বিলিয়নিয়ার থেকে যেভাবে নিঃস্ব হলেন তারা!
এই পৃথিবীতে অবিশ্বাস্যরকম ধনী অনেকেই ছিলেন, এখনো আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। এদের কেউ কেউ আছেন নিজ দক্ষতা-গুণে ধনী, আবার 'আঙুল ফুলে কলাগাছ', অর্থাৎ হঠাৎ ধনী হওয়ার মতো ব্যাপারও রয়েছে প্রচুর! কিন্তু সবাই কি এই বিপুল ধনসম্পদ ধরে রাখতে পারেন? নাকি আবেগের বশে কিংবা স্রেফ খামখেয়ালিপনায় নিজেকে নিঃস্ব করে দেন? এমন উদাহরণ তো ভূরি ভূরি রয়েছে। আজ তেমনই কিছু ধনীদের গল্প বলবো, ধনী হওয়া যাদের ঠিক ধাতে সয়নি!
আইক বাতিস্তা
আইক বাতিস্তা ফুটপাত থেকে সিংহাসনে উঠে আসা কোনো 'হঠাৎ ধনী' ছিলেন না। কারণ বাতিস্তার বাবা ছিলেন ব্রাজিলের পূর্ববর্তী দুই সরকারের আমলে খনি ও জ্বালানি মন্ত্রী। তাই বাতিস্তার পরিবারের সাথে থনি, গ্যাস, তেল সম্পৃক্তই ছিল। তখন অন্যান্য উদ্যোগকে সহায়তার জন্য বড় অবকাঠামো প্রকল্পের অর্থায়ন করা একটি যৌক্তিক পদক্ষেপ ছিল। ২০১২ সালের শুরুতে বাতিস্তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ সেসময় বিশ্বের সপ্তম ধনী ব্যক্তি ছিলেন তিনি।
কিন্তু সেই সুখ বেশিদিন ভাগ্যে ছিল না বাতিস্তার। বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকা থেকে শীঘ্রই ছিটকে পড়েন এই ধনকুবের। ২০১৩ সালে, এক বছরের মধ্যেই তার সম্পদের পরিমাণ ১ বিলিয়ন কমে যায়। তবে এতে বাতিস্তার একার দোষ নয়। মূল্যবান ধাতু শিল্পে মন্দা, নিম্নমানের সম্পদ এবং দুর্বল সিদ্ধান্তের কারণে ভুক্তভোগী হয়েছেন তিনি। কিন্তু বাতিস্তার জীবনে পতনের সবচেয়ে বড় কারণ হলো রিও ডি জেনেইরোর গভর্নরকে ঘুষ দেওয়ার অপরাধে ৩০ বছর জেলে কাটানো। বাতিস্তা কেন কখনোই আর ধনী হতে পারেননি? কারণ পুঁজিবাদী অর্থনীতি মুক্ত বাজারের উপর নির্ভর করে। বালির উপর কেউ ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়ে তুললে তা অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে, আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে এবং লোকেদের পেনশন প্রদান করে এমন বিনিয়োগ মুছে ফেলে।
জ্যাক হুইটেকার
ধনী হওয়ার জন্য লটারি জিততে হয়নি ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা জ্যাক হুইটেকারকে। নির্মাণ-শিল্পের ব্যবসায়ে যুক্ত থেকে এমনিতেই টাকার পাহাড় গড়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২০০২ সালে তিনি পাওয়ারবল মাল্টি-স্টেট লটারিতে জ্যাকপট জিতেন এবং এই পুরস্কারের মূল্য ছিল ৩১৫ মিলিয়ন। কিন্তু তখনই একটি ভুল সিদ্ধান্ত নেন হুইটেকার, তিনি ওয়ান-অফ নগদ অর্থ নিতে চান। ফলে কর পরিশোধের পর একবারে ১১৩ মিলিয়ন ডলার থেকে যায় তার পকেটে।
হুইটেকার ছিলেন দয়ালু মনের মানুষ, তাই আগেই পুরস্কারের ১০ শতাংশ দান করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি জ্যাক হুইটেকার ফাউন্ডেশন খোলেন এবং ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে কাপড় ও খাবার বিতরণের সিদ্ধান্ত নেন। যেই লোকটি তাকে লটারির টিকিট কিনে এনে দিয়েছিল, তাকেও তিনি পুরস্কৃত করেন। শুধু তাই নয়, নিজের নতুন স্পোর্টিং গাড়ি থেকে নিজ মহল্লায় আক্ষরিক অর্থেই টাকা উড়ান হুইটেকার!
