সাকিবের এক বছরের পরিকল্পনা জানতে চায় বিসিবি
'এমন তো না যে আমি আর ক্রিকেটই খেলব না। অবশ্যই খেলব, কেন খেলব না! আমার ইচ্ছা সবার পরে টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার। আগে টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডে থেকে অবসর নেব, সবার শেষে টেস্ট থেকে।' ২০১৭ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে ছয় মাসের ছুটি চাওয়ার পর কথাগুলো বলেছিলেন সাকিব আল হাসান। সাকিব বুঝিয়েছিলেন, টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি তার নিবেদন সবচেয়ে বেশি।
২০২১ সালে এসে সেই সাকিবই টেস্ট ক্রিকেটকে পাশ কাটিয়ে যান। কলকতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএল খেলতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকে ছুটি নেন তিনি। দলের দুঃসময়ে সাকিবের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ছুটি নেওয়ায় রীতিমতো হতভম্ব হয়ে যান বিসিবি সভাপতি। নাজমুল হাসান পাপন দাবি করেন, টেস্টের প্রতি তেমন আগ্রহ নেই সাকিবের।
বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, 'সাকিব তো আরও তিন বছর আগেই খেলতে চায়নি টেস্ট। ও তো এমনিতেই টেস্টের প্রতি অতো আগ্রহ দেখায়নি, চাচ্ছিল না খেলতে। তখন ওকে টেস্ট অধিনায়ক করে দেওয়া হলো।' সাকিবের টেস্ট খেলতে না চাওয়ার খবর নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশের সর্বশেষ ৯ টেস্টের ৬টিতেই খেলেননি তিনি। এবারের আইপিএলে খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট খেলবেন না বলে জানান সাকিব, নেন ছুটিও। কিন্তু আইপিএলে দল পাওয়ায় তার খেলা নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা। এমন অবস্থায় বিসিবির পরিকল্পনা সাকিবের কাছে তার এক বছরের পরিকল্পনা জানতে চাওয়া।
সোমবার চট্টগ্রামের জুহর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এমনই জানিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস। তিনি বলেন, 'আপনারা নিউজ করেছেন যে টেস্ট ম্যাচ সে খেলতে চাচ্ছে না। আবার আমরা জানি টেস্ট ম্যাচ সে খেলতে চায়। সে কতগুলো টেস্ট ম্যাচ খেলবে, পরিকল্পনা কী, সেটা আমরা জানতে চাচ্ছি। সেটা পরিষ্কার করুক আমাদের কাছে, ওয়ানডে সিরিজের পর আমরা জানতে পারব। শুধু দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ নয়। সব মিলিয়ে আমরা তার কাছে এক বছরের পরিকল্পনা চাইব।'
আইপিএলের নিলামের আগে টেস্ট থেকে ৬ মাসের ছুটি চেয়ে আবেদন করেছিলেন সাকিব। তবে সেটা আগের ব্যাপার জানিয়ে জালাল ইউনুস বলেন, 'সাকিব একটা চিঠি দিয়েছিল যে, ৬ মাসের জন্য খেলবে না। টেস্ট থেকে অব্যাহতি চেয়েছে। কিন্তু সেটা আইপিএল নিলামের আগে।'
'এরপরে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হয়েছিল, সে শ্রীলঙ্কা সিরিজে খেলবে, দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে টেস্ট খেলার কথা ছিল না। তো এটা ছিল অবস্থা। এরপরে এখন আইপিএলে যেহেতু যাচ্ছে না, তো অবস্থা পরিবর্তন হয়েছে, সে বলেছে কাল বা এই সিরিজের পরই এখানকার প্রেসিডেন্ট স্যারের সঙ্গে বসবে, কথা বলবে। তো আমাদের ওই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।' যোগ করেন জালাল ইউনুস।
এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ২০২১ সালে ঘরের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে প্রত্যাবর্তন হয় সাকিবের। ওয়ানডে সিরিজ খেললেও ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট ইনজুরির কারণে খেলা হয়নি তার। এপ্রিলে আইপিএলের কারণে শ্রীলঙ্কা সফরে দুই ম্যাচের টেস্ট খেলতে যাননি সাকিব। জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট খেললেও পাকিস্তানের বিপক্ষে নভেম্বরে প্রথম টেস্ট খেলেননি বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। এরপর পারিবারিক কারণে নিউজিল্যান্ড সফরে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজও খেলেননি তিনি।