৪১ হাজার মানুষের জন্য নেই একটিও আশ্রয় কেন্দ্র
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার মেঘনার বুকের আটটি পৃথক চর নিয়ে গঠিত 'দ্বীপ চর আবদুল্লাহ' ইউনিয়নের প্রায় ৪১ হাজার অধিবাসীদের জন্য কোনো আশ্রয় কেন্দ্র নেই। এমনকি এ চরগুলোতে কোনো ধরনের সরকারি কেল্লা, উচুঁ সড়ক বা কোনো বাঁধও নেই। ফলে ঘূর্ণিঝড়সহ যে কোনো দূযোর্গে দুর্বিষহ জীবন পার করে এ সব চরের অধিবাসীরা।
সোমবার চরের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য চরের চেয়ারম্যান বাজারে রয়েছে একটি পুলিশ ক্যাম্প। দূর্যোগের সময় পুলিশ সদস্যরাও শঙ্কিত থাকে।
রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার থেকে মেঘনা পাড়ি দিয়ে ট্রলার কিংবা নৌকায় চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নের চরগুলো যেতে কমপক্ষে এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগে।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র একটি ওর্য়াড রয়েছে মূল ভুখণ্ডের সঙ্গে। বাকি আটটি ওর্য়াড রয়েছে মেঘনা নদীর মাঝখানে। দ্বীপচর গুলো হলো, মধ্য চর আবদুল্লাহ, নতুন চর আবদুল্লাহ, চর গজারিয়া, চর সেভাজ, তেলির চর, সোনার চর, মৌলভীর চর এবং চর মুজাম।
চরের বাসিন্দা এবং ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটির স্থানীয় টিম লিডাম মাস্টার আলাউদ্দিন জানান, চরগুলোতে প্রায় ৪০ হাজারের বেশি মানুষ বসবাস করে। চরের বেশিরভাগ বসতিই কুঁেড় ঘর। কিন্তু এত মানুষ বসবাস করলেও এখানে কোনো ধরনের শক্ত অবকাঠামো নেই। তাই যে কোনো দূর্যোগে ''আল্লাহকে ডাকাই'' তাদের একমাত্র কাজ।
চরের রাখাল নুর নবী জানান, ব্যক্তিগত উদ্যোগে সেখানে কয়েকটি মাটির কেল্লা রয়েছে। তবে সেগুলোতে শুধুমাত্র মহিষ আশ্রয় নিতে পারে।
তবে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মঞ্জুর জানান, বর্তমানে অনেক অধিবাসী অন্যত্র স্থানান্তর হয়ে এখনো ১৫-২০ হাজার মানুষ রয়েছে। যাদেও বেশির ভাগই জেলে, কৃষক এবং রাখাল। সব সময় তাদের ঝড় জলোচ্ছ্বাসের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত থাকতে হয়। তবুও এরা একমাত্র আল্লাহ ওপর ভরসা করেই বেঁচে থাকে।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মোমিন জানান, আসন্ন ঘূর্ণিঝড় আম্পান থেকে রক্ষার জন্য চরের অধিবাসীদের নিরাপদে নিয়ে আসতে আটটি ট্রলার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নদী ভাঙার কারণে চরে আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা যাচ্ছে না। তবে চরে মাটির কেল্লা স্থাপনের ব্যাপারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
২০১১ সালের আদমশুমারিতথ্য এবং স্থানীয় অধিবাসীরা চরের লোক সংখ্যা প্রায় ৪১ হাজার বললেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন সংখ্যাটি হবে ১০ হাজারের মতো।