আবারও জাবি উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করার ঘোষণা
দুর্নীতির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে আবারও তার বাসভবন ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ আয়োজিত সংহতি সমাবেশ শেষে আন্দোলনের মুখপাত্র অধ্যাপক রাইয়ান রাইন এ ঘোষণা দেন।
এদিকে, আন্দোলন দমাতে শিক্ষার্থীদের আজ বেলা সাড়ে ৩টার মধ্যে হল ছাড়ার বিষয়ে কঠোর নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এ সময়ের মধ্যে হল না ছাড়লে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করা হয়েছে। দুপুর ২টার দিকে হল প্রভোস্ট কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বশির আহমেদ এ তথ্য জানান।
তবে, প্রশাসনের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে এখনো হলে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। বেশ কয়েকটি হল ঘুরে শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে। আন্দোলনকারীরা হল না ছাড়ার বিষয়ে অনড় রয়েছেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা পুরাতন রেজিস্ট্রারের সামনে অবস্থান করছিলেন।
সংহতি সমাবেশে শিক্ষকরা বলেন, উপাচার্য তার দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে ভয় পান। তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কোনো দাবির প্রতি কর্ণপাত করেননি। শেষ পর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যখন তাকে অপসারণের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে অবস্থান করছিল তখন ছাত্রলীগকে দিয়ে আন্দোলনকারীদের মারধর করেছেন। এ অবস্থার পর অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম উপাচার্য হিসেবে থাকতে পারেন না। পাশাপাশি তিনি শিক্ষক হিসেবে পাঠদান করার অধিকার হারিয়েছেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর তপন কুমার সাহা বলেন, “চার বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করেছি, কিন্তু কখনো তো বিশেষ ছাত্র সংগঠনকে নামানোর প্রয়োজন হয়নি। এখন কেন হলো? গতকালের ঘটনায় আমি ব্যথিত হয়েছি।”
তিনি বলেন, “শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা লাঞ্ছিত হওয়ার পর উপাচার্য এটিকে গণঅভ্যুত্থান বলেছেন। এটি আসলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং শিক্ষক হিসেবে আমাদের দুর্ভাগ্য। জাহাঙ্গীরনগরকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমার-আপনার সবার। এর আগে এ আন্দোলনের সাথে আসিনি, কারণ নিজেকে বোঝাতে পারিনি, কিন্তু এখন পেরেছি। অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে শুধু তদন্ত না বরং তাকে বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে।”
শিক্ষার্থী তাপসী প্রাপ্তি দে বলেন, “গতকাল শিক্ষার্থীরা যাতে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে জন্য হল তালা মেরে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। আমরা এ আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই। অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।”
আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজীম উদ্দিন খান, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভুঁইয়া, অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক খবির উদ্দিন, অধ্যাপক কবিরুল বাশার, অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি প্রমুখ।