কারাগারে ক্যাসিনো সম্রাট
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট এবং সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় সম্রাটের কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান শেষে এ দু’জনকে ছয় মাস করে কারাদন্ড দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ায় সম্রাটকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে এবং কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গ্রেপ্তারের সময় সাথে মদের বোতল পাওয়ায় আরমানকে এ কারাদণ্ড দেওয়া হয় বলে জানান র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের প্রধান সারওয়ার বিন কাশেম।
রোববার রাত সোয়া আটটার দিকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে সম্রাট ও আরমানকে হস্তান্তর করে র্যাব।
কারাগারের সিনিয়র জেলা সুপার ইকবাল কবির জানান, কোন ধরণের ডিভিশন ছাড়াই সম্রাটকে নিয়মিত কয়েদীদের সাথে জেলে রাখা হবে। তবে আদালতের আদেশ পেলে তাকে ডিভিশন দেওয়া হবে।
এর আগে ঢাকার ক্যাসিনো ব্যবসার নিয়ন্ত্রক ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের কাকরাইল অফিসে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিদেশী মদ, ইয়াবা, বন্যপ্রাণীর চামড়া এবং পিস্তল উদ্ধারের তথ্য জানায় র্যাব।
রোববার দুপুরে র্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার সারওয়ার বিন কাশেমের নেতৃত্বে একটি দল সম্রাটকে সাথে নিয়েই কাকরাইলের ভূঁইয়া ম্যানশনে অবস্থিত তার কার্যালয় ঘিরে অভিযান শুরু করে।
বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি দেয় র্যাব।
সম্রাটের কার্যালয়ের কয়েকটি কক্ষ ঘুরে বিদেশী মদ, ইয়াবা, ইলেকট্রিক শক দেওয়ার মেশিন, একটি পিস্তল ও একটি বন্যপ্রাণীর চামড়া দেখতে পান সাংবাদিকরা।
অভিযান শেষে র্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার সারওয়ার বিন কাশেম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সম্রাটের কার্যালয় থেকে আমরা ১৮ বোতল বিদেশী মদ, ১ হাজার ১৬০ পিস ইয়াবা, দুইটি ইলেকট্রিক শক দেওয়ার মেশিন, দুইটি অস্ট্রেলিয়ান ক্যাঙারুর চামড়া এবং ৫ রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল জব্দ করেছি।”
এর আগে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে অভিযান শুরুর আধা ঘণ্টা পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে র্যাব সদস্যরা মূল ফটকের তালা ভেঙে সম্রাটের কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করেন। ভবনের তৃতীয় তলায় সম্রাটের কার্যালয়ে তল্লাশি চালান তারা।
অভিযানের সময় সম্রাটকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিহিত দেখা যায়।
রোববার বিকেলে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ডিজি বেনজির আহমেদ র্যাবের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, রাজধানীতে অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো ব্যবসা চালানোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগে সাবেক যুবলীগ নেতা সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বেনজির আহমেদ বলেন, “ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে তার জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশব্যাপী ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর দুদিন পর তিনি গা-ঢাকা দেন। তাকে গ্রেপ্তার করতে সময় লেগেছে, কারণ তিনি একেক সময় একেকটা কৌশল নিতেন।”
প্রসঙ্গত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ছিলেন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট আর এনামুল হক আরমান ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে ভোরে গ্রেপ্তারের পর রোববার দুপুরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনটি থেকে দুজনকে বহিষ্কার করা হয়।