টেস্ট দলে ফিরলেন মুস্তাফিজ, দুই ফরম্যাটে ডাক পেলেন বিজয়
টেস্ট খেলতে মুস্তাফিজুর রহমানকে এক প্রকার জোরই করা হচ্ছিল বিসিবির পক্ষ থেকে। ফরম্যাট বাছাই করে খেলার সুযোগটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অন্তত তার সামনে ছিল না। বাঁহাতি এই পেসারও তাই যুক্তি-তর্কে যাননি, জানিয়ে দিয়েছেন টেস্ট খেলবেন। তাকে নিয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের টেস্ট দল ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া বাকি দুই ফরম্যাটে তো তিনি আছেনই।
দীর্ঘদিন পরে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন এনামুল হক বিজয়। সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রান বন্যা বইয়ে কয়েকটি রেকর্ড নিজের করে নেওয়া ডানহাতি এই ওপেনারকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে রাখা হয়েছে। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেছেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে আছেন তিনি। কোনো ফরম্যাটেই জায়গা হয়নি নাঈম শেখের।
সব সময়ই সাকিবের টেস্ট খেলা নিয়ে আলোচনা থাকে। গত কয়েক বছরে টেস্ট থেকে নিজেকে অনেকটাই দূরে রেখেছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজে অবশ্য টেস্ট খেলে ওয়ানডে সিরিজ থেকে বিশ্রাম নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার, মৌখিকভাবে জানিয়েও রেখেছেন বিসিবিকে। কিন্তু ক্যারিবীয় সফরের জন্য রোববার ঘোষণা করা করা তিন দলেই বাঁহাতি অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারকে রাখা হয়েছে।
মুস্তাফিজ টেস্টে অনিয়মিত। ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে মাত্র চারটি টেস্ট খেলেছেন তিনি। টেস্টের প্রতি অনাগ্রহের কথাও জানিয়েছেন তিনি। যে কারণে টেস্টের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেননি বাঁহাতি এই পেসার। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে পেস আক্রমণের অন্যতম দুই শক্তি তাসকিন আহমেদ ও শরিফুর ইসলামকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। তাই মুস্তাফিজকে সাদা পোশাকে ফেরানো হচ্ছে। তাসকিন ও শরিফুলকে টেস্ট দলে রাখা হয়নি। ওয়ানডে দলে আছেন দুজই। তবে টি-টোয়েন্টিতে শরিফুল থাকলেও নেই তাসকিন।
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে শাসন করেছেন বিজয়। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ১৫ ম্যাচে ৩টি সেঞ্চুরি ও ৯টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৮১.২৮ গড়ে ১ হাজার ১৩৮ রান করেছেন বিজয়। তাতে রীতিমতো ইতিহাস গড়া হয়ে গেছে তার। দারুণ এই পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি হিসেবে দলে ফেরানো হলো তাকে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের জুলাইয়ে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে খেলেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে বিজয় সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০১৫ সালে।
হজ করতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে ছুটি নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। চোটের কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে না পারা মেহেদী হাসান মিরাজ টেস্ট এবং ওয়ানডে দলে আছেন। গত বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে মারকুটে ব্যাটিং করা মুনিম শাহরিয়ারকে নেওয়া হয়েছে টি-টোয়েন্টি দলে। মুস্তাফিজ, সাকিব, লিটনদের মতো তিন ফরম্যাটেই আছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
আগামী ৫ জুন ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেবে বাংলাদেশ। এই সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুটি টেস্ট, তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে তারা। সফরের সূচি চূড়ান্ত না হলেও টেস্ট দিয়ে সিরিজ শুরু হওয়ার কথা। অ্যান্টিগায় স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট শুরু হবে ১৬ জুন। ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ২৪ জুন। টেস্টের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে। ম্যাচগুলো ২, ৩ ও ৭ জুলাই তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে দুই দল । ১০, ১৩ ও ১৬ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে তিন ওয়ানডে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশের তিন দল-
টেস্ট দল: মুমিনুল হক (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, লিটন কুমার দাস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, ইয়াসির আলী রাব্বি, তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ, রেজাউর রহমান রাজা, শহীদুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান ও নুরুল হাসান সোহান।
ওয়ানডে দল: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, ইয়াসির আলী রাব্বি, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, এবাদত হোসেন, নাসুম আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও এনামুল হক বিজয়।
টি-টোয়েন্টি দল: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), মুনিম শাহরিয়ার, লিটন কুমার দাস, এনামুল হক বিজয়, সাকিব আল হাসান, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নুরুল হাসান সোহান, ইয়াসির আলী রাব্বি, শেখ মেহেদী হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, শরীফুল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।