আপিলেও জামিন মেলেনি খালেদার
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষের দেওয়া সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সরকারকে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতক্রমে এই আদেশ দিয়েছেন।
আদেশের পর খালেদার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, আপিল বিভাগ কোনো নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে জামিন আবেদন খারিজের আদেশ দেননি। লিখিত আদেশে কি কারণ উল্লেখ করে, সেটি দেখার পর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
তিনি বলেন, তবে এটি বলতে পারি আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। খালেদার জামিন পাওয়ার মতো যথেষ্ট কারণ ছিল। পৃথিবীর কোনো দেশেই এরকম নজির নেই।
আদালতের আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, মেডিকেল রিপোর্ট পর্যক্ষেণ করে আপিল বিভাগ উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খালেদার আইনজীবীরা যেসব কারণে জামিন চেয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এর আগে আপিল বিভাগের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, খালেদা জিয়ার যেসব সমস্যার কথা তার আইনজীবীরা আদালতে বলেছেন এগুলো অনেক পুরাতন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ৩০ বছর আগে থেকে আর্থ্রাইটিস, ২০ বছর আগে থেকে ডায়াবেটিস ও ১৯৯৭ সাল থেকে খালেদা জিয়া বাম হাটুতে সমস্যায় ভুগছেন। ফলে কারাগারে যাওয়ার পর নতুন করে কোনো রোগে আক্রান্ত হননি খালেদা জিয়া। সেকারণে তার জামিন দেওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই বলে আদালতে যুক্তি দেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে জামিন দেওয়া উচিত বলে অপিল বিভাগের শুনানিতে উল্লেখ করেন খালেদার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, এই আদালত দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এই আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। আমরা মানবিক কারণে খালেদা জিয়ার জামিন চাইছি। খালেদা জিয়া আদালতে গেলেন হাঁটতে-হাঁটতে। একজন সুস্থ মানুষ ছিলেন। কিন্তু আমরা দেখলাম, তার অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে।
আদালত তখন জয়নুল আবেদীনকে মেডিকেল প্রতিবেদন পড়ে শোনাতে বলেন।
তিনি আদালতকে বলেন, “আমি ডাক্তার না। তবু যেটুকু বুঝি, এই মেডিকেল প্রতিবেদন বলছে, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা দরকার। মানবিক কারণে আমরা খালেদা জিয়ার জামিন চাচ্ছি। তার অবস্থা এমন যে তিনি পঙ্গু অবস্থায় চলে গেছেন। হয়তো ছয় মাস পর তার অবস্থা আরও খারাপ হবে। আর কোথাও গিয়ে লাভ নেই। এ জন্য আমরা বারবারই আদালতের কাছে আসছি, বলছি, মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে জামিন দেওয়া হোক।”