কুতুবদিয়া বাতিঘরের হেড লাইটকিপার ডিক্রুজ যে কারণে পদত্যাগ করেছিলেন
রাগে, ক্ষোভে আর দুঃখেও ডিক্রুজ শেষে পদত্যাগপত্র দাখিল করে বসলেন। ততদিনে তিনি অবশ্য ৩০ বছর চাকরি করে ফেলেছেন। চট্টগ্রামের পোর্ট অফিসারকে ১৯২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর ডিক্রুজ লিখলেন, আমি বিগত ৩০ বছর ধরে আমার সর্বশক্তি দিয়ে নিয়োগকর্তাদের সেবা করেছি, বিনিময়ে অন্তত পেনশন (অবসরভাতা) আশা করছি।
কাজের লোক হলেও শান্তিপ্রিয় নন
ডিক্রুজের চিঠি পেয়ে ১৯২৪ সালের জানুয়ারির ১০ তারিখে পোর্ট অফিসার চেয়ারম্যানকে লিখলেন, 'কুতুবদিয়া লাইট হাউজের প্রধান বাতি সংরক্ষক ( হেড লাইটকিপার) ডিক্রুজ বহু পুরোনো কর্মচারী, বিশ্বস্ততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সমাধা করেছেন।
'তবে তিনি মোটেও শান্তিপ্রিয় নন। প্রতিবেশীর সঙ্গে মিলেমিশে থাকার কোনো পরিস্থিতিই তৈরি করতে পারেন না। তার কর্মজীবনের বলতে গেলে পুরোটাই কেটেছে ঝগড়াঝাটি করে যার অনেকগুলোর মীমাংসা করতে থানা পর্যন্ত যেতে হয়েছে।
সেজন্য তার অবসর চাওয়ার আবেদনপত্র গ্রহণের জন্য মহোদয়ের নিকট সুপারিশ করছি।'
ডিক্রুজের অবসর কার্যকর হয়েছিল ১ মার্চ ১৯২৪ ।
এসএমজে ডিক্রুজের জায়গায় আনা হয়েছিল ভিসি গোমেজকে যিনি নরম্যান্স পয়েন্টের হেড লাইটকিপার ছিলেন। নতুন কর্মস্থলে গোমেজের ২৫ রুপি বেতন বৃদ্ধি হয়, ডাক মারফত তিনি পেতে থাকেন ১১০ রুপি। কাজে থাকার সময় ডিক্রুজ বহুবার তার বেতন ও ভাতা বৃদ্ধির জন্য দরখাস্ত দিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু তিনি ঊর্ধ্বতনদের কৃপা লাভ করেননি।
অপেক্ষা করেই কেটে গেছে ২৫ বছর
১৯১৮ সালের ৩১ আগস্ট লেখা একটি দীর্ঘ চিঠিতে পোর্ট অফিসার ও পোর্ট কমিশনারদের তিনি বলছেন, 'মি. সিস্কার যখন পোর্ট কমিশনার ছিলেন তখন থেকেই বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে আমি দরখাস্ত দিয়ে আসছি। আমাকে বারবারই বলা হয়েছে যেন উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষা করি। এখন মনে হচ্ছে সে উপযুক্ত সময় এসেছে, কারণ আশপাশের অনেকেরই দেখছি বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে।
'১৮৯৩ সালে আমি চাকরিতে প্রবেশ করেছিলাম। সে হিসাবে এখন সাড়ে পঁচিশ বছর চলছে। কাঠমিস্ত্রী, রাজমিস্ত্রী বা কুলির কাজও করেছি, যখন যেমন প্রয়োজন হয়েছে। ১৮৯৪ সালের ঘূর্ণিঝড়ের সময় আমি সর্বশক্তি দিয়ে বাতিঘর রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। ক্যাপ্টেন গুড ও স্যার জন উডবার্ন পরিদর্শনে এসে আমাকে প্রশংসাপত্রও দিয়েছিলেন যা এই দরখাস্তের সঙ্গে যুক্ত করছি।'
ওই চিঠিতেই আরো নানান ঘটনা বর্ণনা করে ডিক্রুজ ৫০ রুপি বিশেষ ভাতা বরাদ্দের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু পোর্ট অফিসার তার সে আবেদন রক্ষা করেননি; কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন, বর্তমানে যে টাকা ডিক্রুজকে প্রদান করা হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ তা যথেষ্ট মনে করে।
জ্বালানি ছিল নারকেল তেল
