ব্যান্ডের ব্র্যান্ড: ব্যান্ড টি-শার্টের সমার্থক হয়ে ওঠা হেভি মেটাল টি-শার্টের গল্প
'প্রথম দিকে যখন অল্প পরিসরে কাজ শুরু করি, তখন সবার পছন্দের টি-শার্টগুলো খুব দ্রুত স্টক আউট হয়ে যেত। তখন এমনও হয়েছে যে, কেউ এসে তার পছন্দের স্টক আউট টি-শার্ট সেলসম্যানের পরনে দেখে তার শরীর থেকে খুলে নিয়ে যেত পুরো দাম দিয়ে! ব্যান্ড সংগীতের প্রতি তরুণদের এ উন্মাদনা আর ভালোবাসাই আমাদের এত দূর নিয়ে এসেছে,' বলছিলেন দেশের প্রথম ব্যান্ড টি-শার্ট নিয়ে কাজ করা উদ্যোক্তা ও হেভি মেটাল টি-শার্টের কর্ণধার জাবেদ হক।
হেভি মেটাল টি-শার্ট দেশের প্রথম ব্র্যান্ড যেখানে শুধুই দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্যান্ডের টি-শার্ট বিক্রি করা হয়। এছাড়াও ব্যান্ডের লোগোযুক্ত চাবির রিং, ক্যাপ, মানিব্যাগ, মাস্ক, জুতা, মগ, হুডি, জ্যাকেট ইত্যাদি পাওয়া যায়।
প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের ব্যান্ড সংগীত ভক্তদের পছন্দের টি-শার্ট পরার শখ মিটিয়ে চলেছে হেভি মেটাল টি-শার্ট। চার বন্ধুর নতুন কিছু করার ইচ্ছে থেকে কীভাবে সারাদেশের কোটি তরুণের কাছে পৌঁছে গেল হেভি মেটাল টি-শার্ট — সে গল্প জানা যাক।
যাত্রা শুরুর গল্প
২০১০ সাল তখন প্রায় শেষের দিকে। চার বন্ধু জাবেদ, জুলকারনাইন, তানভীর ও রিফাত এক বিকেলের আড্ডায় সিদ্ধান্ত নিলেন, তারা টি-শার্ট বানিয়ে বিক্রি করবেন। চারজনই ছিলেন ব্যান্ড গানের ভক্ত। তাই তারা ভাবলেন ব্যান্ডের টি-শার্টই বানিয়ে বিক্রি করা যাক। সবাই নিজেদের বাসা থেকে কিছু পুঁজি নিয়ে শুরু করেন টি-শার্ট তৈরির কাজ।
কিন্তু তিন মাস পর থেমে যায় তাদের এ উদ্যোগ। কিছু ভুল সিদ্ধান্ত ও যথাযথ মার্কেটিং না করার কারণে অল্প সময়েই গুটিয়ে নিতে হয় ব্যবসা। এরপর কেটে যায় তিন বছর।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাবেদ আর তানভীর আবার টি-শার্টের ব্যবসা শুরু করার চিন্তাভাবনা করতে থাকেন। দুইজন মিলে মাত্র নয় হাজার ৫০০ টাকা পুঁজি নিয়ে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেন তারা।
হেভি মেটাল টি-শার্ট নামটিও তখনই দেওয়া হয়। বছরের মাঝামাঝি সময়ে হেভি মেটাল টি-শার্টের নামে ফেসবুক পেজ খুলে অনলাইনে টি-শার্ট বিক্রি শুরু হয়। তখনো তাদের কোনো শোরুম বা দোকান হয়নি। অনলাইনের কেনাবেচাতেই তরুণদের মাঝে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে হেভি মেটাল টি-শার্ট। প্রি-অর্ডার ও নিজেদের ডিজাইন; দুইভাবেই ক্রেতাদের কাছে টি-শার্ট বিক্রি শুরু করেন তারা।
