তাপদাহে সুস্থ থাকতে বিজ্ঞান কী বলে?
তাপদাহের ফলে সৃষ্ট অত্যধিক তাপমাত্রা মানুষের সুস্বাস্থ্য, জমির ফসল ও জীববৈচিত্র্যে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করছে। শুধুমাত্র ২০১৯ সালেই তীব্র তাপদাহের কারণে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩৫৬,০০০ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে, ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ সালে মধ্যে তাপদাহের কারণে মৃত্যুবরণ করেছিল ১৬৬,০০০ জন। খবর বিবিসির।
যদিও তাপদাহের ফলে মৃত্যুবরণ করা মানুষের সঠিক সংখ্যা নিয়ে অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে বিশ্বজুড়ে তাপদাহের ফলে ভুক্তভোগী মানুষের সংখ্যা যে বাড়ছে, তাতে সন্দেহ নেই। একইসাথে ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সুদূর ভবিষ্যতে তাপদাহের প্রবণতা আরও বাড়বে বলেই অনুমান করা হচ্ছে।
তাপদাহে ঠাণ্ডা থাকার উপায়
গরমে সার্বিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে দেহ ঠাণ্ডা রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে বেশ কিছু বিজ্ঞানসম্মত কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমন, সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত সূর্যের সরাসরি তাপ থেকে দূরে ছায়াযুক্ত স্থানে থাকা উচিত। কেননা এটি দিনের সবচেয়ে গরম সময়।
একইসাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় পান করতে হবে। এই তালিকায় গরম কিংবা ঠাণ্ডা; দুই ধরণের পানীয়ই থাকতে পারে। তবে আবহাওয়া আদ্র হলে গরম পানীয় পান না করাই শ্রেয়। এছাড়াও অ্যালকোহল মিশ্রিত পানীয় এড়িয়ে চলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।
দেহ ঠাণ্ডা রাখতে খাবারের ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন আনা যেতে যেতে পারে। স্ট্রবেরি, শসা, লেটুস এবং তরমুজ ইত্যাদি পানি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এতে দেহের পানির চাহিদা পূরণ হবে। এছাড়াও ঝালজাতীয় খাবার খেলে তা ঘামের তৈরি করে, যা দেহ ঠাণ্ডা রাখতে কার্যকরী।
পোশাকের ক্ষেত্রেও অল্প কিছু পরিবর্তন আনা যেতে পারে। ঢিলে-ঢোলা পোশাক পরলে ত্বকে সহজেই বাতাস প্রবেশ করতে পারে, যা গরমে ঠাণ্ডা থাকতে সহায়ক। একইসাথে ঘর ঠাণ্ডা রাখতে জানালা খুলে রাখার ক্ষেত্রেও বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে।
যদি বাইরের তাপমাত্রা ঘরের তাপমাত্রা থেকে বেশি হয়, তবে জানালা খুলে না রাখাই শ্রেয়। কেননা এতে ঘরের তাপমাত্রা না কমে উল্টো বেড়ে যেতে পারে। একইসাথে সূর্যের আলো সরাসরি জানালায় আসলে তা পর্দা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
ঘর ঠাণ্ডা রাখার আরেকটি সহজ উপায় হচ্ছে পানি বাষ্পীভূত হওয়ার সময় বাতাস ব্যবহার করে তাপমাত্রা পরিবর্তন করা। প্রাচীনকালে জানালার সামনে মাটির পানির পাত্র বা ভেজা চাদর রাখত, যা বাতাসকে ঠাণ্ডা করতে সাহায্য করত। ঠিক একইভাবে পাত্রে বরফ রেখে কিংবা ভেজা চাদরের উপর ফ্যানের বাতাস দেওয়া হলে, সেটি ঘর ঠাণ্ডা করতে কার্যকরী।
অন্যদিকে ঘর ঠাণ্ডা রাখতে পাখার ভূমিকা ক্ষেত্রবিশেষে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় পাখা বেশ কার্যকরী। কিন্তু তাপমাত্রা যখন এরচেয়ে বেশি হয়ে যায়, পাখা থেকে আসা বাতাসও বেশ গরম অনুভূত হয়; যা অস্বস্তির তৈরি করে। এছাড়াও বৈদ্যুতিক পাখা চলার সময় যন্ত্রটির ভেতরে থাকা মোটর তাপ উৎপন্ন করে; যা অল্প পরিমাণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।