কিন্তু ২০০৩ সালে হুইটেকারের গাড়ি থেকে ৫ লাখ ডলার চুরি হয় এবং এরপর থেকে তার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। হুইটেকারের টিনেজ নাতনি ব্র্যান্ডি বিলাসবহুল গাড়ি-উপহা্রের পেছনে তার টাকা উড়িয়ে দেয়। ব্র্যান্ডির বয়ফ্রেন্ড মাদক নিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে এবং তার মৃতদেহ আরেক বন্ধুর বাসস্থানে পাওয়া যায়। নাতনিও মাদক নিতে থাকে এবং এসব ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন হুইটেকার। তাছাড়া হুইটেকারের নিজেরও জুয়া খেলার অভ্যাস ছিল এবং ঋণের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে পড়েন। এদিকে তার বাড়িটি বীমা না করা থাকায় সেটিও ভেঙে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ২০২০ সালে জ্যাক হুইটেকার মারা যান।
এলভিস প্রিসলি
নিজের চোখ ধাঁধানো ক্যারিয়ারে এলভিস প্রিসলি প্রচুর টাকা আয় করেছেন। কিন্তু তিনি জানতেন না কীভাবে এই টাকা পরিমিত উপায়ে ব্যয় করতে হবে। বিলাসী লাইফস্টাইল ও বন্ধুদের খাওয়ানোর পেছনে প্রচুর খরচ করতেন এই তারকা। যে হোটেলে থাকতেন, সেই হোটেল কক্ষ নিজের বাড়ির মতোই সাজানোর জন্য টাকা দিতেন তিনি! ১৯৭৭ সালে যখন এলভিস প্রিসলি মারা যান, সে সময় তিনি প্রায় সর্বস্বান্ত ছিলেন।
টাকা কখনোই খ্যাতনামা এই গায়ককে সুখ দিতে পারেনি। তার মৃত্যুর পর তার সাবেক স্ত্রী প্রিসিলা তার এস্টেটের ভার নেন, কারণ তাদের মেয়ে লিসা মারি তখনো খুব ছোট ছিল। এলভিস প্রিসলির ব্যবসার দিকে কোনো ঝোঁক না থাকলেও, তার স্ত্রীর ছিল। সামান্য পুঁজি থেকেই তিনি ১০০ মিলিয়ন ডলারের মতো আয় করে নেন।
ডেভিড লি এডওয়ার্ডস
আমরা জানিনা ঠিক কত টাকা থাকলে ডেভিড লি এডওয়ার্ডস নিজের ভাগ্য ফেরাতে পারতেন আবার। তবে টাকা তিনি প্রচুর উপার্জন করেছেন! শুধু উপার্জনের পদ্ধতিটা ছিল অবৈধ।
এডওয়ার্ডস ছিলেন একজন সশস্ত্র ডাকাত, যিনি জীবনের এক-তৃতীয়াংশই জেলে কাটিয়েছেন। সর্বস্বান্ত ও বেকার অবস্থায় ঘুরে ফিরছিলেন তিনি। পকেটে থাকা সামান্য টাকা দিয়ে পিজ্জা খাওয়ার পর কিছু টাকা বেচে গিয়েছিল। তা দিয়েই লটারির টিকিট কিনে জিতলেন ২৭ মিলিয়ন ডলার! এরপর সংবাদ সম্মেলুন করে জানালেন, আর কোনোদিন আগের জীবনে ফিরে যাবেন না এবং নিজের মেয়ের দেখাশোনা করবেন। কিন্তু লটারির টাকা পাওয়ামাত্রই দুই হাতে উড়াতে শুরু করেন এডওয়ার্ডস। দামি বাড়ি-মহল, গ্যাজেট থেকে শুরু করে শরীরে দামি মাদক। এডওয়ার্ডস ও তার স্ত্রী-কন্যা, সবাই মাদকের উপর তীব্র আসক্ত ছিলেন। ২০০৬ সালের মধ্যে বাড়ি-গাড়ি হারিয়ে তাদের জায়গা হয় স্টোরেজ ইউনিটে। এর কিছুদিন পরেই এডওয়ারডসের স্ত্রী তাকে ছেড়ে যান। ৫৮ বছর বয়সে কেন্টাকিতে কপর্দকশূন্য অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
মাদাম মেয়র
ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগোর বাসিন্দা মরিন ও'কনোর ছিলেন তার শহরের প্রথম নারী মেয়র। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত এই পদে ছিলেন তিনি। 'জ্যাক ইন দ্য বক্স' নামের ফাস্ট-ফুড চেইনের মালিক রবার্ট ও পিটারসনকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। ১৯৯৪ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর মরীনের ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৪০-৫০ মিলিয়ন ডলার।