২০১৪ সালের শুরুতে তানভীর ব্যক্তিগত কিছু কারণে হেভি মেটাল টি-শার্ট ছেড়ে চলে যান। তারপর থেকে হেভি মেটাল টি-শার্ট জাবেদ একাই চালিয়েছেন। কিন্তু প্রথম দিকে প্রোডাকশন, অর্ডার নেওয়া, পেমেন্ট নেওয়া, সব ক্রেতার সঙ্গে কথা বলা, টি-শার্ট ডেলিভারিসহ সব কাজ একা করা, আবার পাশাপাশি নিজের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া — সবমিলিয়ে বেশ চাপের মুখে পড়তে হয় তাকে।
'যখন একা সব সামলানো শুরু করি, তখন ক্রেতাদের সমর্থন ছিল অভাবনীয়। একটা টি-শার্টের জন্য তারা দুই সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন। কারণ ঢাকা শহরের অর্ডারগুলো আমি নিজেই ডেলিভারি করতাম। তখন ই-কুরিয়ার সার্ভিসের সুবিধা ছিল না এখনকার মতো। সপ্তাহে একদিন এলাকাভেদে প্রোডাক্টগুলো নিয়ে ডেলিভারি করতাম। আর ঢাকার বাইরের অর্ডার সুন্দরবন বা অন্য কুরিয়ারে ডেলিভারি করে দিতাম,' বলেন জাবেদ হক।
দিনদিন হেভি মেটাল টি-শার্টের জনপ্রিয়তার পারদ যত ঊর্ধ্বে গিয়েছে, জাবেদের একার পক্ষে সব করা তত কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তখন তিনি অন্য এক পন্থা অবলম্বন করেন নিজের কাজ সহজ করার জন্য। ইন্দিরা রোডের মেহবুব প্লাজায় তার বাবার একটি দোকান ছিল। সেখানে টি-শার্টের কিছু স্যাম্পল রেখে দেন। আর ঢাকার ক্রেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয় যে এখানে এসে টি-শার্ট দেখে, পছন্দ করে নেওয়া যাবে। এতে ঢাকা শহরে ডেলিভারির চাপ কমে আসে কিছুটা।
২০১৪ সালে মে মাসের ১৫ তারিখ মেহবুব প্লাজাতেই একটি ছোট দোকানে হেভি মেটাল টি-শার্টের প্রথম শোরুম খোলা হয়। তারপর ধীরে ধীরে তারা দেশের বিভিন্ন জেলায় ও ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় শোরুম খোলে। হেভি মেটাল টি-শার্টের ফেসবুক গ্রুপে ঢুকলেই দেখা যায় যেসব জেলায় তাদের শোরুম নেই, সেসব এলাকার তরুণেরা তাদের এলাকায় শোরুম খোলার আবদার জানিয়ে পোস্ট করছেন।
এখন ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্যান্ডের টি-শার্ট পাওয়া যায় হেভি মেটাল টি-শার্টে। ফুল হাতা টি-শার্টের দাম ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। শীতকালীন পোশাক হুডি আর ডেনিম জ্যাকেটের দাম যথাক্রমে ১,২০০ টাকা আর ১,৮০০ টাকার মধ্যে।
বর্তমানে গাজীপুর, কুমিল্লা, ফেনী, খুলনা, নোয়াখালী, বরিশাল, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও রাঙামাটিসহ আরও কয়েকটি জেলা মিলিয়ে সারাদেশে ২২টি শাখা আছে তাদের। ঢাকা শহরেও বিভিন্ন এলাকায় আছে হেভি মেটাল টি-শার্টের শোরুম। মৌলভীবাজার, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও যশোরে নতুন শাখা খোলার কাজ করছেন তারা।
দেশি ব্যান্ড ও হেভি মেটাল টি-শার্ট
