জ্যাকস ঝড়ে প্লে-অফে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স
একজন যোদ্ধার একার বিপিএল; এমন শিরোনামের সঙ্গে কার নাম সবচেয়ে বেশি যায়? বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নজর রাখা ক্রিকেটমোদীদের জন্য উত্তরটা সহজ। তারা চোখ বুজেই বলে দেবেন উইল জ্যাকসের নাম। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে দলকে পথ দেখিয়ে এসেছেন। প্লে-অফে ওঠার বাঁচা মরার লড়াইয়েও জ্বলে উঠলো তার ব্যাট। দানবীয় এক ইনিংসে চট্টগ্রামকে অসাধারণ জয় এনে দিলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে সিলেট সানরাইজার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এই জয়ে ফরচুন বরিশাল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পর তৃতীয় দল হিসেবে প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত হলো চট্টগ্রামের। ১০ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তিন নম্বরে তারা। অন্যদিকে হারে শুরু করা সিলেট হার দিয়েই বিপিএল মিশন শেষ করলো। ১০ ম্যাচে মাত্র একটিতে জয় পাওয়া সিলেটের বিদায় আরও আগেই নিশ্চিত হয়।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে সিলেট সানরাইজার্স। কলিন ইনগ্রাম, এনামুল হক বিজয়, লেন্ডল সিমন্স, রবি বোপারা, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতদের মাঝারি ইনিংসে ৬ উইকেটে ১৮৫ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে সিলেট। জবাবে চ্যাডউইক ওয়ালটন ও শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে সঙ্গে নিয়ে ৫ বল আগে চট্টগ্রামের জয় নিশ্চিত করেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলা উইল জ্যাকস।
বিপিএলে ব্যাট হাতে রীতিমতো উড়ছেন সিলেটের বিপক্ষে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা জ্যাকস। চট্টগ্রামের বেশিরভাগ জয়েই তার অবদান। দলটির হয়ে রাউন্ড রবিন লিগের ১০ ম্যাচেই খেলেছেন ইংলিশ এই ওপেনার। একটি ম্যাচে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেওয়া ছাড়া প্রায় প্রতি ম্যাচেই রান করেছেন জ্যাকস। ১০ ম্যাচে চারটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৪৪.২২ গড় ও ১৫৪.২৬ স্ট্রাইক রেটে ৩৯৮ রান করেছেন তিনি, যা এখন পর্যন্ত আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। জ্যাকসের স্ট্রাইক রেট সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সেরা ১০ জনের মধ্যে সেরা।
বড় লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি চট্টগ্রাম। দলীয় ২৩ রানেই ফিরে যান দারুণ শুরু করা জাকির হাসান। ৯ বলে বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ১৭ রান করেন তিনি। অধিনায়ক আফিপ হোসেন ধ্রুব ফেরেন ৭ রান করেই। এরপর ওয়ালটনকে নিয়ে চট্টগ্রামকে ১০০ পেরিয়ে দেন জ্যাকস। এ সময় চেলতে থাকে তার ব্যাটিং ঝড়। ১১.৪ ওভারেই ১০৮ রান পেয়ে যায় দলটি।
দুর্ভাগ্যবশত রান আউটে কাটা পড়েন ২৩ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৫ রান করা ওয়ালটন। বেনি হাওয়েল এদিন রান করতে পারেননি, ৮ রান করেই থামেন তিনি। শেষ করতে পারেননি শামীমও। ৭ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় ২১ রান করে আউট হন তিনি। শুরু থেকে এক পাশ সামলে ব্যাটিং তাণ্ডব চালানো ম্যাচসেরা জ্যাকসই শেষ কাজটা করেন। ৫৭ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় ৯২ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংস খেলেও অপরাজিত থাকেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে এটাই তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। সিলেটের সোহাগ গাজী ও আলাউদ্দিন বাবু ২টি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিং করা সিলেটের হয়ে কেউই বড় রান করতে পারেননি, তবে কয়েকজন ব্যাটসম্যান রান করায় বড় সংগ্রহ পায় তারা। কলিন ইনগ্রাম ২৪, এনামুল হক বিজয় ৩২, লেন্ডল সিমন্স ৪২, অধিনায়ক রবি বোপারা ৪৪ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৩৫ রান করেন। চট্টগ্রামের বাঁহাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ৩টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান শরিফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ।