বুর্গেনস্টক রিসোর্ট: মহামারিকালে যে বিলাসবহুল সুইস আল্পস রিসোর্টে থেকেছিলেন আম্বানিরা
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ৭৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের মালিক, ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানি তার স্ত্রী, তিন সন্তান ও সন্তান ও সন্তানদের জীবনসঙ্গীদের নিয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বুর্গেনস্টক রিসোর্টে উঠেছিলেন। তারা রিসোর্টের র্য়্যাল ও প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইট মিলিয়ে সেখানে থেকেছেন।
সুইজারল্যান্ডের আল্পস পর্বতমালা অঞ্চলে অবস্থিত এক বিলাসবহুল রিসোর্টের নাম বুর্গেনস্টক রিসোর্ট। তবে বুর্গেনস্টককে শুধু বিলাসবহুল বললে বোধহয় কম হয়ে যায়। এই রিসোর্ট ঠিক কতখানি দামি এবং বিলাসবহুল কিংবা সেখানে এক রাত কাটালে আপনি কি কি সুযোগ-সুবিধা পাবেন তা বুঝতে হলে আপনাকে এর ভেতরের একাধিক ছবি দেখতেই হবে। আরো সহজ করে বুঝিয়ে দেওয়া যাক ব্যাপারটা, মহামারিকালে ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানি সপরিবারে এসে উঠেছিলেন এই রিসোর্টে।
বুর্গেনস্টক রিসোর্টের মুখপাত্র জোনাস রাইফ ইনসাইডার নামক সংবাদ মাধ্যমকে যে তথ্য জানিয়েছেন, তা শুনলে হয়তো ভিরমি খাবেন আপনিও। কারণ রাইফের ভাষ্যে, রিসোর্টের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইটে এক রাত থাকার জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া গুনতে হবে ২৮,০০০ ডলার এবং রয়্যাল স্যুইটের সর্বনিম্ন ভাড়া শুরু ৪৬ হাজার ডলার থেকে। অর্থাৎ, আম্বানিরা বুর্গেনস্টক রিসোর্টে থাকার জন্য দৈনিক অন্তত ৭৪,০০০ ডলার ব্যয় করেছেন!
এ ব্যাপারে আম্বানির কোম্পানি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিস কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তাছাড়া, রাইফও জানান যে, রিসোর্ট তাদের অতিথিদের তথ্য কখনোই বাইরের কাউকে জানায় না; তবে বিশ্বখ্যাত বিত্তশালী, ব্যবসায়ীদের অনেকেই এখানে এসে মিটিং করতে পছন্দ করেন।
এ অঞ্চলে প্রথম রিসোর্ট বানানো হয় ১৮৭৩ সালে, যা সোফিয়া লরেন ও অড্রে হেপবার্নের মতো তারকাদের মনোযোগ আকৃষ্ট করেছিল। বুর্গেনস্টক রিসোর্টে গত ৯ বছর ধরে চলেছে রিনোভেশনের কাজ এবং সময়ের সাথে সাথে এটি আরও চমৎকার, বিলাসবহুল রিসোর্টে পরিণত হয়েছে।
পাঠকের নিশ্চয়ই এতক্ষণে কৌতূহল জেগেছে যে, কি আছে এই রিসোর্টে? তাহলে চলুন একটু উঁকি দেওয়া যাক বুর্গেনস্টক রিসোর্টের ভেতর-বাইরে:
অতিথিরা যদি কিছুক্ষণ রোমান্টিক সময় কাটাতে চান, তাহলে একটা শাটল নৌকায় করে লুসার্ন হ্রদে ঘুরে আসতে পারবেন এবং এরপর বুর্গেনস্টকের নিজস্ব ফার্নিকুলারে করে রিসোর্টে চলে আসতে পারবেন।
আর সবচেয়ে দামি স্যুইটের জন্য এক রাতের ভাড়া লাখো ডলার।
রাইফ জানান, বর্তমানে ফরচুন গ্লোবাল এর ৫০০ কোম্পানির কাছে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সভার জন্য এই জায়গাটি বেশ জনপ্রিয়। প্রায়ই ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ ব্যক্তিগত কারণে বা পরিবার পরিজন নিয়েও এখানে আসেন।
রিসোর্টের বাথরুমের মধ্যে রয়েছে একটি জাকুজ্জি, একটি রেইন শাওয়ার, একটি স্টিম বাথ এবং এর সাথে সংযুক্ত ম্যাসাজ রুম।
এর মধ্যে থাকছে একাধিক সুইমিং পুল, স্টিম রুম, সওনা এবং রিলাক্সেশন এরিয়া।
রিসোর্টের দ্বিতীয় হোটেল, ঐতিহাসিক চার-তারকা হোটেল 'প্যালেস হোটেল অ্যান্ড কনফারেন্সেস' তৈরি হয় ১৯০৩ সালে। এখানে আছে ১৩৭ টি কক্ষ এবং স্যুইটের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০০৬ ডলার।
রিসোর্টের 'ওয়ালডহোটেল হেলথ অ্যান্ড মেডিকেল এক্সিলেন্স' এ আছে ২৩ টি রিহ্যাবিলিটেশন রুম।
বুর্গেনস্টক রিসোর্টে প্যালেস হোটেলে আপনি পাবেন রিটজকফার নামক একটি ফ্রেঞ্চ রেস্টুরেন্ট।
এছাড়াও মূল স্পাইস কিচেন অ্যান্ড টেরাসে পাওয়া যাবে চীন, জাপান ও ভারতীয় খাবারের স্বাদ।
বুর্গেনস্টকে রয়েছে তিনটি বার ও একটি সিগার লাউঞ্জ।
এখানে একটি সিগারেটের দাম পড়বে ১৪-৩৩ ডলার এবং সাধারণ ককটেল ২৬ ডলার।
ছবি- ১০
- সূত্র- ইনসাইডার