জোকোভিচের অনুপস্থিতি কেমন প্রভাব ফেলবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে?
বৃহস্পতিবার মেলবোর্নে পৌঁছানোর পর বাতিল করা হয়েছে নোভাক জোকোভিচের ভিসা। ফলে ধাক্কা খেয়েছে তার দশম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের আশা।
চলুন দেখা যাক, আগামী ১৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্লামে যদি জোকোভিচ অংশ নিতে না পারেন, তবে টুর্নামেন্টটির উপর কেমন প্রভাব পড়তে পারে।
আসবে না দশম শিরোপা
যদি অংশ নেন, তাহলে এ বছর বিশ্বের এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড় জোকোভিচের মেলবোর্নে দশম এবং সব মিলিয়ে রেকর্ড ২১তম গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা তাড়া করার কথা।
এই ৩৪ বছর বয়সী সার্ব অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ২০০৮, ২০১১, ২০১২, ২০১৩, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালে।
কিন্তু ২০২২ সালে মুকুটে আরেকটি পালক যোগ করার সম্ভাবনায় চিড় ধরেছে মেলবোর্ন বিমানবন্দরের রাতভর নাটকীয়তায়, যার মাধ্যমে তার ভিসা বাতিল করে তাকে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।
জোকোভিচ বুধবার রাতে মেলবোর্নে অবতরণ করেন। এর আগে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন যে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ টিকা গ্রহণ ছাড়াই তিনি টুর্নামেন্টে খেলার জন্য বিশেষ অব্যহতি পেয়েছেন।
টিকার ওই অব্যহতিটি কেবল দুটি মেডিক্যাল প্যানেলের ক্লিয়ারেন্সের পরই পাওয়া যায়। কিন্তু জোকোভিচ এ অব্যহতি লাভের পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন অস্ট্রেলিয়ানরা, যাদেরকে গত দুই বছর ধরে কোভিড-১৯ লকডাউন ও কড়া বিধিনিষেধ সহ্য করতে হয়েছে।
সুযোগ কড়া নাড়ছে নাদালের দরজায়?
জোকোভিচ যদি না থাকেন, তাহলে ক্রীড়া অনুরাগীরা বরং রাফায়েল নাদালের ২১তম গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের স্বপ্নে বুঁদ হতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ায় ২০০৯ সালে একবারই কেবল শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে পেরেছেন নাদাল।
৩৫ বছর বয়সী স্প্যানিয়ার্ড নাদালের গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপার সংখ্যাও বর্তমানে জোকোভিচ ও রজার ফেদেরারের সমান ২০।
আসন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নিতে নাদাল ইতোমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ায় পা রেখেছেন। তবে এর আগে গত বছরের শেষ দিকে তিনি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার আগে পায়ের ইনজুরির কারণে তিনি উইম্বলডন ও ইউএস ওপেনেও খেলতে পারেননি।
ছয়বারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ী ফেদেরার অবশ্য এবারের আসরে অংশ নিচ্ছেন না। তিনি বর্তমানে হাঁটুর ইনজুরিতে ভুগছেন।
শিরোপায় নাম উঠবে নতুন কারো?
২০০৫ সালে মারাত সাফিনের সাফল্যের পর থেকেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের পুরুষ এককে আধিপত্য চলছে 'বিগ থ্রি' জোকোভিচ, নাদাল ও ফেদেরারের।
২০১৪ সালেই কেবল একবার শেষ হাসি হেসেছিলেন স্ট্যান ওয়ারিঙ্কা। সেবার ফাইনালে নাদালকে হারিয়েছিলেন তিনি। তবে ওয়ারিঙ্কাও ইনজুরির কারণে এ বছরের আসরে খেলতে পারছেন না।
ফলে মঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে নতুন কারো শিরোপা জয়েরও। এক্ষেত্রে সবার আগেই উচ্চারিত হবে রাশিয়ান সাফিনের স্বদেশী দানিল মেদভেদেভের নাম। ২০২১ সালের ইউএস ওপেন ফাইনাল জয়ের মাধ্যমে তিনি ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিলেন জোকোভিচের ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের স্বপ্ন।
গত বছর জোকোভিচের কাছেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে হেরেছিলেন মেদভেদেভ, তা-ও আবার সরাসরি সেটে। কিন্তু এ বছর বেশ আত্মবিশ্বাসী মনেই অস্ট্রেলিয়ায় হাজির হয়েছেন তিনি। কেননা গত ডিসেম্বরেই তিনি রাশিয়াকে তৃতীয় ডেভিস কাপ জিতিয়েছেন।
তবে মেদভেদেভ যদি পা হড়কান, সেক্ষেত্রে জার্মানির আলেকজান্ডার জাভেরেভ কিংবা গ্রিসের স্টেফানোস সিটসিপাসের সামনেও থাকবে প্রথম স্ল্যাম শিরোপা জয়ের সুযোগ।