অকার্যকর লকডাউন, ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ, এরপর কী...
করোনার প্রথম ঢেউ চলাকালে বারো মাস আগে বিশ্বকে অনুসরণ করে বাংলাদেশ প্রথম বারের মতো দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করে। 'সবার আগে জীবন"- এই ধারণার বশবর্তী হয়ে জনসাধারণ সেই লকডাউন বেশ স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নেয়।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ লকডাউনের ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ না নিলেও ব্যবসা-বাণিজ্য, কারখানা, স্কুল, অফিস-আদালত সব বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি রাস্তাঘাটও ফাঁকা হয়ে পড়ে। লকডাউনের বিধিনিষেধে কিছু শিথিলতা আসার আগ অবধি প্রায় দুই মাসের বেশি সময় ধরে জীবনযাত্রা স্তিমিত হয়ে পড়ে।
অথচ, এবার লকডাউন আরোপে কঠোর পদক্ষেপ অনুসরণ করা না হলেও জনরোষসহ দেখা দিয়েছে বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচী। গত বছর উপার্জন হারিয়ে যারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের জন্য এবার জীবিকাই মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরকার এবার লকডাউন নীতিমালা প্রণয়নে নির্ধারিত ক্ষেত্র বেছে নিয়েছে। দেশের মানুষের জীবন রক্ষার পাশাপাশি অর্থনীতি রক্ষার দিকেও রাখা হয়েছে পূর্ণ দৃষ্টি। গণপরিবহন চলাচল সীমিত এবং বাজার ও দোকানপাট বন্ধ রাখা হলেও শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কারখানা, সরকারি ও বেসরকারি অফিসগুলো খোলা থাকছে।
কিন্তু, এত সব নীতিমালা সত্ত্বেও নগরের রাস্তাঘাটে রিকশা, গাড়ি ও অন্যান্য যানবাহনের ভিড় নজরে আসছে। মানুষ তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ও চলাফেরা বজায় রেখেছে। স্বাভাবিক এই জনযাত্রা প্রত্যক্ষ করার কারণেই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও তাদের দোকানপাট চালু করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা গত বছরের লকডাউনে যে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তা বিবেচনায় আনলে তাদের এই আন্দোলন যৌক্তিক বলেই মনে হবে। পহেলা বৈশাখ ও ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন। কিন্তু, সপ্তাহব্যাপী লকডাউনে তারা আবারও বড় ধরনের লোকসানের সম্মুখীন হতে চলেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নিজেদের স্বার্থে নিজ উদ্যোগেই মাঠে নামছেন তারা। নতুন এই লকডাউনে তাদের উপার্জনের যে ক্ষয়ক্ষতি হবে, তার ক্ষতিপূরণ হিসেবে কোনো অর্থ সহায়তাও গৃহীত হয়নি।
উন্নত অর্থনীতিগুলো, দিনমজুর, নিম্ন আয় ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের গত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য বিভিন্ন আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করেছে।
গত বছর বাংলাদেশও প্রণোদনা এবং নগদ সাহায্য প্রদানের উদ্যোগ নেয়। তবে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তার খুব সামান্য অংশই পেয়েছেন। এ বছর লকডাউনের আগে কোনো সহায়তা প্রস্তাবনাই আসেনি।
উদাসীনতা
অর্থনীতিবিদ এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা লকডাউনের নীতিমালা নিয়ে উদাসীনতার সমালোচনা করেছেন। এর ফলে স্বাস্থ্যবিধি বহির্ভূত পদক্ষেপ গ্রহণের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
রাজপথ উন্মুক্ত রেখে সংক্রমণ ঝুঁকি বৃদ্ধি করে, কিছু মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করা হলে কেবলমাত্র অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ জাহিদ হুসাইন।
বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা দপ্তরের সাবেক প্রধান এই অর্থনীতিবিদ আরও জানান, "বাংলাদেশে লকডাউনের মতো পদক্ষেপ কার্যকরী হবে না। এটা এক ধরনের বাস্তবতা। কঠোরভাবে লকডাউন গৃহীত হলে যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের জীবিকা নির্বাহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।"
দেশের অধিকাংশ মানুষের কর্মসংস্থানই অনিশ্চিত। এই জনগোষ্ঠীর জীবিকা নির্বাহের দুর্দশা উল্লেখ করে জাহিদ হুসেইন বলেন, "কিছু বিধিনিষেধের কারণে দিন-মজুর, পরিবহন, রেস্টুরেন্ট, সেলুনের কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কেননা, মানুষ প্রথমেই তাদের পরিষেবা গ্রহণ করা থেকে সরে আসবে।"
ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোও ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে সতর্ক করেন তিনি।
২০২০ সালের মার্চে প্রথম বারের মতো সব বন্ধ ঘোষণা করা হলে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তাদের খুব সামান্য অংশই সরকারের প্রণোদনা ঋণ সহায়তার আওতায় আসতে পেরেছিল।
অরক্ষিত অনিশ্চিত খাত
