আজ থেকে শুরু রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন
মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আজ প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ।
ঘুমধুম ট্রানজিট পয়েন্ট প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি জোরদার করা হয়েছে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকায় থাকা ২৩৫ রোহিঙ্গা পরিবারের সাক্ষাৎকার শেষ হয়েছে। কক্সবাজারের টেকনাফের শালবাগান রোহিঙ্গা শিবিরে মঙ্গল ও বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।
ইউএনএইচসিআর এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধিরা ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নেন।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম গতকাল জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) প্রত্যাবাসনের জন্য সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যাবাসনের তালিকায় নাম থাকা ২৩৫ রোহিঙ্গা পরিবারের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ পুরোপুরি প্রস্তুত।’
আবুল কালাম আরও বলেন, ‘ঘুমধুম ট্রানজিট পয়েন্ট প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি ৫টি বাস ও ২টি ট্রাক সকাল থেকে টেকনাফের শালবন ক্যাম্পে থাকবে। এই প্রক্রিয়াকে নিরাপদ করতে ক্যাম্প ও সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।’
গত দুই দিনে ৮টি বুথ করে পর্যায়ক্রমে ৩ হাজার ৫৪০ জন রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। তবে সাক্ষাৎকার দেয়া রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফিরে যাবেন কি না বা তারা কি বলেছেন এসব বিষয়ে খোলামেলা কিছুই বলেননি শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।
এদিকে টেকনাফের শালবন ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত আবুল কাশেম বলেন, ‘মিয়ানমারের নাগরিকত্ব, নিজের বসতবাড়ি ফেরতসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেই কেবল আমরা মিয়ানমারে ফিরে যাব। অন্যথায় যাব না।’
একই ক্যাম্পে বসবাসরত আমির হোসেন নামে আরেকজন বলেন, ‘আমাদের ছয় দফা দাবি না মানলে আমরা ফেরত যাব না।’
আজ ২২ আগস্ট প্রত্যাবাসনের জন্য ৩ হাজার ৫৪০ জন রোহিঙ্গাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। এজন্য কাজ করছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) কার্যালয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাদের বেশির ভাগই মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর বর্বর অভিযান থেকে জীবন বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।