বাংলাদেশের ব্যান্ডসংস্কৃতি আশির দশক থেকে শুরু হয়েছে। এরপর এ জনরাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ব্যান্ড সংগীত হয়ে দাঁড়িয়েছে তারুণ্যের প্রতীক। গত দশক থেকে হেভি মেটাল টি-শার্ট দেশিয় ব্যান্ডের জগতে জনপ্রিয় এক নাম। ব্যান্ড মিউজিশিয়ান, শ্রোতা, ভক্ত — সবাই হেভি মেটাল টি-শার্টের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত।
প্রথম দিকে হেভি মেটাল টি-শার্ট বিখ্যাত বিদেশি ব্যান্ড যেমন, মেটালিকা, মেগাডেথ, প্যান্টেরা, ল্যাম্ব অভ গড, ডিস্টার্বড ইত্যাদির টি-শার্ট তৈরি করত। এখনো জনপ্রিয়তা আর চাহিদার কারণে বিদেশি ব্যান্ডের টি-শার্ট নিয়মিত তৈরি করে তারা। বিদেশি ব্যান্ডগুলোর লোগোর ডিজাইন অনলাইন থেকে নিয়ে টি-শার্টের ওপর বসানো হয়।
সময়ের সাথে সাথে দেশি ব্যান্ডের টি-শার্ট তৈরি করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে হেভি মেটাল টি-শার্ট। পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখার আন্তরিকতার কারণে দেশি ব্যান্ডগুলোও নিজেদের অফিশিয়াল টি-শার্ট তৈরির দায়িত্ব নির্দ্বিধায় তাদেরকে দিয়ে থাকে।
হেভি মেটাল টি-শার্টের নিজস্ব লোগো ডিজাইনারও আছেন। অনেক নতুন ব্যান্ডকেই তারা লোগো তৈরি করে দিয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় একশোর বেশি ব্যান্ডের অফিশিয়াল টি-শার্ট তৈরি ও দেশব্যাপী বিপণনের দায়িত্বে আছে হেভি মেটাল টি-শার্ট। এদের মধ্যে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড ওয়ারফেজ যেমন আছে, তেমন আছে প্রতিবিম্ব, এন্ড ফেজ-এর মতো নতুন ব্যান্ড।
জাবেদ বলেন, 'বিখ্যাত ব্যান্ডের টি-শার্ট তৈরি করে আমাদের হয়তো বিক্রি বেশি হয়, কিন্তু নতুন যেসব ব্যান্ড আছে, আমরা তাদেরকে বেশি সাপোর্ট করে থাকি। কারণ আমরা যখন নতুন কোনো ব্যান্ডের সাথে যুক্ত হই, তখন শুধু তাদের টি-শার্ট তৈরি করেই আমরা থেমে থাকি না। ব্যান্ডটির যথাযথ বিকাশ হচ্ছে কি না, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা জনপ্রিয় হচ্ছে কি না — এগুলো সহ আরও নানা বিষয়ে আমরা তাদেরকে সাহায্য করার চেষ্টা করি। এছাড়া টি-শার্ট বিক্রির পর লাভের একটা অংশ তারা পায়।'
হেভি মেটাল টি-শার্ট এখন শুধু টি-শার্ট বিক্রির দোকান নয়। বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতাঙ্গনেও তাদের অবদান রয়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কনসার্টের আয়োজন করে থাকে হেভি মেটাল টি-শার্ট। এখন পর্যন্ত অনেকগুলো সফল কনসার্টের আনুষ্ঠানিক পার্টনার হিসেবে কাজ করেছে এটি। ঢাকার বাইরের আয়োজিত কনসার্টের মাধ্যমে নতুন নতুন ব্যান্ডকে সুযোগ দেয় তারা। এতে করে দেশের ব্যান্ড সংগীতের পাইপলাইনে নিয়মিত যুক্ত হচ্ছে অনেক ব্যান্ড।
ক্রেতা থেকে শ্রোতা আর ভক্ত তৈরির স্থান
