ব্যাটসম্যান এবাদতকে হেরাথের ১২ বলের চ্যালেঞ্জ
আলতো টোকায় বল একটু ঠেলে দিয়েই এবাদত হোসেনের দৌড়, এক হাতে ব্যাট উঁচিয়ে জয়ের উল্লাস। স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ থামিয়ে বললেন, 'ফিরে যাও, রান হয়নি, সব ফিল্ডার ভেতরে।' ব্যাটিং প্রান্তে ফিরলেন এবাদত, লক্ষ্য এবার এক বলে এক। হেরাথের বল স্কয়ার দিয়ে পাঠিয়ে এবাদতের চিৎকার, 'হয়ে গেছে কোচ।' এভাবেই চললো গুরু-শিষ্যের লড়াই।
বাংলাদেশের ডানহাতি এই পেসার ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন, একেক শটে একেক রানের কথা বলছিলেন। হেরাথের একটা ডেলিভারিতে স্ট্রেইট ড্রাইভ করে এবাদত বলে উঠলেন, 'আই ক্যান ম্যানেজ ইউর বল কোচ।' খেলোয়াড়ী জীবনে বহু ব্যাটসম্যানের পরীক্ষা নেওয়া হেরাথ যেন এটাকে চ্যালেঞ্চ হিসেবে নিয়ে নিলেন। এগিয়ে গিয়ে বললেন, 'নাউ ইউ হ্যাভ আ চ্যালেঞ্জ।'
এবাদত ব্যাটসম্যান নন, সেটাও মাথায় রাখলেন হেরাথ। বাংলাদেশ পেসারকে ১২ বলে ১০ রান তোলার কথা জানালেন, বুঝিয়ে দিলেন ফিল্ডারদের পজিশন। তার সঙ্গে একজন স্থানীয় নেট বোলার, দুজন মিলে বোলিং করতে শুরু করলেন। প্রথম দুই বলে এক রান করে, পরের বলে গ্রাউন্ড শট খেলতে পারলেন না এবাদত। হেসে উঠলেন হেরাথ, এবাদতকে থামিয়ে বলে বললেন, 'স্ট্রেইট টু আ ফিল্ডার।' ক্যাচ হলেও শিষ্যকে ছাড় দিয়ে আবার ব্যাটিংয়ে পাঠালেন। পরের বলে লং অন দিয়ে উড়িয়ে মেরে এবাদতের হুঙ্কার 'ইটস আ সিক্সার।' চার বলে আট রান তোলা এবাদত শেষ বলে গিয়ে পেরোলেন ১০ রানের সীমানা।
রোববার ব্যাটিং চ্যালেঞ্জে জেতা এবাদত এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামের ড্রেসিং রুম প্রান্তের নেটে নিজের আসল কাজ বোলিং প্রস্তুতি সারেন। আধা ঘণ্টার মতো বোলিং করেন টেস্ট দলের নিয়মিত এই সদস্য। টেস্ট বোলিং দিয়ে ওয়ানডে দলে জায়গা করে নেওয়া ডানহাতি এই পেসার এরপর কিছুটা সময় বিশ্রাম নেন।
বিশ্রাম সেরে ব্যাট-প্যাড নিয়ে দৌড়ে চলে যান নেটে। শুরুতে লেগ স্পিনার রিশান হোসেনকে পান তিনি। রংপুরের তরুণ এই লেগ স্পিনারের প্রথম ডেলিভারিটা একটু লাফিয়ে ওঠে, ডিফেন্স করে এবাদত বলে ওঠেন, 'কী রে, বাউন্সার করে দিলি?' সায় দিয়ে আবার বোলিং প্রান্তে চলে যান রিশাদ। এর কিছুক্ষণ পর বোলিংয়ে যোগ দেন হেরাথ ও স্থানীয় নেট বোলার। তাদের বিপক্ষে অনেকটা সময় ব্যাটিং চালান এবাদত।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে স্কোয়াডে থাকলেও প্রথম দুই ম্যাচের একাদশে সুযোগ হয়নি এই ফরম্যাটে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা এবাদতের। দলের সঙ্গে থেকে বোলিং অনুশীলনের পাশাপাশি নিজের ব্যাটিং উন্নতির চেষ্টাও করে যাচ্ছেন তিনি। আগের দিন ব্যাটিং পরামর্শক জেমি সিডন্সের সঙ্গে লম্বা সময় কাটান তিনি। শেষের দিকে কীভাবে ব্যাটিং করতে হবে, তা নিয়ে এবাদতকে অনেক বিষয়ে বুঝিয়ে দেন সিডন্স।