একটি স্থানকে ঠাণ্ডা রাখতে গাছাপালা বেশ কার্যকরী। এমনকি রাস্তা কিংবা বাগানে থাকা একটিমাত্র গাছও পরিবেশ ঠাণ্ডা রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও একটি শহরকে ঠাণ্ডা রাখতে নতুন নতুন প্রযুক্তির সহায়তায় নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমন, জাপানের টোকিওতে সূর্যের তাপ প্রতিরোধী রঙের ব্যবহার করা হয় কিংবা কম শক্তি ব্যয় করা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ব্যবহার করা হয়।
তাপদাহে ঘুমের ক্ষেত্রে করণীয়
ব্যক্তির ঘুমের সাথে আশেপাশের তাপমাত্রার খুবই নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ঘুমানোর সময় যতই ঘনিয়ে আসে, হৃদস্পন্দনের সাথে সাথে দেহের তাপমাত্রাও সাধারণত ততটাই কমে যেতে থাকে। এটি ঘুমের সাথে সংশ্লিষ্ট সংবেদনকেও বাড়িয়ে দেয়। একইসাথে এসময় হাত এবং পায়ের শিরা রক্ত চলাচলের জন্য আরও প্রসারিত হয়, যা ত্বকের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে দেহের ভেতরকার তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়।
কিন্তু তীব্র গরমের সময় দেহের পক্ষে তাপ কমিয়ে আনা কঠিন হয়ে যায়। এতে করে ঘুমের সাথে সংশ্লিষ্ট সংবেদনও ঠিকঠাক কাজ করতে পারে না। ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে ও ব্যক্তি পরবর্তী দিন আরও ক্লান্ত বোধ করে।
ঘুমানোর জন্য আদর্শ কক্ষ তাপমাত্রা ১৯ থেকে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর কিছু গবেষণা মতে, ঘুমানোর ক্ষেত্রে দেহের ত্বকের তাপমাত্রা ৩১-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকা দরকার। এক্ষেত্রে বিছানার চাদর ও রাতের পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা এটি ত্বকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করে।
তাপমাত্রা বেড়ে গেলে বিছানায় পাতলা ছাদর ও পরনে পাতলা কাপড় ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও টেবিল ফ্যানের পরিবর্তে সিলিং ফ্যানের ব্যবহার শরীরের উপর যথাযথভাবে মৃদু বাতাসের প্রবাহ নিশ্চিত করে, যা রাতের বেলা ব্যক্তির একটানা ঘুম নিশ্চিত করে।
গরমের সময় ভালো ঘুমের জন্য বাইরে মৃদু বাতাস থাকলে জানালা খুলে রাখা যেতে পারে। কিন্তু শহরে ক্ষেত্রে বাইরে থেকে আসা আওয়াজ উল্টো ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এছাড়াও মাঝরাতে হালকা খাবার না খাওয়াই উত্তম। কেননা এতে করে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়; যা ব্যক্তির ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
মানবদেহে তাপদাহের প্রভাব
মানবদেহের জন্য সার্বিক বিবেচনায় আদর্শ তাপমাত্রা ৩৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যখন পরিবেশে এই তাপমাত্রা অতিক্রম করে, বিশেষ করে যখন আর্দ্রতা বেশি থাকে, তখন দেহের ঠান্ডা হওয়ার ক্ষমতা কমে যায়।
২০২০ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ওয়েট-বাল্ব তাপমাত্রা (যা একইসাথে তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা উভয়ের পরিমাপ) পর্যন্ত মানবদেহে মারাত্মক নেরিবাচক স্বাস্থ্যগত প্রভাব পরে না।
কিন্তু দেহের তাপমাত্রা যখন খুব বেশি পরিমাণে বেড়ে যায় কিংবা দেহ যখন তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খায়, তখনই ঘটে বিপত্তি। এক্ষেত্রে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, অত্যধিক ঘাম, ক্র্যাম্প, বমি বমি ভাব ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যেতে পারে। এমনকি দেহ গরম নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়ে হিটস্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। তখন অতি দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
দেহে তাপদাহের নেতিবাচক প্রভাব আরও বিস্তর। এর কারণে মাথাব্যথা, পানিশূন্যতা, হার্ট অ্যাটাক ও শ্বাসকষ্টের সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি কখনও কখনও মৃত্যুও হতে পারে।