"এমন অনেকবার হয়েছে যে একজন তার পছন্দের ব্যান্ডের টি-শার্ট কিনতে এসে অন্য একটি ব্যান্ডের টি-শার্টও ডিজাইন পছন্দ হওয়ায় কিনে নিয়ে যান। তারপরে সেই নতুন ব্যান্ডের গান শুনে আমাকে ফোন করে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন যে, এই ব্যান্ডের গান শুনে তার 'জীবন পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে'! এমন ঘটনাগুলো শুনলে খুশিতে মন ভরে যায়," হেসে বলছিলেন জাবেদ।
হেভি মেটাল টি-শার্ট ব্যান্ডগুলোর জন্য একটি বড় বিজ্ঞাপনের জায়গা। এখানে সারি সারি হ্যাঙ্গারে ঝোলানো থাকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্যান্ডের বাহারি লোগো ও ডিজাইনযুক্ত টি-শার্ট। অ্যালবামের কভার দিয়েও টি-শার্ট তৈরি করা হয় এখানে। ক্রেতারা দোকানে ঢুকে তাদের পছন্দের ব্যান্ডের টি-শার্ট খুঁজে নেওয়ার পাশাপাশি অনেক নতুন ব্যান্ডের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন টি-শার্টের মাধ্যমেই।
এছাড়াও হেভি মেটাল টি-শার্ট অনেক ব্যান্ডের মিউজিক ভিডিও, অ্যালবাম ও গানের পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে। তাদের বিভিন্ন আউটলেটে নিয়মিত বিভিন্ন ব্যান্ডের নতুন গান বা অ্যালবাম রিলিজের জন্য ঘটা করে অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। এ আয়োজন তাদের ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে লাইভ দেখানো হয়। যার ফলে ক্রেতারা নতুন গান বা ব্যান্ডের গান শুনে, অনেকে ভক্ত হয়। দিনশেষে এতে ব্যান্ডগুলোই পরিচিতি পায় ও লাভবান হয়।
প্রতিকূলতা আর এগিয়ে চলা একসঙ্গে
দেশের সব নামকরা ব্যান্ডের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়েছে হেভি মেটাল টি-শার্টের। চার মাস বয়সি থেকে চল্লিশ বছর বয়সি ব্যান্ডেরও অফিশিয়াল টি-শার্ট তৈরি করেছে তারা। তবে দশ বছরের দীর্ঘ এ যাত্রায় অনেক সময়ই বিভিন্ন প্রতিকূলতার মাঝে পড়তে হয়েছে হেভি মেটাল টি-শার্টকে।
এর মধ্যে অন্যতম হলো হেভি মেটাল টি-শার্টের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ব্যান্ডগুলোর লোগো দিয়ে বাইরের কেউ টি-শার্ট তৈরি করে বিক্রি করা। জাবেদ জানান, দেশের বেশিরভাগ ব্যান্ডের লোগোরই কপিরাইট করা নেই। তাই যে কেউ ইন্টারনেট থেকে লোগো ডাউনলোড করে টি-শার্ট বানিয়ে বিক্রি করতে পারে।
অনলাইনে এমন অনেক পেজ আছে যারা প্রকাশ্যে এ কাজ করছে। ব্যান্ডের নিজেদের লোগোর ওপর কপিরাইট না থাকার কারণে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভুক্তভোগী ব্যান্ডগুলো। তবে হেভি মেটাল টি-শার্টের উদ্যোগে অনেক ব্যান্ডই এখন নিজেদের লোগো কপিরাইট করছে।
