ইয়াসের প্রভাব: শুকনো তিস্তা পানিতে টইটম্বুর
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে লালমনিরহাটের শুকনো তিস্তা নদী ঢলের পানিতে টইটম্বুর হয়ে উঠেছে। এতে তিস্তার চরে ভুট্টা, বাদাম, সবজি খেতে পানি ওঠায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
তবে পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হবে না বলে জেলা কৃষি কর্মকর্তা (ডিডি) আশরাফ আলী আশ্বস্ত করেছেন।
গত শুক্রবার (২৮ মে) বাড়তে থাকা পানিপ্রবাহ শনিবারও (২৯ মে) ছিল বিপদসীমা ৫২.৬০ সেন্টিমিটারের কাছাকাছি, মাত্র ১০ সেন্টিমিটার নিচে। তবে সেই পানিপ্রবাহ আজ (রোববার) কমে বিপদসীমার ৫২ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রভাহিত হচ্ছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্ণা ইউনিয়নের বাসিন্দা উল্লাস খন্দকার বলেন, 'তিস্তার পানি কিছুটা বেড়েছিল। এখন সেই পানি নেই। তাই আমাদের ক্ষেতের তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।'
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন বলেন, 'রোববার সকালে তিস্তা ব্যারাজের উজানে বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটারের ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, তথা ৫২ দশমিক ২০ সেন্টিমিটারে পানিপ্রবাহ পরিমাপ করা হয়েছে।' তবে তার দাবি, তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ দ্রুত নেমে যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, গত বৃহস্পতিবারও তিস্তায় বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে পানিপ্রবাহ ছিল। এতে তিস্তা ব্যারাজের ভাটি প্রায় শুকনো ছিল, কয়েকটি গেট বন্ধ ছিল। কিন্তু হঠাৎ ইয়াসের প্রভাবে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে গত শনিবার সবক'টি গেট খুলে দেওয়া হয়।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার ইয়াসের প্রভাব পড়তে শুরু করে হাতীবান্ধায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের উজানে ভারতীয় অংশে। শুক্রবার সেই ইয়াস আছড়ে পড়ে বাংলাদেশ অংশে। এরই অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার সারাদিন তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫২ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটারের মাত্র দুই সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানিপ্রবাহ বিরাজমান ছিল। তবে চলতি বর্ষা মৌসুমে সর্বোচ্চ পানিপ্রবাহ শনিবারই রেকর্ড করা হয়, যা ৫২ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার। কিন্তু সেই পানিপ্রবাহ আজ রোববার কমে গিয়ে সকাল ৯টায় বিপদসীমার ৫২ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া পরিমাপ করা হয়েছে।'
এই পানিপ্রবাহ রোববার বিকালের মধ্যে আরও কমে যাবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক(ডিডি) আশরাফ আলী বলেন, 'তিস্তার পানি কিছুটা বেড়েছিল। কিন্তু এতে ফসলের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এখন পানি নেমে গেছে বলে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।'