প্লে-অফে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, হেরেই চলেছে সিলেট
সামনে বড় লক্ষ্য, কিন্তু শুরুটা হলো বিদঘুটে। দুই ব্যাটিং অস্ত্র ফিরে গেলেন শুরুতেই। তবু চাপ বুঝতে হলো না কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। মাহমুদুল হাসান জয় ও মঈন আলী মিলে অনেকটা পথ এগিয়ে দিলেন। আর শেষ দিকে নেমে ঝড় তুলে জয়ের কাজটি সেরে নিলেন সুনীল নারিন।
বুধবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সিলেট সানরাইজার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই জয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত হয়ে গেল বিপিএলের দুইবারের চ্যাম্পিয়নদের। ৮ ম্যাচে ৫ জয়ে ১১ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুই নম্বরে আছে তারা। ৯ ম্যাচে একটিতে জয় পাওয়া সিলেট তালিকার তলানিতে, আগের ম্যাচে হারেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে তাদের। ঘরের মাঠে তিনটি ম্যাচ খেলে সবগুলোই হেরেছে তারা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে সিলেট সানরাইজার্স। দুই ওপেনার কলিন ইনগ্রাম ও এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটে ৫ উইকেটে ১৬৯ রান তোলে ঘরের মাঠের দলটি। জবাবে মাহমুদুল হাসান জয়, মঈন আলী ও সুনীল নারিনের ব্যাটে এক বল বাকি থাকতে জয় নিশ্চিত হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের।
বড় লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে এলোমেলো শুরু হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। প্রথম ওভারেই চোখ জুড়ানো এক ছক্কা মেরে দারুণ কিছুর আভাস দিলেও টিকতে পারেননি লিটন কুমার দাস। ৪ বলে ৭ রান করে দলীয় ১১ রানে ফিরে যান তিনি। টিকতে পারেননি ফাফ ডু প্লেসিও। দক্ষিণ আফ্রিকার অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান ২ রান করে নাজমুল ইসলাম অপুর শিকারে পরিণত হন।
২২ রানে ২ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলী। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৮২ রান যোগ করেন তারা। মঈনের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ফেরার আগে ৩৫ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৬ রান করেন ইংল্যান্ডের এই ক্রিকেটার।
জয়ের সঙ্গে যোগ দিয়ে দারুণ ব্যাটিং শুরু করেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। যদিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ৮ বলে ২ ছক্কায় ১৬ রান করেন ইমরুল। কিছুক্ষণ পর থামেন জয়। এর আগে ৫০ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তরুণ এই ব্যাটসম্যান।
এরপর আরিফুল হক দ্রুত বিদায় নিলে আবু হায়দার রনিকে নিয়ে জয় তুলে নেওয়ার কাজটি সারেন সুনীল নারিন। নারিন ১২ বলে ২৪ ও রনি ৬ রানে অপরাজিত থাকেন। সিলেটের নাজমুল ইসলাম অপু ও আলাউদ্দিন বাবু ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান একেএস স্বাধীন ও রবি বোপারা।
এর আগে ব্যাটিং করতে নামা সিলেটকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার কলিন ইনগ্রাম ও এনামুল হক বিজয়। উদ্বোধনী জুটিতে ১০৫ রান যোগ করেন তারা। এ সময় বিজয় রয়েসয়ে খেললেও তাণ্ডব চালান ইনগ্রাম। আগের ম্যাচে ৯০ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান এদিনও ব্যাট হাতে শাসন করেছেন।
১০০ পেরিয়ে থামেন বিজয়। এর আগে ৩৩ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৬ রান করেন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান। এরপর লেন্ডল সিমন্সকে নিয়ে কিছুটা পথ পাড়ি দেন ইনগ্রাম। আগের জুটির মতো এখানেও রান তোলার কাজটি করেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই ব্যাটসম্যানই। সিমন্স ১৬ রান করে ফেরার পর দ্রুত আউট হন অধিনায়ক রবি বোপারা।
আগের দুই ম্যাচে ঝড়ো ইনিংস খেলা আলাউদ্দিন বাবু এদিন ১০ রান করে ফেরেন। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে গিয়ে আউট হন ইনগ্রাম। ৬৩ বলে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮৯ রানের আলো ঝলমলে ইনিংস খেলেন তিনি। চলতি বিপিএলে এটা ইনগ্রামের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি। ৮ মাচে ৪৪.১৪ গড়ে ৩০৯ রান করেছেন প্রোটিয়া এই ব্যাটসম্যান, যা এখন পর্যন্ত আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। কুমিল্লার হয়ে মুস্তাফিজ সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান সুনীল নারিন ও তানভীর ইসলাম।