'হেভি মেটাল টি-শার্টের জন্য সবচেয়ে কঠিন ছিল করোনা মহামারির সময়টা। যখন সারাদেশে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দোকান বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল, তখন আমি দেশজুড়ে আরও ৪টি শাখা খুলি। সব ব্যাটে-বলে মিলে যাচ্ছিল, তাই সময় পেলেই এলাকা পছন্দ করে, ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী নতুন শাখা খুলছিলাম। কিন্তু কিছুদিন যেতেই বুঝলাম কী ঝামেলায় পড়েছি! মানুষ বাসা থেকে বের হতে পারে না — দোকান কীভাবে চলবে? সব মিলিয়ে করোনা আমাদেরকে বড় একটি ধাক্কা দিয়েছে,' বলছিলেন জাবেদ।
তবে করোনার সময় অনলাইনে বিক্রিবাট্টা চলছিল বেশ। জাবেদ বলেন, 'ধরুন, ঢাকায় যে মানুষটা দোকানে এসে কিনতেন, তিনি গ্রামে চলে গিয়েছিলেন করোনার সময়। গ্রাম থেকে যখন তিনি অনলাইনে অর্ডার দিতেন, তার পাশের মানুষটাও আমাদের টি-শার্টের ডিজাইন দেখে আগ্রহী হয়ে নিজের জন্য একটা অর্ডার করতেন। এ ব্যপারগুলোই আমাদেরকে টিকিয়ে রেখেছিল কোভিডের সময়।'
'যেতে চাই বহুদূর…'
'দেশের যেকোনো টি-শার্ট ব্র্যান্ডকে আমরা নিজেদের প্রতিযোগী হিসেবে বিবেচনা করি। আমাদের পণ্যের মান ও জনপ্রিয়তা তাদের থেকে কোনো অংশে কম নয়। আর যারা আমাদেরকে অনুসরণ করে, আমাদের পণ্যের নাম নকল করে বিভিন্নভাবে ব্যবসা করার চেষ্টা করে, তাদের কথা আমি কখনো ভাবি না। তাদেরকে থামানোর জন্য, আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য যে পরিমাণ সময় ব্যয় হবে, সে সময়টা আমি নিজের ব্র্যান্ডকে আরও উন্নত করার জন্য দেই,' আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানান জাবেদ হক।
হেভি মেটাল টি-শার্ট সবসময় ক্রেতাদেরকে সামনে রেখেছে। যার কারণে ব্র্যান্ডটির বিশ্বস্ত ক্রেতাগোষ্ঠীর সংখ্যা বিশাল। অনেকেই আছেন যারা দশ বছর ধরে নিয়মিত হেভি মেটাল টি-শার্ট থেকে টি-শার্ট কেনেন।
ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখেই তারা টি-শার্ট তৈরি করে। ২০১৭ সালে হেভি মেটাল টি-শার্ট আরও নির্বিঘ্নে নিজেদের পণ্য উৎপাদন করার জন্য নিজস্ব কারখানা স্থাপন করে উত্তরায়।
কখনো কোনো টি-শার্ট যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, তাহলে তা ফেরত নেওয়ার জন্য রিফান্ড পলিসিও আছে তাদের। জাবেদ বলেন, 'আমি কখনো হলফ করে বলতে পারব না যে, আমাদের কাজে কোনো ভুল হয় না। কাজ যত বড় পরিসরে করেছি, ভুল ত্রুটিও হয়েছে অনেক। কিন্তু সেই ভুল ঠিক করার জন্য কখনো পিছপা হইনি আমরা।'
এখন দেশের ব্যান্ড সংগীতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে হেভি মেটাল টি-শার্টের নাম। সময়ের সাথে সাথে ব্যান্ড সংগীত ভক্ত তরুণ সমাজের জন্য ফ্যাশন আইকন হয়ে দাঁড়িয়েছে হেভি মেটাল টি-শার্ট। দেশব্যাপী নিজেদের ব্র্যান্ড ছড়ানোর সাথে সাথে ব্যান্ড সংগীতকে আরও অলংকৃত করার জন্য নতুন নতুন ব্যান্ডকে সামনে নিয়ে আসছে তারা।