অনুশীলনের মাঝে ডমিঙ্গো বলে উঠলেন, ‘কিল দ্য মিডিয়া’
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে আড়াই বছর হয়ে গেছে। ক্রিকেটের পাশাপাশি বাংলাদেশের মিডিয়া, এখানকার সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা হয়েছে রাসেল ডমিঙ্গোর। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দলে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, সেটাও হয়তো জানা দক্ষিণ আফ্রিকার এই কোচের। এ কারণেই কি না অনুশীলনের মাঝে ডমিঙ্গো বলে উঠলেন, 'কিল দ্য মিডিয়া।'
এটা হয়তো 'সিরিয়াস' কোনো মন্তব্য নয় এটি। অথবা খুব 'সিরিয়াস'। নিজেকে নিয়ে হওয়া চর্চার জবাবেই তার এমন মন্তব্য! সিরিজ চলাকালীন সময়ে কথা বলায় বিধি-নিষেধ থাকায় আপাতত এটা তার কাছ থেকে জানা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডের আগেরদিন দলের অনুশীলনে খোশ মেজাজে থাকা ডমিঙ্গোর এমন মন্তব্য আলোচনার খোরাক দিচ্ছে।
প্রথম দুই ম্যাচ দিয়েই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। ২৮ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে তামিম ইকবালের দল। আগের দিন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঐচ্ছিক অনুশীলনে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার অনুশীলন সারেন। কয়েকজনের সঙ্গে আলাদাভাবে কাজ করেন ডমিঙ্গো। এই কাজের ফাঁকেই দলের সাইড আর্ম থ্রোয়ার নাসিরকে উদ্দেশ্য করে ডমিঙ্গো বলে ওঠেন, 'কিল দ্য মিডিয়া'।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলন চলছিল, দক্ষিণ পাশের দুটি নেটে ব্যাটিং করছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও নাঈম শেখ। নেটের একটু পেছনেই মাঝারি উচ্চতার লোহার বেষ্টনী। বেষ্টনী থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে মাহমুদউল্লাহ-নাঈমের ব্যাটিং দেখছিলেন কয়েকজন সংবাদকর্মী। নাঈমকে নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করছিলেন ডমিঙ্গো। থ্রোয়ার হিসেবে ছিলেন নাসিরও। নাঈমের প্রতিটা শটের পর ভুল ধরিয়ে দেওয়া অথবা প্রশংসা করছিলেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ।
একটা পর্যায়ে থ্রোয়ারে করা নাসিরের একটি ডেলভারি মাঝ উইকেটে পড়ে লাফিয়ে ওঠে, ব্যাটে-বলে করতে পারেননি নাঈম। বল নেটের পর বেষ্টনীর ফাঁকা দিয়ে বাইরে চলে আসে। বলটি এসে এক সংবাদকর্মীর পায়ে লাগে। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয় ডমিঙ্গোর, সঙ্গে সঙ্গে নাসিরের উদ্দেশ্যে তিনি বলে ওঠেন, 'কিল দ্য মিডিয়া।'
ডমিঙ্গোর এমন মন্তব্য কান এড়ায়নি সংবাদকর্মীদের। একজন বলে ওঠেন, 'ডোন্ট কিল আস!' প্রশ্নও ছোঁড়া হয় ডমিঙ্গোর উদ্দেশ্যে, 'সংবাদকর্মীদের কেন মারতে চান? কী সমস্যা সংবাদকর্মীদের সঙ্গে?' উত্তরে অবশ্য ডমিঙ্গো কিছু বলেননি, অট্টহাসি হেসেই যেন বোঝাতে চাইলেন ওটা মজা ছিল।
তবে সংবাদমাধ্যমের ওপর তিনি যে নাখোশ, সেটা বোঝা গেছে দুদিন আগেই। তিনি বলেছিলেন, 'মানুষ আর মিডিয়া যা বলছে, আমার কাছে তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আপনাদের কাজ আপনারা করবেন, আমাকে নিয়ে যা চান লিখবেন, ক্রিকেটারদের নিয়ে যা চান লিখবেন। আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো সেসব আলোচনা থেকে ছেলেদের দূর রাখা। আমি এসব আলোচনায় প্রভাবিত হয়ে পড়লে আশা করতে পারি না যে আমার ছেলেরাও প্রভাবিত হবে না। আপনাদের যা ইচ্ছা লিখতে পারেন। অভদ্র (রুড) হতে চাই না, কিন্তু সত্যি বলতে বেশি ভাগ সময় আমি বুঝতেই পারি না আপনারা কী লিখছেন।'