্তর দেবে। বোলিং কোচের পরিকল্পনা যদি প্রয়োগ করতে না পারে, তাহলে কোচকে জিজ্ঞেস করবে। ওদের শক্তির জায়গা কোনটা, দুর্বল জায়গা কোনটা, তারা জানবে। আমি একটা ম্যাচের কথা বলি, জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও ম্যাথু হেইডেন ব্যাট করছিলেন, অস্ট্রেলিয়াতে। আমি তখন অধিনায়ক। ডেভ হোয়াটমোর পরিকল্পনা দেন আমরা যেন ওদের শক্তির জায়গায় বল না করি। আমরা বাইরে বাইরে বল করে গেছি। আমার কথা হলো আমি জোরে বল করি, কিন্তু স্কিল একটা ভিন্ন জিনিস।' যোগ করেন সুজন।