রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট তৈরির ‘মূল হোতা’ সৌদিপ্রবাসী বায়েজিদ
রোহিঙ্গাদের অবৈধ পাসপোর্ট তৈরির মূল হোতা সৌদিপ্রবাসী বায়েজিদ। এই প্রক্রিয়ায় সৌদি দূতাবাস, সিটি করপোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদ ও জন্মনিবন্ধনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারাও জড়িত।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)।
জানা গেছে, অবৈধ জন্মসনদ দিয়েই পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। দীর্ঘদিন ধরে পাওয়া এই তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করছিল র্যাব। এ প্রেক্ষিতে গত বুধবার নারায়ণগঞ্জের জালকুড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ৪টি দোকানে অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ২৫ হাজারের বেশি পূরণ করা জন্মসনদের ফর্ম, কাউন্সিলর সিল, সরকারি দপ্তরের সিল, ল্যাপটপ, মোবাইলসহ অবৈধ লেনদেনের ২ লাখ ৩০ হাজার নগদ টাকা জব্দ করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন, নারায়ণগঞ্জের ফজলুল করিম (৩৩), সাইফুল ইসলাম (২৪) ও আজিম হোসেন (২৬), নেত্রকোনার একটি ইউপির উদ্যোক্তা সদস্য মামুন মিয়া (৩৫), ঢাকার একটি সিটি করপোরেশনের মাঈন উদ্দিন (৩৮) ও জাহাঙ্গীর (৩৬)।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, সংঘবদ্ধ একটি চক্র অবৈধভাবে জন্মসনদ তৈরি করে আসছে, যার মূল হোতা সৌদিপ্রবাসী বায়েজিদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশের সদস্যদের কাছে তথ্য পাঠাতেন তিনি। বাংলাদেশ থেকে কাগজ তৈরি করে তারা পাঠাত বায়েজিদের কাছে। তারপর তৈরি হতো অবৈধ পাসপোর্ট।
সৌদি আরবের দূতাবাস কর্মকর্তার সহায়তায় একটি বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে এই কাজটি করা হয়। এতে জন্মনিবন্ধন অধিদপ্তরের বেশ কিছু কর্মকর্তাও জড়িত রয়েছেন।
অভিযুক্তরা বলেন, “আমাদের একজন বস আছেন যার নাম মোস্তফা কামাল। তিনি জেদ্দা দূতাবাসে কাজ করেন।”
র্যাব জানায়, বিশেষভাবে পারদর্শী এ চক্রকে চিহ্নিত করা বেশ কঠিন। সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা, সিটি করপোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদ ও জন্ম নিবন্ধন কর্মকর্তারাও এ কাজে জড়িত।
র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার মহিউদ্দিন ফারুকী জানালেন, এখানে সৌদি থেকে হাইকমিশনের সঙ্গে যে দালালচক্রের পরিচয় আছে তারাই এই পথ দেখিয়ে দেয়।
শুধু রোহিঙ্গারা নয়, ফেরারি আসামি যারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে তারাও পাসপোর্ট করে পালিয়ে যাচ্ছে।