ব্রিটিশ সরকার কুতুবদিয়ায় বাতিঘর প্রতিষ্ঠা করে ১৮৪৬ সালে। ১৮২২ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস এর প্রয়োজনীয়তাকে তীব্রতর করে। ওই ঘূর্ণিঝড়ের প্রতিক্রিয়ায় সমুদ্রবক্ষে পলি জমে অনেক চর সৃষ্টি হয়। বিস্তীর্ণ এলাকায় নতুন নতুন চর জেগে ওঠার ফলে চট্টগ্রামে দেশি-বিদেশি জাহাজ চলাচলে সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। তাই জাহাজের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ব্রিটিশ সরকার বাতিঘর স্থাপনের জন্য জরিপ কাজ পরিচালনা করে এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ২৫ মাইল দক্ষিণে কুতুবদিয়ায় একটি সুউচ্চ বাতিঘর স্থাপনের সিন্ধান্ত নেয়।
সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার, নরম্যান্স পয়েন্ট, পতেঙ্গায়ও বাতিঘর স্থাপিত হয় পরে। তবে কুতুবদিয়া বাতিঘর সবচেয়ে প্রাচীন। বাতিঘরটি নির্মাণে খরচ হয়েছিল ৪ হাজার ৪২৮ টাকা। পাথরের ভিত্তির ওপরে স্থাপিত টাওয়ারের উচ্চতা ১২০ ফুট। এর কামরা ছিল ৬টি, পাটাতন ও সিঁড়ি ছিল কাঠের। সবচেয়ে উঁচু কামরায় ৮ ফিতার ল্যাম্প বসানো হয়েছিল। জ্বালানি হিসাবে নারকেল তেল ব্যবহৃত হতো। কাচ দিয়ে ঢাকা কাঠের ফ্রেমের ভিতর রাখা ছিল বাতিটি, প্রতিদিন সূর্যাস্তের আগে আগে জ্বালানো হতো। এ বাতির আলো ২৫-৩০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্র থেকে দেখা যেত।
বাতিঘরের নিচতলা ছিল মাটির নিচে আর দেয়াল ছিল খুবই পুরু। ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন হেয়ারের তত্ত্বাবধানে ও ইঞ্জিনিয়ার জে এইচ টুগুডের নির্দেশনায় বাতিঘরটি নির্মিত হয় দক্ষিণ ধুরং ইউনিয়নের আলী ফকির ডেইলে পশ্চিম সমুদ্র উপকূলে।
১৮৯৭ সালে বাতিঘরটি বিধ্বস্ত হয়
চট্টগ্রাম একটি প্রাচীন সমুদ্রবন্দর। আরব বণিকেরা নবম শতক থেকে এর সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ স্থাপন করে। আর চৌদ্দ শতকে বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার পর থেকে চট্টগ্রাম একটি ব্যস্ত আন্তর্জাতিক বন্দরে পরিণত হয়। সেকালে উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি ছিল না, সম্বল বলতে নাবিকদের অভিজ্ঞতা। তাতে ভর করেই জাহাজগুলো সাগর-মহাসাগর পাড়ি দিত।
ব্রিটিশরা বাংলার শাসনভার হাতে নেওয়ার পর বন্দরের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে, কিন্তু জাহাজ পরিচালনায় সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ছিল না। ক্রমে ক্রমে ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন ঘটে। একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে, পোর্ট কমিশনারদের তত্ত্বাবধানে এবং পোর্ট অফিসারের নজরদারিতে পরিচালিত হতো চট্টগ্রাম বন্দর। লাইটহাউজগুলো ছিল চট্টগ্রাম বন্দরের অধীন।
ডিক্রুজের চাকরি শুরুর চার বছর পর ১৮৯৭ সালে আরেকটি প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়ে বাতিঘরটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুরো লাইটহাউজ নড়বড়ে হয়ে যায়। বিধব্স্ত হয় লাইটকিপারের বাসভবন। ভবনের টিনের তৈরি ছাদ মাঠে গিয়ে আছড়ে পড়ে। স্তূপীকৃত পাথরগুলোও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যায়।
