বছরে ১১ হাজার কোটি টাকার ফসল নষ্ট হচ্ছে উৎপাদনের পর
মাঠ থেকে ফসল সংগ্রহ থেকে বাজারজাত করণের মধ্যে প্রতি বছর ১১ হাজার কোটি টাকার খাদ্যশষ্য নষ্ট হচ্ছে।
এর মধ্যে শুধু ধান নষ্ট হচ্ছে ২৮ লাখ মেট্রিক টনের বেশি, যার বাজার মূল্য প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। কৃষকের কষ্ট কওে ফলানো আরও যে সব ফসল বেশি নষ্ট হয় তার মধ্যে রয়েছে গম, ভুট্টা, পাট, আলু, মসুর ডাল, সরিষা, হলুদ ও মরিচ।
গতকাল (৬ জুলাই) প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এগ্রিক্যালচার অ্যান্ড রুর্যাল স্ট্যাটিটিক্স ২০১৮ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে ফসল নষ্ট হওয়ার কারন ব্যাখ্যা করা হয়নি। তবে কৃষিবিদরা বলছেন, জমি চাষ ও সেচে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লেও ফসল মাড়াইয়ে যন্ত্রপাতির ব্যবহার না থাকায় প্রতি বছর মাড়াইয়ের সময় ও মাড়াই পরবর্তী সংরক্ষণ, বাজারজাতে অব্যবস্থাপনায় নষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমাণের ধান।
বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক কৃষিবিদ এম হামিদুর রহমান বলেন, ক্ষুধা ও দারিদ্রে জর্জরিত বাংলাদেশে এক সময়ে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল।
সরকারের সাবেক এ কর্মকর্তা আরও বলেন, অপচয় কমিয়ে আনা, গুনগত মান নিশ্চিত করার মতো বিষয়ে এতদিন নজর দেয়া হয়নি। খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ শূণ্যের কাছাকাছি চলে আসায় অন্যান্য বিষয়ে নজর দেয়া হচ্ছে। উৎপাদন পরবর্তী ফসলের ক্ষতি শূণ্যে নামিয়ে আনা গেলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড. তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ধানের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। তবে ধান চাষে পাওয়ার টিলার ব্যবহার ছাড়া অন্য কোন প্রযুক্তির প্রচলন দেখা যাচ্ছে না। সরকারের সব প্রণোদনাও কলের লাঙ্গল ঘিরেই।
তিনি আরও বলেন, ফসল সংরক্ষণে অবকাঠামোর পাশাপাশি কৃষকদের দক্ষতার অভাব রয়েছে। ফসলের অপচয় কমানোর পাশাপাশি নায্য দাম নিশ্চিত করতে এ সব বিষয়ে বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে সংরক্ষণ অবকাঠামো সৃষ্টি করতে হবে বলেও তিনি মনে করেন।