কিন্তু খুব শীঘ্রই ক্যাসিনোতে জুয়া খেলার পেছনে নিজের সব টাকা উড়িয়ে দিতে থাকেন এই রাজনীতিবিদ। শুধুমাত্র ক্যাসিনোতেই ১৩ মিলিয়ন ডলার হারান তিনি। এছাড়া, স্বামীর দাতব্য সংস্থার ২ মিলিয়ন টাকারও অপব্যবহার করেন তিনি। শোনা যায়, ভিডিও পোকার খেলে এই টাকা নষ্ট করেছিলেন তিনি। জুয়াখেলার টাকা যোগাতে নিজের জমানো শেষ পয়সাটি বের করে আনেন মরীন এবং নিজের বাড়ি বন্দক রেখে দ্বিতীয় ও তৃতীয়বারের মতো টাকা আনেন। জুয়া খেলতে খেলতেই একসময় ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হন মরীন। ফলে ২০১৫ সালে বিচারক তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খারিজ করে দেন।
প্যাট্রিসিয়া ক্লাজ
সফল ব্যবসসায়ী থেকে হয়েছিলেন টেলিভিশন মুঘল। একসময় আমেরিকার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিই ছিলেন মার্কিন ব্যবসায়ী জন ওয়ের্নার ক্লাজ। মানবসেবার অভ্যাস তো ছিলই, কিন্তু সেই সাথে ছিল বিয়ে করার বাতিক! চারটি বিয়ে করেছিলেন এই ব্যবসায়ী ভদ্রলোক এবং তৃতীয় স্ত্রীই হলেন এই প্যাট্রিসিয়া। ১৯৯০ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয় এবং ভার্জিনিয়ার চারলটসভিলে সাবেক স্বামীর আলবামার্লে এস্টেট নিজের কাছে রেখেন দেন প্যাট্রিসিয়া।
৪৫টি কক্ষবিশিষ্ট এই এস্টেটে ধনাঢ্য ব্যক্তিরা পার্টি করতেন। ওয়ের্নারের সাথে বিচ্ছেদের পর নতুন স্বামীর সাথে ১৯৯৯ সালে সেখানে 'ক্লাজ এস্টেট ওয়াইনারি' খোলেন প্যাট্রিসিয়া। উদ্দেশ্য ছিল এখানে বিশ্বের সেরা ভিন্টেজ মদ বানানো। এই প্রকল্প শুরুর জন্য টাকাও ভালোই পুঁজি ছিল তাদের। কিন্তু দেখা গেলো যা পুঁজি ছিল, টাকা দরকার তার চেয়ে অনেক বেশি। তখন ৬৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেন প্যাট্রিসিয়া, কিন্তু সেগুলো পরিশোধে ব্যর্থ হন। ২০০৮ সালে অর্থনৈতিক মন্দার সময় এস্টেট বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই এস্টেট কিনে নেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন এটি ট্রাম্প ওয়াইনারি নামে পরিচিত। কথায় আছে, ধনী হওয়া সম্ভব, কিন্তু সেই সম্পদ ধরে রাখা কঠিন। আর প্যাট্রিসিয়া যেন সেই সেই ফাঁদেই পা দিয়েছিলেন!
আতাহুয়ালপা
নিজের প্রচেষ্টায় ধনী হননি আতাহুয়ালপা। তিনি ধনী ছিলেন কারণ তিনি আতাহুয়ালপা। কিন্তু তার সম্পদ হারানোর কারণও তিনি নিজে নন, বরং ইতিহাসই তাকে সর্বস্বান্ত করেছে। বলা হচ্ছে ইনকা জাতিগোষ্ঠীর শেষ সম্রাটের কথা, যিনি সম্রাট হয়েও সেই সুখ উপভোগ করতে পারেননি। কারণ স্প্যানিশরা তাদের আক্রমণ করে সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিয়েছিল।
কেন নামের জেরেই ধনী ছিলেন আতাহুয়ালপা? কারণ ইনকা সমাজে গাছের ফল থেকে শুরু করে পাহাড়-পর্বত সবকছুর মালিকই সম্রাট। স্প্যানিশরা এ ভূমি আক্রমণের পর আতাহুয়ালপাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় এবং তার সব সম্পত্তি চলে যায় স্প্যানিশদের কাছে। তবে হঠাৎ করে এই বিপুল সম্পত্তির মালিক হওয়ায় স্প্যানিশ সাম্রাজ্যের ক্ষতিই হয়েছিল। ডাচ, ব্রিটিশ ও অন্যান্যরা বাণিজ্যের ভিত্তিতে সাম্রাজ্য তৈরি করেছিল। কিন্তু স্প্যানিশদের কাছে সেই লুট করা সম্পদ ছাড়া কিছু ছিল না।
