মারা গেছেন ক্রিকেটার মোশাররফ রুবেল
জীবন যুদ্ধে হার মানতে হলো মোশাররফ হোসেন রুবেলকে। দীর্ঘদিন ব্রেইন ক্যান্সারে ভুগে শেষ পর্যন্ত না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন বাংলাদেশের এই ক্রিকেটার। মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মাত্র ৪০ বছর বয়সেই ক্যান্সারের কাছে হার মানতে হলো তাকে।
রুবেলের মৃত্যুর খবরটি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেছেন ক্রিকেটারদের স্বার্থ সংরক্ষণের সংস্থা ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল। তার এক সময়ের সতীর্থ, জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ শরিফও খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
দীর্ঘধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন রুবেল। তার শারীরিক অবস্থার অবনতিই হয়ে যাচ্ছিল। এতোটাই খারাপ অবস্থা হয়েছিল যে, তার পরিবারের সবাই তাকে নিয়ে রীতিমতো শঙ্কায় দিন পার করছিলেন। তার মৃত্যুর খবর নিয়ে গুজবও ছড়িয়েছে।
ফেসবুকে কয়েক পত্তনে রুবেলের মৃত্যুর খবর এসেছে। যদিও পরে জানা গেছে মিথ্যা খবর। বিষয়টি নিশ্চিত করতে পোস্ট দিতে বাধ্য হতে হয়েছে রুবেলের স্ত্রী চৈতী ফারহানা রূপাকে। তবে এবার আর গুজব নয়, সত্যি সত্যি অনন্ত অসীমে পাড়ি জমালেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই পরিচিত মুখ।
২০১৯ সালের মার্চে ব্রেইন টিউমার ধরা পড়ে রুবেলের। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ নিউরো সার্জন এলভিন হংয়ের তত্ত্বাবধানে সফল অস্ত্রোপচার হয় তার। ২০২০ সালে সুস্থ, স্বাভাবিক হয়ে মাঠে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। কিন্তু নভেম্বরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২০২১ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে এমআরআই করার পর দেখা গেছে, পুরোনো টিউমারটি আবার নতুন করে বাড়ছে।
এরপর আবার শুরু হয় কেমোথেরাপি। সব মিলিয়ে ২৪টি কেমোথেরাপি নিতে হয় রুবেলকে। গত ১১ অক্টোবর ইউনাইটেড হাসপাতালেই সর্বশেষ কেমোথেরাপি নেন তিনি। এরপর অবস্থার অবনতি হলে গত ১৪ মার্চ আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। প্রায় এক মাস ধরে সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সম্প্রতি বাসায় নেওয়া হয় তাকে। বাসাতে রুবেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জাতীয় দলের হয়ে ৫টি ওয়ানডে খেলা রুবেল সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০১৯ সালে। বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফর্মার ছিলেন রুবেল। ১১২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তার শিকার ৩৯২ উইকেট। ২টি সেঞ্চুরি ও ১৬টি হাফ সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ৩ হাজার ৩০৫। ১০৪টি লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে তার উইকেট ১২০টি, ৮ হাফ সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ১ হাজার ৭৯২।