এরপরে নিশ্চয় আবার বাতিঘর পুনরায় নির্মাণ করা হয়। তবে তার নথিগুলো আমাদের হাতে আসেনি। বলা ভালো, ন্যাশনাল আর্কাইভে খুঁজে পাইনি।
চান্স ব্রাদার্সের নতুন বাতি
কুতুবদিয়া বাতিঘরের নতুন আধুনিক বাতি স্থাপন করা হয় ১৯২৪ সালে। ডিক্রুজ আর কাজে নেই ততদিনে। লন্ডনের ট্রিনিটি হাউজের সচিব ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের পোর্ট অফিসারকে বড় এক চিঠি লেখেন। সেটি ছিল পোর্ট অফিসারের লেখা এক চিঠির জবাব।
পোর্ট অফিসার ট্রিনিটি হাউজের (ইংল্যান্ডের কেন্দ্রীয় লাইটহাউজ কর্তৃপক্ষ) প্রধান প্রকৌশলীর কাছে উপদেশ চেয়েছিলেন কুতুবদিয়া লাইটহাউজের বাতি সম্পর্কে। ট্রিনিটি হাউজের সচিব উত্তরে জানাচ্ছেন, আধুনিক নৌবাতি ও তার কর্মক্ষমতা বিষয়ে মেসার্স চান্স ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড কতগুলো প্রস্তাবনা পেশ করেছে। চান্স ব্রাদার্সের বাতিগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিবর্তিত হয়ে উন্নত শক্তিসম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে কুতুবদিয়ায় চলমান আছে গুচ্ছ সাদা বাতি যা ত্রিশ সেকেন্ডে দুইবার জ্বলে ও নেভে। এর শক্তি সম্মিলিতভাবে ১৫ হাজার মোমবাতির সমান। এর পরিবর্তে চান্স ব্রাদার্স তাদের নিজেদের প্রস্তুত করা ইনডিকাসেন্ট (দ্যুতিময় সাদা আলো) পেট্রোলিয়াম ভেপার বার্নার স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছে। চান্স ব্রাদার্সের এই বাতি ইতিমধ্যে সুনাম অর্জন করেছে। ট্রিনিটি হাউজের সাবেক ও ইতিমধ্যে প্রয়াত প্রধান প্রকৌশলী ডিডব্লিউ হুড বাতিটি পরীক্ষা করেছিলেন এবং ইতিবাচক মতামত ব্যক্ত করেছিলেন। এটি সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং ব্যবস্থাপনা খরচও কম। আগের ম্যান্টেলের (জালিকাটা আলোর ঢাকনা) তুলনায় এর নতুন ঢাকনার সুবিধা অনেক বেশি। এটি প্রায় ৬০ হাজার মোমবাতির সমান আলো দিতে সক্ষম।
ডিক্রুজের হুমকি
বাতি স্থাপন শেষে এবার আমরা একটু পিছিয়ে ১৯২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ফিরব। ততদিনে ডিক্রুজ পদত্যাগপত্র লিখে ফেলেছেন, কিন্তু কার্যকর হওয়ার আরো তিন মাস বাকি। ডিসেম্বরের ৭ তারিখে নইমুদ্দিন, সামিউদ্দিন, আমিরুদ্দিন এবং আইনুদ্দিন কন্ট্রাক্টর পোর্ট অফিসার বরাবর একটি চিঠি পেশ করেছেন। চিঠির প্রধান বক্তব্য, ডিক্রুজের উসকানিতে লাইটহাউজের খালাসিরা তাদের (আবেদনকারীদের) বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
ঘটনার শুরু অবশ্য বেশ আগে, আর সেটা ১৯১৩ সাল। তখন আবেদনকারীরা লাইটহাউজ রং করার কাজে নিযুক্ত ছিলেন। ডিক্রুজ তাদের কাছে ৪০ রুপি কমিশন চেয়েছিলেন, কিন্তু আবেদনকারীরা তা দিতে অস্বীকার করলে ডিক্রুজ রাগান্বিত হন এবং দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন। এর ফলশ্রুতিতে আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে ডিক্রুজ কয়েকটি অভিযোগ করেন, সেগুলো হলো:
ক) বাতিঘর প্রাঙ্গণে মহিষ চরানো
খ) বাতিঘরের তেল চুরি
গ) খোঁয়াড়ে যাওয়ার পথে খালাসি মগবুল আলীর ছাগল ধরে নিয়ে যাওয়া
ঘ) পাথর চুরি