ভিভ নিকোলসন
অনলাইন জুয়াখেলা আসার আগে ব্রিটেনের মানুষ 'ফুটবল পুল' নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফুটবল ম্যাচের উপর বাজি ধরতো। পরদিন শনিবার যেসব ম্যাচ হবে, সেগুলোর ৮টির স্কোর যদি আগে থেকে বলতে পারেন, তাহলে প্রচুর টাকা লটারিতে জেতার সুযোগ ছিল। আমাদের গল্পের নায়িকা ভিভ নিকোলসনের জন্ম দারিদ্র্যের মধ্যে। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই গর্ভবতী হয়েছিলেন তিনি। ১৯৬১ সালে ভিভের দ্বিতীয় স্বামী কেইথ যখন ফুটবল পুল জিতেন, তখন তিনি চার সন্তানের জননী।
লটারির পুরস্কার হিসেবে ১ লাখ ৫২ হাজার ডলার, আজকে দিনে যা ৩ মিলিয়নের কাছাকাছি- জিতেছিলেন কেইথ। লটারি জিতার পর যখন তাদের প্রশ্ন করা হলো, এত টাকা দিয়ে কি করবেন; তখন তাদের উত্তর ছিল- 'শুধু খরচ করবো, অনেক খরচ করবো!' আসলে করেছিলেনও তাই! লটারির শেষ পয়সাটি পর্যন্ত তারা শেষ করেছিলেন। পরে ভিভ জানান, এত টাকা একসাথে পেয়ে দিশা হারিয়ে ফেলেছিলেন তারা। এই টাকা তাদেরকে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল।
জেরাল্ড মুসোয়াগন
জেরাল্ড মুসোয়াগন ধনী ছিলেন না ঠিকই, তবে পরিবারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও স্নেহার্দ্র সম্পর্ক ছিল তার। ১৯৯৮ সালে দুই ডলার দিয়ে একটি লটারির টিকিট কিনেই বাজিমাত করেন জেরাল্ড, পেয়ে যান ১০ মিলিয়ন ডলার। এর অনেকটাই বিলাসপণ্য ও উপহার কেনার পেছনে ব্যয় করেন তিনি। আর বাকিটা নিজের ব্যবসায়ে বিনিয়োগের চেষ্টা করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, বিক্রিবাট্টা কম হওয়ায় তার ব্যবসায়ে লোকসান হয়। জেরাল্ডের টাকার দিকে অনেকেরই ছিল চিল-দৃষ্টি, তারাই তাকে ঘিরে রাখতো। কিন্তু প্রয়োজনের সময় কারো কাছ থেকে সঠিক নির্দেশনা-পরামর্শ পাননি তিনি। ২০০২ সালে তার স্ত্রী মারা গেলে পুলিশের সাথেও ঝামেলা শুরু হয় তার। জেরাল্ড মুসোয়াগন নিজের বাবা-মায়ের গ্যারেজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
ইবি রনকাইওলি
জন্মসূত্রে হাঙ্গেরিয়ান হলেও পরেও কানাডা চলে এসে একজন সফল গাইনোকোলজিস্টকে বিয়ে ইবি রনকাইওলি। টাকার অভাব ছিল না বটে, কিন্তু তা সত্ত্বেও একদিন লটো গেমের টিকিট কেনেন বন্ধুর সাথে মিলে। ১৯৯১ সালে লটারিতে ১০ মিলিয়ন ডলার জিতেন তারা দুজন এবং টাকা সমান ভাগ করে নেন। স্বামীকে না জানিয়েই লটারির টাকা খরচ করতে শুরু করেন, যদিও খুব বেশি টাকা নিজের পেছনে ব্যয় করেননি। তার টাকার সিংহভাগ গিয়েছিল তার তিন ছেলের পেছনে। এদের মধ্যে এক ছেলে ছিল তার বর্তমান স্বামীর, একজন তার আগের স্বামীর সংসারের এবং তৃতীয়জনের ব্যাপারে তার কোনো স্বামীই কিছু জানতেন না।
বেশিরভাগ মানুষই রনকাইওলি দম্পতিকে হাসি-খুশি হিসেবে জানতেন। ২০০৩ সালে ইবি রনকাইওলি মারা যান। প্রথমে স্বাভাবিক মৃত্যু মনে করা হলেও, পরে তার দেহে বিষাক্ত পেইনকিলার ও অ্যালকোহলের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তার পায়ে ও পায়ের পাতায়ও ছিল সুঁইয়ের ফুটোর দাগ। রনকাইওলি হত্যার দোষে অভিযুক্ত হন তার ৭২ বছর বয়সী স্বামী। এবং তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই জুটির মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ডলার।
সূত্র: লিটলভার্স