কচ্ছপের জন্য বিশেষ ‘রেললাইন’
কচ্ছপ যখন হাঁটে, দেখতে খুব সুন্দর লাগে ঠিকই, কিন্তু এমন ধীরে হাঁটা ওদের জন্য বিপদও ডেকে আনে অনেক সময়। বিশেষ করে ওরা যখন রেললাইন পার হতে চায়। ট্রেন তো আর কচ্ছপের ধীরগতির জন্য থেমে থাকবে না! ফলে ট্রেনে কাটা পড়ে ‘অকালেই’ প্রাণ হারাতে হয় ১০ থেকে ১৫০ বছর আয়ুর এই প্রাণীকে।
এ রকম পরিস্থিতিতে ওদের সুরক্ষা দিতে দারুণ এক ব্যবস্থা করেছেন জাপানের হুয়োগো অঞ্চলের রেল ও স্থানীয় এক অ্যাকুরিয়াম কর্তৃপক্ষ। খবর অডিটিসেন্ট্রালের।
২০০২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত কচ্ছপের কারণে অফিসিয়ালি ১৩ বার ট্রেন পরিচালনায় বিঘ্ন ঘটেছিল ওই রেল লাইনে। আন-অফিসিয়ালি কতবার যে এই বিড়ম্বনা ঘটেছে, তার হিসেব নেই। তাছাড়া এভাবে কচ্ছপের একের পর এক প্রাণহানিও মন খারাপ করিয়েছে কর্তৃপক্ষের।
এজন্য ২০১৫ সালে দেশটির সমুদ্রতীরবর্তী শহর কোবে-তে ওয়েস্ট জাপান রেলওয়ে কোং. ও সুমা আকুয়ালাইফ পার্ক যৌথভাবে এর সমাধান খোঁজার চেষ্টা করে। বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর পর তারা রেললাইনের মাঝখানে ‘ইউ’-আকৃতির পরিখা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়।
পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, পার হতে গিয়ে কচ্ছপগুলো অনেক সময়ই রেললাইনের দুই ট্র্যাকের মাঝখানে পড়ে যায়। তখন সেই পথ ধরেই এগিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না ওদের। পার হওয়া হয় না রেললাইন। এভাবে হাঁটতে হাঁটতে শেষ পর্যন্ত জংশনগুলোতে আটকে যায় ওরা; ওদের জন্য যার পরিণতি- অনিবার্য মৃত্যু।
রেলওয়ের এক মুখোপাত্র জানিয়েছেন, হেঁটে বেড়ানোটা কচ্ছপের সহজাত অভ্যাস। অনেক সময় রেললাইনের অপর পাশের পুকুরে ওরা আসা-যাওয়া করে। কিন্তু ট্র্যাকের পয়েন্ট ব্লেড যখন মুভ করানো হয়, তখন দুর্ভাগ্যজনকভাবে আটকা পড়ে মারা যায় ওরা। আবার, ওদের আটকা পড়া কারও নজরে পড়লে, উদ্ধার করতে গিয়ে ট্রেন চলাচলে ঘটে ব্যাপক বিঘ্ন।
কচ্ছপগুলোর চলাচল নিরাপদ করতে তাই কংক্রিটে তৈরি ‘ইউ’-আকৃতির পরিখাগুলো কোবে শহরের আশপাশের রেললাইনের বেশ কিছু ক্রিটিক্যাল পয়েন্টে বসানো হয়েছে। এভাবে প্রথম মাসেই অন্তত ১০টি কচ্ছপের প্রাণ বাঁচানোর দাবি করেছেন এই প্রকল্পের প্রবর্তকেরা।