আবেদনকারীরা উল্টো অভিযোগ করছেন, 'চলতি বছরের (১৯২৩) অক্টোবর মাসে ডিক্রুজ আমাদের তিনটি বিশ্বস্ত কুকুরকে রিভলবার দিয়ে গুলি করে হত্যা করেন। তারই প্ররোচনায় দুর্ধর্ষ পেটাগাজি এবং সুলতান আমাদের একটি সাম্পান পুড়িয়ে দিয়েছে যার নির্মাণ ব্যয় ৫০০ রুপি। উপরন্তু এই বলে হুমকি দিয়েছেন যে, চট্টগ্রাম ফিরে যাওয়ার আগে আমাদের তিনি ঘর-বাড়ি ছাড়া করবেন।'
এই পরিস্থিতিতে আবেদনকারীরা মহানুভবের (পোর্ট অফিসার) নিকট সুবিচার প্রার্থনা করছেন এবং আরো অধিক ক্ষতি হওয়া থেকে বাঁচার জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছেন।
আদিকালের বাতিঘর
আদিকালে পাহাড়ের ওপর আগুনের কুণ্ডলি জ্বালিয়ে বাতিঘরের কাজ চালানো হতো। তখন পথ দেখানোর সঙ্গে অগভীর সৈকত ও প্রবাল দ্বীপ সম্পর্কে সতর্ক করাও ছিল আগুন জ্বালানোর উদ্দেশ্য। ভারতের গুজরাতের কুনতাসি গ্রামে খনন চালিয়ে একটি বর্গাকার ওয়াচ টাওয়ারের সন্ধান পাওয়া গেছে যা উচ্চতায় ছিল ৩০ থেকে ৩৬ ফুট, রান অব কচ থেকে আসা জাহাজগুলিকে এখান থেকে পথ দেখানো হতো। এটিকে খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ সালের বলে দাবি করেন প্রত্নবিদরা। এছাড়া আলেকজান্দ্রিয়ার লাইটহাউজ, রোড দ্বীপের কলোসাস, টাওয়ার অব হারকিউলেস প্রাচীন লাইটহাউজগুলির অন্যতম।
নিউক্যাসেল-লন্ডন রুটে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জাহাজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটলে ট্রিনিটি হাউজ ১৬০৯ সালে লোয়েসটফট লাইটহাউজ প্রতিষ্ঠা করে। কাঠের তৈরি জোড়া এই লাইটহাউজে মোমবাতি দিয়ে আলোর ব্যবস্থা করা হতো। আঠারো শতকের আগপর্যন্ত লাইটহাউজগুলোয় মোমবাতি, কয়লা বা কাঠ ব্যবহৃত হতো আলোর উৎস হিসেবে। ১৮৩৬ সালে বাতিঘর আইন প্রবর্তিত হয় আর তারই দশ বছর পরে প্রতিষ্ঠিত হয় কুতুবদিয়া লাইটহাউজ।
পাথরঘাটায় কি ডিক্রুজ শায়িত আছেন?
লাইটহাউজগুলো বিরল, জনহীন জায়গায় হওয়ার কারণে সাধারণত সরকার নিজে থেকে মাস খোরাকি (তেল, চাল, ডাল, মুরগী, ঘি ইত্যাদি) পৌঁছে দিত। জনবিচ্ছিন্ন থাকতে থাকতে কারও কারও মেজাজ কড়া হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়।
নাম থেকে বোঝা যায়, ডিক্রুজ ছিলেন পর্তুগীজ বংশোদ্ভুত। তার পূর্বপুরুষরা ছিল দুর্ধর্ষ। মোগলদের সঙ্গে যুদ্ধে হেরে, ব্রিটিশদের সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরে রাজ্য ও রাজকন্যা হারিয়ে ফেলেছিল পর্তুগিজরা। তাই তাদের গরম মেজাজ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত হয়ে থাকবে। দুভাবে তারা এটা সামাল দিয়েছে: ঝগড়া-বিবাদ করে অথবা বিষণ্নতায় ভুগে।
নইমুদ্দিন, সামিউদ্দিনদের দেওয়া হুমকি থেকে অনুমান করা যায়, পদত্যাগ করার পর ডিক্রুজ ফিরে গিয়েছিলেন চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের বড় বসতি ছিল। পাথরঘাটা ক্যাথলিক গির্জাসংলগ্ন কবরস্থানে তার কবর খুঁজে পাওয়াও যেতে পারে।
ডিক্রুজের বংশধরদের প্রতি আমরা সহমর্মী। অত্যন্ত কাজের লোক হয়েও তিনি যোগ্য সম্মানি ও সম্মান পাননি। তবে ইতিহাস তাকে ভোলেনি। বাতিঘরে তিনি আলো জ্বালিয়েছেন ত্রিশ বছর, পথ দেখিয়েছেন অগণিত পথভোলা নাবিককে। আপনার পদত্যাগপত্র দাখিলের আজ ১০০ বছর পর আপনাকে ভালোবাসা জানাচ্ছি এসএমজে ডিক্রুজ, আশা করি গ্রহণ করবেন।