শিশু থেকে বয়স্ক সকল বয়সের মানুষের ক্ষেত্রেই তাপমাত্রা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিন্তু বয়স্করা তাপদাহের সময় বাড়তি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। কেননা তাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা কম থাকে এবং তাপের কারণে হৃদরোগ সংক্রান্ত সমস্যা বেশি হয়।
ধারণা করা হয় যে, বিশ্বের অর্ধেক মানুষ ও প্রায় ১০০ কোটি কর্মী উচ্চ তাপমাত্রার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। একইসাথে গর্ভাবস্থা, শিশুর জন্ম, উচ্চ আত্মহত্যার হার, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং হাসপাতালে ভর্তি বৃদ্ধির সাথেও উষ্ণ আবহাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে।
অন্যদিকে কিছু রোগের ওষুধ তাপদাহের সময় স্বাস্থ্য ঝুঁকিকে বহুগুলে বাড়াতে পারে। যেমন, মৃগী রোগ এবং পারকিনসন রোগের জন্য ব্যবহৃত কিছু ওষুধ ঘামের প্রবণতা কমিয়ে ফেলে। এতে করে শরীর সহজে ঠান্ডা হয় না।
তাপদাহ ও বৈষম্য বৃদ্ধি
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সকলে সমানভাবে ভুক্তভোগী নয়। বরং এর ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী। এমনকি এর কারণে প্রায়শই জাতিগতভাবে কেউ কম আর কেউ বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
যেমন, আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলো খুবই কম পরিমাণে কার্বন নিঃসরণ করে থাকে। এদিক থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য এই দেশগুলো কম দায়ী। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট খরা কিংবা তীব্র তাপদাহে দেশগুলো বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোর ক্ষেত্রে তাপদাহের সংবাদগুলো যেভাবে প্রচারিত হয়, আফ্রিকান দেশগুলোর ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায় না। এছাড়াও জলবায়ুগত পরিবর্তন বিষয়ক আয়োজিত নানা সামিটে আফ্রিকান দেশগুলোর সমস্যাগুলোকে ঠিকঠাক তুলে ধরা হয় না।
ক্রমশ তাপমাত্রার বৃদ্ধি একটি নীরব ঘাতক হতে পারে। কেননা তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ছে এবং সমস্যাটি খুবই গুরুতর না হওয়া পর্যন্ত কেউ গুরুত্ব দিয়ে আমলে নিচ্ছে না। বর্তমানে অনেকেই হয়তো এই তীব্র তাপদাহের কারণে মৃত্যুবরণ করছে। কিন্তু চিকিৎসকদের দূরদর্শিতার অভাবে সেটি ধরা পড়ছে না।
এক্ষেত্রে তাপদাহের ক্ষেত্রে আগাম সতর্কতা বহু জীবন বাঁচাতে পারে। যেমন, ভারতে তাপদাহ সম্পর্কে বহুল ব্যবহৃত সোশ্যাল ম্যাসেজিং অ্যাপ ওয়াটসঅ্যাপে সতর্কতা পাঠানো হয়। আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঝড় কিংবা হারিকেনের মতোই তাপদাহকেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে বিবেচনা করে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ডিসেবলড মানুষের জন্যও তাপদাহ বাড়তি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করতে পারে। যেমন, আংশিক দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তিদের গরমে সানগ্লাস পরতে হলে সেটি তাদের দৃষ্টিশক্তিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। একইসাথে গরমে অন্ধ ব্যক্তিরা টুপি ব্যবহার করলে সেটি তাদের প্রতিধ্বনি ব্যবহার করে চলাচলকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে।
তাপদাহে পানিশূন্যতা রোধে করণীয়
সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য দেহে পানির চাহিদা পূরণ করা বেশ প্রয়োজনীয়। আর এজন্য গড়ে দৈনিক ৬ থেকে ৮ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। কিন্তু যখন তাপমাত্রা বেড়ে যায়, তখন দেহে পানির চাহিদা আরও বেড়ে যায়।
