লক্ষ্য শেয়ার করুন, তবে সবার সাথে নয়!
আমাদের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য যে নিজের কাছেই রাখা উচিত, এ ধারণা কিন্তু নতুন নয়। 'মোমবাতিকে যত বেশি সুরক্ষিত রাখা হবে, সেটি ততো বেশি জ্বলবে'- সৌদি আরবে বহু শতাব্দী ধরে চলে আসা একটি প্রবাদ এটি।
জীবনের লক্ষ্য কি অন্যের সাথে শেয়ার করা উচিত, নাকি না- এ বিষয়ে খোঁজ করলে দু'ধরনের উত্তরই পাওয়া যাবে। অনেকের মতে, নিজের লক্ষ্য শেয়ার করলে এর প্রতি দায়বদ্ধতা বাড়ে, ফলে লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়াতেও উৎসাহ পাওয়া যায়। আবার অন্যদের মতে, লক্ষ্য শেয়ার করলে তার বিপরীত প্রতিক্রিয়াও হতে পারে।
সম্প্রতি, জার্নাল অফ অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজিতে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণা অনুযায়ী, একজন মানুষের তার লক্ষ্য শেয়ার করা উচিত, তবে তা শুধুমাত্র সেসব ব্যক্তিদের সাথেই যাদেরকে তিনি নিজের থেকে উচ্চমর্যাদার বলে মনে করেন।
গবেষণার প্রধান লেখক এবং ওহাইও ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হাওয়ার্ড ক্লেইন বলেন, "লক্ষ্য শেয়ার না করার চেয়ে বরং তা শেয়ার করার মাধ্যমেই আপনি বেশি উপকৃত হন। তবে, এমন কারো সাথে শেয়ার করুন যার মতামতকে আপনি গুরুত্ব দেন।"
ক্লেইন এবং তার সহকর্মীরা তাদের গবেষণার জন্য বেশ কয়েকটি সমীক্ষা চালিয়েছেন। একটির ফলাফলে দেখা যায়, কর্মজীবী প্রাপ্তবয়স্করা প্রায়ই নিজেদের পরবর্তী লক্ষ্য অন্যদের সাথে ভাগ করে নেয়। তারা যদি নিজেদের থেকে উচ্চমর্যাদার কারো সাথে তা শেয়ার করে তাহলে সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।
এছাড়া, ১৭১ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর উপর আরও একটি পরীক্ষা চালানো হয়। তাদেরকে ৩টি দলে ভাগ করে একটি গেম খেলতে বলা হয়। এদের মধ্যে একটি দলের শিক্ষার্থীদেরকে একজন উচ্চমর্যাদার ব্যক্তির সাথে পরামর্শ করে গেম খেলতে বলা হয়।
গবেষণায় দেখা যায়, যে দলের শিক্ষার্থীরা নিজেদের লক্ষ্য শেয়ার করছিলেন, তাদের মধ্যে লক্ষ্য অর্জনের জন্য উচ্চ প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি বাকিদের তুলনায় আরও ভাল পারফর্ম করতে দেখা গেছে।
ক্লেইন বলেন, "আপনি যদি এমন কারো সাথে আপনার লক্ষ্য শেয়ার করেন যার মতামত আপনার উপর কোনো প্রভাব ফেলে না, তাহলে তা আপনার টিকে থাকার ইচ্ছাকে প্রভাবিত করে না।"
তবে, এক্ষেত্রে একটি বিষয়ে সতর্কও করে দেন ক্লেইন।
তিনি বলেন, "আপনি যদি লক্ষ্যের প্রতি যত্নশীল না হয়ে কাউকে খুশী করার উদ্দেশ্যে কাজ করেন, তাহলে তা আপনার কর্মক্ষমতাতে প্রভাব ফেলতে পারে।"
- সূত্র- বিগথিংক