ইয়াসের প্রভাবে সাতক্ষীরায় ভেসে গেছে ৩৪ কোটি টাকার মাছ, প্লাবিত অর্ধশত গ্রাম
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাতক্ষীরার উপকূলী শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার দশটি ইউনিয়নের মাছের ঘেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপকূল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ও নদীর জোয়ারের পানি উপচে পড়ে ভেসে গেছে সাড়ে চার হাজার মাছের ঘের। সর্বশান্ত হয়েছে এসব মাছ চাষীরা। এছাড়া দুই উপজেলায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবের পর ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করেছে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর। জেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, জেলার আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর, গাবুরা, কৈখালী, নুরনগর ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নে ৯৫০ হেক্টর জমির দুই হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে। টাকার হিসেবে ক্ষতি পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ কোটি টাকা। অন্যদিকে, আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা, আশাশুনি সদর, বড়দল ও খাজরা ইউনিয়নের ১৪৫০ হেক্টর জমির দুই হাজার ৫৬০টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবের পর উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। এতে উপকূলীয় বাঁধ উপচে ও বাঁধ ভেঙে ৪৫৬০ টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার। ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাতের জোয়ারে নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, আম্পানের থেকেও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতির পরিমাণ বেশী হয়েছে। বর্তমানে ঘেরের মাছগুলো সব বিক্রি উপযোগী হয়ে গিয়েছিল। যার কারণে চাষীদের ক্ষতি বেশী হয়েছে। আশাশুনিতে ক্ষতির পরিমাণ কমার কারণ হচ্ছে, সেখানে অনেক ঘের শুকনা ছিল। পানি সংকটের কারণে চাষীরা আগেই মাছ ধরে নেয়।
বাঁধ ভেঙে মাছের ঘের ভেসে যাওয়া ছাড়া জেলার কোথাও বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতির কোন খবর পাওয়া যায়নি। উপকূলীয় এলাকার অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম আবুজর গিফারী বলেন, উপকূলীয় বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে ভাটার সময় পানি সরে গেছে। বর্তমানে ১৫-২০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে।
আশাশুনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী জানান, উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কোথাও ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, সব মিলিয়ে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হলো সেটি এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাগণকে তালিকা প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে।