আওয়ামী মনোনীত ৪৪ চেয়ারম্যান ও ৩ মেয়র বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত
করোনা মহামারির কারণে স্থগিত প্রথম ধাপের ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন ও ষষ্ঠ ধাপের ৯টি পৌরসভার নির্বাচন চলছে আজ (সোমবার)। তবে নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ মনোনীত ৪৪ জন চেয়ারম্যান ও ৩ জন মেয়র পদপ্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
ইউনিয়ন পরিষদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাগেরহাটে। জেলাটিতে ৬৬টি ইউপির মধ্যে ৩৯টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।
আবার নির্বাচন বর্জন করার কারণে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি মাঠে না থাকায় বাকি ২৭ ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে এইদলেরই বিদ্রোহী প্রার্থীরা।
বাগেরহাটের বাইরে বিনা ভোটে জয়লাভ করা ইউপির মধ্যে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ৪টি এবং খুলনার একটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া, নয়টি পোরসভার মধ্যে কুমিল্লার লাঙ্গলকোট, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ও নোয়াখালীর কবিরহাট এর আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন।
আজ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীভাবে দেশের ৬টি জেলার ২৩টি উপজেলার ১৬০টি ইউনিয়নে ও আটটি জেলার নয়টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ চলবে।
যেসব জেলায় ইউপি নির্বাচন হবে এর মধ্যে বাগেরহাটে ৬৬টি, খুলনায় ৩৪টি, সাতক্ষীরায় ২১টি, কক্সবাজারে ১৪টি, নোয়াখালীতে ১৩টি ও চট্টগ্রামে ১২টি ইউনিয়ন রয়েছে।
পৌরসভাগুলোর মধ্যে রয়েছে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ, যশোরের নওয়াপাড়া, ফরিদপুরের ভাঙ্গা, কুমিল্লার লাঙ্গলকোট, ফেনীর সোনাগাজী, নোয়াখালীর কবিরহাট, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, কক্সবাজারের মহেশখালী ও চকরিয়া পৌরসভা।
উল্লেখ্য, দেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউপিতে কয়েক ধাপে ভোটগ্রহণ হবে। গত ৩ মার্চ প্রথম ধাপে ৩৭১টি ইউপির ভোটের তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। পরে করোনা পরিস্থিতির কারণে ভোট স্থগিত করা হয়। এরপর গত ২১ জুন ৩৭১টি ইউপিতে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ওইদিন নির্বাচন হয় ২০৪টিতে।
তফসিলের পর সীমান্তবর্তী জেলায় করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বাকি ১৬৭টি ইউপিতে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে ইসি। স্থগিত হওয়া ১৬৭টি ইউপির মধ্যে আজ ১৬০টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এছাড়া, আজ অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ ধাপের নয়টি পৌরসভা নির্বাচনও হওয়ার কথা ছিল ২১ জুন। করোনা পরিস্থিতির কারণে ১০ জুন তা স্থগিত করা হয়েছিল।
এদিকে, আজকের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দরকার।
রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মলনে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ইসি সচিব বলেন, "তফসিল অনুযায়ী, ১৬১টি ইউপি ভোট হওয়ার কথা থাকলেও আদালতের আদেশে মোড়লগঞ্জের নিশানবাড়িয়া ইউপি নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। তাই ১৬০ ইউপিতে ভোট হবে। এছাড়া নয়টি পৌরসভা এবং দুটি উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদেও ভোট হবে।"
"নির্বাচনী উপকরণ জেলায় জেলায় পৌঁছে গেছে। প্রশিক্ষণ হয়েছে। মাঠে মোতায়েন রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা", তিনি যোগ করেন।
সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১১ জন এবং ঝূঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৩ জনের ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ৮১ জন নির্বাহী ও নয়জন বিচারিক হাকিমসহ র্যাব, বিজিবির সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান হুমায়ুন কবির।
"আমরা যে প্রস্তুতি নিয়েছে তাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে বলে আশাকরি," বলেন তিনি।