অনিশ্চিত খাত বা ইনফরমাল সেক্টরের সবথেকে বড় অংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। অথচ এই কর্মসংস্থানগুলো ঝুঁকিমুক্ত নয়। গত বছর বাংলাদেশে সাধারণ ছুটি শুরু হলে সব কিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাজার, দোকানপাট, পরিবহন, রেস্টুরেন্ট এবং ছোটোখাটো ব্যবসায় জড়িত লাখ লাখ মানুষ রাতারাতি কর্মসংস্থান হারায়।
দেশে কোনো বেকার সুবিধা নেই। অনিশ্চিত খাতের জনবল সম্পর্কিত কোনো তালিকা না থাকায় সরকার ঘোষিত নগদ সাহায্যও চাকরি হারানো গুটিকয়েক কর্মচারীর কাছে পৌঁছায়।
স্থানীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) এক জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোভিড-১৯ এর কারণে লকডাউন ঘোষণায় বাংলাদেশে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ তাদের কর্মসংস্থান হারায়। কর্মসংস্থান হারিয়ে ২০ শতাংশের অধিক লোক নতুন করে দারিদ্র্যের সম্মুখীন হন।
বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী কোভিড -১৯ এর কারণে এক কোটি ৬৫ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীতে যুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৫০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যে পতিত হন।
অ্যাসোসিয়েশন অব হোটেল ওয়ার্কার্স জানায়, চাকরি হারানোর ফলে সবথেকে বেশি ভোগান্তির শিকার হয়েছেন হোটেল কর্মীরা। ২০২০ সালের জুনে সরকার জনপ্রতি আড়াই হাজার টাকা অর্থ সাহায্য প্রদানের ঘোষণা করলেও কর্মীরা তা পাননি বলে জানায় সংগঠনটি।
রবিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, এবারের লকডাউনের কারণে হোটেল খাতের প্রায় ৩০ লাখ কর্মী কর্মসংস্থান হারাবে বলে ধারণা করছেন তারা। শ্রম মন্ত্রণালয়ের কাছে চাকরির সুরক্ষা নিশ্চিত করা ছাড়াও হোটেল বন্ধের ভিত্তিতে জনপ্রতি মাসিক ১০ হাজার টাকা সাহায্য প্রদানের আবেদনও জানানো হয়।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন ও উপার্জনের উপর কঠোর প্রভাব সত্ত্বেও, ঢিমেতালে চলা লকডাউন সংক্রমণ মাত্রা কমাতে সাহায্য করেছে।
বৈশ্বিকভাবে, উন্নত স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি বহির্ভূত পদক্ষেপগুলোর কারণে মহামারিতে মৃতের সংখ্যা ৩০ লাখ পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ, বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর ০.০৪ শতাংশের প্রাণহানি ঘটেছে। মাত্র এক শতাব্দী আগে স্প্যানিশ ফ্লুতে মৃতের সংখ্যা ছিল চার কোটি, যা ছিল বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২.১ শতাংশ।
কিন্তু, বাংলাদেশসহ এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ এক ভয়াবহ মোড় নিয়েছে। ফলে, বাধ্য হয়েই দেশগুলোতে লকডাউনের সময়সূচী বাড়াতে হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী লকডাউনের বিরুদ্ধে জোরদার হচ্ছে আন্দোলন
করোনায় তৃতীয় ওয়েভ মোকাবেলায় চলাফেরায় সীমাবদ্ধতা আরোপের প্রতিবাদে উন্নত বিশ্বে চলছে আন্দোলন। ইউরোপের বিভিন্ন শহরে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নেমেছেন আন্দোলনকারীরা।
সরকার বর্ণিত জরুরি অবস্থার সাথে মিল খুঁজে না পাওয়ায় লকডাউন বাতিল ঘোষণা করেছে নেদারল্যান্ডসের এক আদালত। সুইজারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড থেকে শুরু করে জার্মানি ও কানাডাতেও জীবনযাত্রা ও চলাফেরায় প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনগণ।
তবে, তাদের উদ্বেগের জায়গাটি বাংলাদেশের মতো নয়। তারা সংক্রমণ মাত্রা অপেক্ষা স্বাধীন জীবনযাত্রাকে বড় করে দেখছেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশের মানুষ তাদের ব্যবসা, জীবিকা ও কর্মসংস্থান রক্ষার তাগিদে মাঠে নেমেছেন।
ঢাকা, চট্টগ্রামসহ অন্যান্য প্রধান শহরের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। পহেলা বৈশাখ এবং ঈদ-ঊল-ফিতরের মতো বড় দুই উদযাপনকে কেন্দ্র করে দোকানপাট খোলা রাখার দাবিতে সরব হয়েছেন তারা।
কানাডায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষজ্ঞরা বারবার লকডাউনের তাগিদ দিলেও মানছেন না আন্দোলনকারীরা। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দেশে দৈনিক শনাক্ত ও মৃত্যুসংখ্যা সর্বোচ্চ হওয়ায় বাংলাদেশেও বিশেষজ্ঞরা কঠোর লকডাউনের পক্ষে মত দিয়েছেন।
গতকাল, দেশে শনাক্তের সংখ্যা ছিল সাত হাজার ২১৩। অন্যদিকে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন আরও ৬৬ জন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বেশ ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে দুই সপ্তাহের পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের আহ্বান জানান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক মুজাহের-উল হক সংবাদ সংস্থা ইউএনবিকে বলেন, "লকডাউনের অর্থ হল সবকিছু বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র, ফার্মেসি ও নির্দিষ্ট কিছু বাজারসহ জরুরি সেবাদান ব্যবস্থা চালু থাকবে।"