গরমে ক্রমাগত পানি পান করা না হলে, শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে লক্ষণ হিসেবে ঘন ঘন তৃষ্ণা অনুভূত হয়। শারীরিক পরিশ্রম কিংবা ব্যায়াম করলে দেহে আরও বেশি পরিমাণে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। আর এই পানিশূন্যতা ক্লান্তিভাব তৈরি করে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেহের পানিশূন্যতা রোধে শুধু পানিই পান করা হয়। তবে সবসময় এটি ভালো সমাধান নাও হতে পারে। এক্ষেত্রে একতরফাভাবে পানি পান না করে ক্ষেত্রবিশেষে দুধ পান করা কার্যকরী হতে পারে।
কেননা দুধে অল্প পরিমাণে লবণ এবং সুগার থাকে যা গরমে দেহের জন্য উপকারী। একইসাথে ঘামের ক্ষেত্রে গরমে নারকেলের পানি পানের ফলে দেহ গুরুত্বপূর্ণ বহু খনিজের ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
গরমে অধিক পরিমাণে পানি পান প্রয়োজনীয় হলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি পান করা যাবে না। অল্প সময়ের ব্যবধানে মাত্রাতিরিক্ত পানি পানের ফলে সেটি হিতে বিপরীত হতে পারে এবং 'ওয়াটার পয়জনিং' এর সৃষ্টি করতে পারে। এতে করে ঘামের কারণে দেহ থেকে দ্রুত হারিয়ে যাওয়া ক্লোরাইড প্রতিস্থাপিত হতে পারে না; যা একজন ব্যক্তির জন্য বেশ বিপদের কারণ হতে পারে।
সূর্যের তাপ থেকে রক্ষায় উপায়
গরমে যারা বাইরে চলাচল করে, তাদের যথাযথভাবে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা দরকার। একইসাথে ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করা এবং দিনের সবচেয়ে উষ্ণতম সময় সূর্যের তাপ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। এতে করে গরমের তীব্রতা থেকে অল্প হলেও রক্ষা পাওয়া যাবে এবং ত্বকের ক্যান্সারের পরিমাণ কমে আসবে।
সূর্যের তাপ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে আরও বাড়তি ও ভিন্নধর্মী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ছয় মাস কিংবা এরচেয়ে বেশি বয়সের শিশুদের সানস্ক্রিন ব্যবহার করানো যাবে না। অস্ট্রেলিয়ান সান সেফটি এক্সপার্ট এর মতে, এক বছরের কম বয়সী শিশুকে সরাসরিভাবে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্নির সংস্পর্শে নিয়ে আসা উচিত নয়।
বরং শিশুদেরকে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে এবং বাতাস চলাচল সহজ করার জন্য হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরাতে হবে। ক্ষেত্রবিশেষে একটি নরম টুপিও পরানো যেতে পারে।
তাপদাহে গাড়ি সংক্রান্ত ঝুঁকি
মাত্র ১০ মিনিট সময়ের ব্যবধানে একটি গাড়ির তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। অন্যদিকে শিশুর দেহের তাপমাত্রা একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের তুলনায় তিন থেকে পাঁচগুণ দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই আচমকা গাড়ির তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে একটি শিশু মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পরতে পারে। তাই অবশ্যই গরমের দিনে শিশুদেরকে গাড়িতে একা রাখা যাবে না। গত ২৫ বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই গাড়িতে গরম তাপমাত্রায় ৯০০ শিশু মৃত্যুবরণ করেছে।
তাপদাহের সময় পোষা প্রাণী, বিশেষ করে কুকুরের প্রতি অধিক যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। গরম তাপমাত্রায় পোষা প্রাণীদের বাড়ির ভেতরে কিংবা ছায়াযুক্ত স্থানে রাখা উচিত। কেননা এই সময় কুকুরের মতো পোষা প্রাণীর থাবা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। একইসাথে ঠিক মানুষের মতোই গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ না করে প্রাণীগুলো হিটস্ট্রোক করতে পারে।