বগুড়ার ব্লাড ব্যাংকে রক্তের রঙ সবুজ!
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বর্ষণ মেডিসেন অ্যান্ড সার্জিকাল নামে একটি ওষুধের দোকানে অভিযান চালিয়ে তিনজনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অনুমোদনহীন ব্লাড ব্যাংক, বেশি দামে ওষুধ বিক্রি, ড্রাগ নিবন্ধন ছাড়া ওষুধ বিক্রিসহ আরও কয়েকটি অপরাধের শনিবার তাদের সাজা দেওয়া হয়।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, দোকানের ব্যবস্থাপক নিহার রঞ্জন দাস, কর্মচারী মো. সুমন শেখ ও রাসেল। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ওই দোকানের ৭০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। তবে দোকানের মালিক বিপ্লব হোসেন বিপুল অভিযানের সময় দোকানে ছিলেন না।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম এটিএম কামরুল ইসলাম বলেন, ওষুধ আইন ১৯৪০-এর ২৭ ধারায় নিহার, রাসেল ও সুমনকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ওষুধের দোকানের চাবি সিলিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির মাধ্যমে স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে জমা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাজাপ্রাপ্তরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে ব্যাপকভাবে প্রতারণা করে আসছিলেন। তারা একইসঙ্গে বিভিন্ন অপরাধ করেছেন।
শনিবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম ও বগুড়া জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার এটিএম কামরুল ইসলাম ওই আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ড্রাগ সুপার আহসান হাবিব, পৌরসভার স্বাস্থ্য পরিদর্শক শাহ আলী এবং আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ও জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা।
অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানান, জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে বগুড়ার ধুনট এলাকার এক নারী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার জন্য শুক্রবার রাতে ওষুধ কিনতে মেডিকেলের সামনে সিলিমপুর এলাকায় বর্ষণ মেডিসিন অ্যান্ড সার্জিকালে যান তার স্বামী জহুরুল ইসলাম। তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়ার পর দাম রাখা হয় ১ হাজার ৬০০ টাকা।
ওষুধ হাতে নেওয়ার পর জহুরুল দেখেন, প্যাকেটের গায়ে দাম ও মেয়াদের জায়গায় বর্ষণ মেডিকেলে সিল মারা রয়েছে। এরপর তিনি দোকানের কর্মচারীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা করলে তার কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নেওয়া হয়।
রাতে ওষুধগুলো নিয়ে চলে যান জহুরুল। পরে তিনি জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা মেডিকেলের এক দালারের মাধ্যমে ওই দোকানের সন্ধান পান।
অভিযানে গিয়ে দেখা যায়, ওষুধের দোকানটির কোনো ড্রাগ লাইসেন্স নেই। অধিকাংশ ওষুধের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি ফ্রিজে ব্লাড রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকার পর রক্তের রঙ সবুজ আকার ধারণ করেছে। এছাড়া এ দোকানে অতিরিক্ত দামে ওষুধ বিক্রিরও প্রমাণ পান তারা।
এমনকি দোকানের পেছনে একটি পরিত্যক্ত কক্ষে মাদক (ইয়াবা) সেবনের সরঞ্জাম পাওয়া গেছে।