খুলনা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬৬ চীনা নাগরিক করোনায় আক্রান্ত
খুলনা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরে নির্মিতব্য ৩৩০ মেগাওয়াট কেন্দ্রে কর্মরত ৮৫ চীনা নাগরিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরমধ্যে পরীক্ষা নিরীক্ষায় ১৯ জন 'নেগেটিভ' হয়েছেন। তবে অবশিষ্ট ৬৬ জন এখনো করোনা 'পজিটিভ' রয়েছেন।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজের করোনা ল্যাব সূত্র জানায়, গত ১৬ মে নির্মিতব্য ৩৩০ মেগাওয়াট কেন্দ্রে কর্মরত ৯৭ জনের করোনা টেস্ট করার জন্য নমুনা দেওয়া হয়। ১৮ মে তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা যায় ৯৭ জনের মধ্যে ৪২ জনই করোনা 'পজিটিভ'।
খুলনা বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানায়, গত ২২ এপ্রিল প্রথম ১০ জন চীনা নাগরিকের করোনা টেস্ট করা হয়। এর মধ্যে ৮ জনের পজিটিভ আসে। কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ৩ জনকে উন্নত চিকিৎসা জন্য ঢাকা পাঠিয়ে দেন। আক্রান্ত অন্য ৫ জনকে খুলনা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরীর খালিশপুরে খুলনা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরে ৩৩০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টে ১৮৫ জন চীনা নাগরিক কাজ করছেন। ২০১৮ সালে ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্লান্টটির কাজ শুরু হয়। এই প্রজেক্টে বাঙালি শ্রমিকের সংখ্যা ৫০০-৬০০ জন। এছাড়াও প্রতিদিন প্রায় ২০০ শ্রমিক এই প্রজেক্টে অস্থায়ীভাবে কাজ করার জন্য প্রবেশ করেন। কাজ শেষে তারা রাতে বাড়িতে ফিরে যান।
গত এক মাসে মোট ৮৫ জন চীনা নাগরিক করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এর মধ্যে গত ১৮ মে ৪২ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। ওই দিন ৯৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। ফলে এই প্রজেক্টে কর্মরত সবার মধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি প্রবল হয়ে উঠছে। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, করোনা আক্রান্ত চীনা নাগরিকরা কোয়ারেন্টিন মানছেন না। তারা বাইরে ঘোরাফেরা ও কেনাকাটা করছেন। অনেকেই নিয়মিত কাজে অংশ নিচ্ছেন।
পাওয়ার প্লান্টের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর জাহিদ হোসেন অবশ্য বলেন, গত এক মাসে (১৮ এপ্রিল থেকে ১৮ মে) প্রজেক্টে কর্মরত ৮৫ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ১৯ জনের ইতোমধ্যে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। এখনও ৬৬ জন আক্রান্ত রোগী আছেন। আক্রান্তরা নিজস্ব হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তারা বিদেশি নাগরিক, এমনিতেই স্থানীয়দের সঙ্গে তেমন মেলামেশা করেন না।
তিনি আরও বলেন, আক্রান্ত কেউ কাজে অংশ নেননি। তারা ইতোমধ্যে সকলেই করোনা টিকা নিয়েছেন।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা, নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, 'বিদ্যুৎ প্রজেক্টে কর্মরত করোনা আক্রান্ত চীনারা হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। তারা শারীরিকভাবে ভালো আছেন।'