আংশিক লকডাউনের বিষয়টিকে "কেবলমাত্র শক্তি ও অর্থের অপচয়" বলে মন্তব্য করেন ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।
ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪ দিনের পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের দাবি জানান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এমএইচ চৌধুরী লেনিন।
তবে, পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ করে অফিস ও কারখানা খোলা রাখার মাধ্যমে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ অনেকটা অসম্ভব বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কোনো ভাবেই পরিস্থিতি এড়াতে সক্ষম না হওয়ায় সরকারের জন্য একটি "ক্যাচ-২২' অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল এক সিদ্ধান্তে সরকার ঢাকা ও অন্যান্য নগরে আজ থেকে বাস চলাচলের অনুমতি প্রদান করে।
সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, "শহরের অভ্যন্তরে সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বাস চলাচল করবে।"
এদিকে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ বেড়েই চলেছে।
ঝুঁকিতে বৃহত্তম ব্যবসার মৌসুম
পহেলা বৈশাখের মাত্র এক সপ্তাহ আগে, এক একটি দিন বন্ধের জন্য বিপুল পরিমাণ লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারা। ব্যবসা বন্ধ রাখার কারণে কোটি টাকার বিনিয়োগ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা। একই সাথে ঝুঁকিতে আছে লাখ লাখ কর্মচারীর উপার্জন সংস্থান।
দ্বিতীয় দিনের মতো গণ পরিবহন বন্ধ রাখায় সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবী, সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী এবং যাত্রীরা চরম ভোগান্তির সম্মুখীন হন।
রাইড-শেয়ারিং সেবাগুলো দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমাতে পারত। তবে, এই পরিষেবাটির উপরও নেমে এসেছে নিষেধাজ্ঞা। ঢাকায় বাইক চালকরাও বিক্ষোভে অংশ নেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ অনুযায়ী, প্রায় এক লাখ ৩৯ হাজার মানুষ অ্যাপভিত্তিক বাইক এবং গাড়ি পরিবহন সেবাদানের সাথে জড়িত আছেন। অর্থনীতিতে, তাদের বার্ষিক অবদান প্রায় আট হাজার ৩৪২ কোটি টাকা।
বিবিএসের সর্বশেষ জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, যন্ত্রচালিত এবং অ-যান্ত্রিক পরিবহন মিলিয়ে পরিবহন খাতে যাত্রীবাহী ২৪ লাখ বাহনে ২৯ লাখ মানুষ কাজ করেন।
২০১৭ সালে বিবিএস প্রকাশিত জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৮৭ লাখ মানুষ পাইকারি ও খুচরা ব্যবসার সাথে জড়িত। অন্যদিকে, হোটেল, রেস্টুরেন্ট এবং পরিবহন খাতে কাজ করেন আরও এক কোটি মানুষ। মোট জনবলের ৮৫ শতাংশই অনিশ্চিত খাতের কর্মী।
কঠোর লকডাউনের অর্থ হল, এই মানুষগুলোর উপার্জন সীমিতভাবে কিংবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে।
সেন্ট্রাল ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ডক্টর ফাহমিদা খাতুন জানান, অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে জীবিকার তাগিদে সামনে এনেছে। নতুন লকডাউন গ্রহণের অর্থ হল, নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত করা। যার ফলে, এবার তারা আরও বেশি মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গতবার, ৫০ লাখ মানুষকে অর্থ সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত সরকারি প্রকল্প পুরোপুরি সফল না হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, "সম্পূর্ণভাবে লকডাউন জারি করা হলে, সরকারকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবিকা নির্বাহের দায় নিতে হবে। সবার আগে অতি দরিদ্র গোষ্ঠীর কাছে খাদ্য ও অর্থ সহায়তা পৌঁছে দিতে হবে।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ডক্টর সায়েমা হক বিদিশা বলেন, "নিম্ন আয়ের মানুষ গত লকডাউনের সময় তাদের সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করেছেন। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা উৎসবের মৌসুম কেন্দ্র করে ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় বুক বেঁধেছেন। তাদের পক্ষে আরেকটি লকডাউনে সম্মত হওয়া বেশ কঠিন।"
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ভাড়া ও ইউটিলিটি বিল মওকুফ এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে স্বল্পমেয়াদী কঠোর ও কার্যকরী লকডাউনের পক্ষে মত দেন তিনি।
- সংবাদটি ইংরেজিতে পড়ুন: Unworkable lockdown, galloping infection
- অনুবাদ: তামারা ইয়াসমীন তমা