সত্যেন্দ্রনাথ বসু: ডুডল এঁকে বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানীকে গুগলের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
শনিবার ডুডলের মাধ্যমে ভারতীয় পদার্থবিজ্ঞানী এবং গণিতবিদ সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে শ্রদ্ধা জানাল গুগল। বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেটে তার অবদান একটি ডুডলের মাধ্যমে উদযাপন করা হয়েছে।
সত্যেন্দ্রনাথ বসু তার কোয়ান্টাম ফর্মুলেশনগুলো অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের কাছে পাঠিয়েছিলেন। তিনি এটিকে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের একটি উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে সত্যেন্দ্রনাথ বসু বিজ্ঞানে স্নাতকের জন্য কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত গণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। দুটি ডিগ্রিতেই তিনি তার ক্লাসে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।
১৯১৭ সাল নাগাদ সত্যেন্দ্রনাথ বসু পদার্থবিদ্যায় অধ্যাপনা শুরু করেন। স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের প্ল্যাঙ্কের বিকিরণ সূত্র শেখানোর সময় পার্টিকেল গণনা করার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন জাগে তার।
এরপর তিনি নিজস্ব তত্ত্ব নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন।
'প্ল্যাঙ্কস ল অ্যান্ড দ্য হাইপোথিসিস অফ লাইট কোয়ান্টা' নামে এক গবেষণায় তার গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু।
কিন্তু 'দ্য ফিলোসফিক্যাল ম্যাগাজিন' নামের এক বিশিষ্ট বিজ্ঞান জার্নালে পাঠানোর পর তারা তার গবেষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করে।
এরপর তিনি গবেষণাপত্রটি সরাসরি আলবার্ট আইনস্টাইনের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।
আইনস্টাইন এই আবিষ্কারের তাৎপর্য উপলব্ধি করেছিলেন। সত্যেন্দ্রনাথের সূত্রটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছিলেন আইনস্টাইন।
তার এই থিওরি পেপারটি কোয়ান্টাম তত্ত্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত। আলবার্ট আইনস্টাইনের সঙ্গে যৌথভাবে এটি বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান হিসাবে পরিচিত।
'বোস পরিসংখ্যান'-কে মেনে চলা কণার শ্রেণি পরবর্তীতে 'বোসন' নামে পরিচিত হয়। বিজ্ঞানী পল ডিরাক এই নামকরণ করেন।
পদার্থবিজ্ঞানে তার অসীম অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ভারত সরকার সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে পদ্মবিভূষণে ভূষিত করে। তাকে 'ন্যাশানাল প্রফেসর' সম্মানও দেওয়া হয়।
সত্যেন্দ্রনাথ বসু ইন্ডিয়ান ফিজিক্যাল সোসাইটি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স, ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটসহ বহু নামজাদা বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
তিনি বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিলের উপদেষ্টা ছিলেন। পরে রয়্যাল সোসাইটির ফেলো হন।